Malda News: সিভিক ভলান্টিয়ারদের সামনে তৃণমূলকর্মীর বাড়িতে হামলা, গ্রেফতার ৩
Malda: হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের পীরগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা সুরফ রজকের বাড়িতেই হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ওই এলাকারই কংগ্রেস-সিপিএম জোটের কর্মীদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় ৬ জন আহত হয়েছেন। ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মালদহ: সিভিক ভলান্টিয়ারদের সামনেই ভরদুপুরে লাঠি, লোহার রড নিয়ে তৃণমূল (TMC) কর্মীর বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর, লুটপাট এবং মারধর করার অভিযোগ উঠল। কংগ্রেস সিপিএম জোটের কর্মীদের বিরুদ্ধেই এই অভিযোগ উঠেছে। রবিবার দুপুরে মালদার (Malda) হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের পীরগঞ্জ গ্রামের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বাড়িতে ঢুকে হামলার জেরে মহিলা, বৃদ্ধ-সহ ঘটনায় ৬ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ারের মোটরবাইকও। ঘটনার পরই অবশ্য ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
পুলিশ জানায়, হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের পীরগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা সুরফ রজকের বাড়িতেই হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ওই এলাকারই কংগ্রেস-সিপিএম জোটের কর্মীদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় ৬ জন আহত হয়েছেন। সুরফ ও তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে এবং তদন্ত শুরু করেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় শিক্ষক সুরফ রজক সক্রিয়ভাবে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। ১৫ দিন আগে ওই এলাকারই কংগ্রেস-সিপিএম জোটের কর্মী কুরবান রজকের সঙ্গে তাঁর গন্ডগোল হয়। অভিযোগ, ওই গন্ডগোলের রেশ ধরেই এদিন দুপুরে সিপিএম-কংগ্রেস জোটের কর্মীরা লাঠি, লোহার রড নিয়ে সুরফ রজকের বাড়িতে চড়াও হয় এবং বাড়ির ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। পরিবারের সদস্যদের ব্যাপক মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। এমনকি মহিলা সদস্যদের কাদায় ফেলে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তারপর দীর্ঘক্ষণ ধরে বাড়ি লক্ষ্য করে চলতে থাকে ইটবৃষ্টি।
এদিকে, আগের গন্ডগোলের জন্য পুলিশের নির্দেশে সুরফ রজকের বাড়ির সামনে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার দুজন সিভিক ভলান্টিয়ার আগে থেকেই মোতায়েন ছিলেন। এদিনের গন্ডগোলের সময় তাঁরাও কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন বলে অভিযোগ। হামলাকারীরা ওই সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও মোটরবাইক ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ।
এদিনের হামলায় দুই মহিলা এবং একজন বৃদ্ধ সহ সুরফ রজকের পরিবারের মোট ৬ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুজন হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকি চারজনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাঁদের মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। গন্ডগোলের খবর পাওয়া মাত্রই হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে জোটের ৩ কর্মীকে।
যদিও ৩ জোট কর্মীকে গ্রেফতারের নিন্দা করেছেন সিপিআইএমের জেলা কমিটির সদস্য শেখ খলিল। তিনি বলেন, যে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে একজন প্রতিবন্ধী এবং ২ জন মহিলা। এঁদের গ্রেফতার করার ঘটনা লজ্জাজনক। সুরফের বাড়িতে জোটকর্মীদের হামলা চালানোর অভিযোগও অস্বীকার করেছেন তিনি। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, দিন কয়েক আগে সুরফ ৫-৬ জনকে মারধর করে হাসপাতালে ভর্তি করেছিল। এই ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। সেই গন্ডগোলের প্রেক্ষিতেই এদিনের পাল্টা হামলা হয়। তিনি আরও বলেন, সুরজের সঙ্গে তাঁর ভাইদের মধ্যেই গন্ডগোল রয়েছে। ওরা অশান্তি করে আর অভিযোগ দেয় জোটের উপর। সুরজ ওখানকার বাহুবলী। তাঁর বাড়িতে হামলা চালানোর সাহস কেউ রাখে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, সুরফের বাড়িতে হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদ সদস্য বুলবুল খান। তাঁর অভিযোগ, এর আগেও সুরফের বাড়িতে এরকম হামলা হয়েছে। আমরা কোনও অশান্তি করতে চাই না। কিন্তু, আজ সিভিক ভলান্টিয়ারদের সামনে হামলা চালানো হয়েছে। পুলিশ এই ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ করলেও নরমপন্থী মনোভাব দেখাচ্ছে। পুলিশ আরও সক্রিয় না হলে এরকম ঘটনা আরও ঘটবে বলেও জানান তিনি।