জমি দখল ঘিরে ধুন্ধুমার, ক্যানসার রোগীকে ‘বেধড়ক মার’ মালদহে
গুরুতর অসুস্থ ওই ব্যক্তিকে প্রথমে হরিশচন্দ্রপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়।
মালদহ: জমি দখল নিয়ে গোলমাল। তার জেরে এক ক্যানসার রোগীকে মারধর, ক্যাথিটার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক যুবনেতা ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। মালদহের (Maldah) হরিশচন্দ্রপুর বারদুয়ারির ঘটনা। গুরুতর অসুস্থ ওই ব্যক্তিকে প্রথমে হরিশচন্দ্রপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অবশ্য দাবি করেছেন, এই ঘটনায় তাঁদের দলের কেউ জড়িত নন।
হরিশচন্দ্রপুরে ‘জমি মাফিয়া’দের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে বলে অভিযোগ এলাকার লোকজনের। কিছুদিন আগে জমি দখল করতে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের স্থানীয় এক যুব নেতা ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। তার দিন কয়েক আগে অপর একজনের জমি দখল করতে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। এরপর রবিবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে বারদুয়ারি পেট্রোলপাম্পের সামনে।
সূত্রের খবর, রাজীব ভগত নামে এক ব্যক্তি বারদুয়ারি পেট্রোলপাম্পের সামনে নিজের কিছুটা জমি টিন দিয়ে ঘিরে রাখেন। এদিকে সেই জমি আবার নিজের বলে দাবি করেন স্থানীয় এক মহিলা। এই নিয়ে গোলমাল চলছিলই। এরইমধ্যে রবিবার সেই জমি দখল করতে দলবল নিয়ে হাজির হন কয়েকজন। অভিযোগ, তাঁরা এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলেই পরিচিত। টিন ভেঙে জমি দখল নিতে গেলে রাজীবের বাবা জগদীশ ভগত বাধা দেন। অভিযোগ, এরপরই জগদীশবাবুর উপর চড়াও হন ওই যুবকরা। মারধর করতে শুরু করেন। ঘটনা ঘিরে এলাকায় তুমুল উত্তেজনা ছড়ায়।
আরও পড়ুন: ‘দেশের সেবা’ করবেন সৌরভ, জল্পনা উস্কে মন্তব্য অনুরাগ ঠাকুরের
রাজীব ভগত বলেন, “আমরা নিজেদের জমি ঘিরেছিলাম। জমির সমস্ত নথিপত্র রয়েছে। কিন্তু তারপরেও তৃণমূলের জমি মাফিয়ারা চড়াও হয়ে ভাঙচুর করে। বাধা দিলে বাবাকেও ওরা ছাড়েনি। পুলিসের পাশাপাশি আমরা বিচার চেয়ে জেলা তৃণমূল সভানেত্রী এমনকি মুখ্যমন্ত্রীকেও জানাব।” এদিকে অপর যে মহিলা নিজেকে ওই টিনে ঘেরা জমির মালিক বলে দাবি করেছেন, তিনি বলেন, “ওখানে আমার জমিও আছে। ওরা তা ঘিরে নিয়েছিল। পুলিসকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। থানায় বসার কথা ছিল। কিন্তু ওরা আসেনি। তারপরেই আমি কয়েকজনকে নিয়ে নিজের জমিতে থাকা টিনের ঘেরাও সরিয়ে দিই।”
বিজেপির হরিশচন্দ্রপুর মণ্ডল-১ সভাপতি রূপেশ আগরওয়ালা বলেন, “চাল চুরি থেকে অবৈধভাবে জমি হাতানো সবেতেই সিদ্ধহস্ত তৃণমূল। আগেও এখানে তৃণমূলের জমি মাফিয়াদের হাতে ব্যবসায়ীরা আক্রান্ত হয়েছেন। দলের প্রশ্রয়ে ওদের এমন বাড়বাড়ন্ত।” এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের হরিশচন্দ্রপুর-১ ব্লক সভাপতি মানিক দাস বলেন, “দল অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। এই ঘটনায় আমাদের দলের কেউ জড়িত নয়। কেউ দলের নাম ভাঙিয়ে অন্যায় করলে আইন আইনের পথেই চলবে।” হরিশচন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ জানিয়েছে আক্রান্তের পরিবার।