TMC: আচমকা বিকট শব্দে কেঁপে উঠল তৃণমূল নেতার পরিত্যক্ত বাড়ি! ফের ‘কুরুক্ষেত্র’ কালিয়াচক

Kaliachak: কালিয়াচক থানার পুলিশ জানিয়েছে, বাড়িটিতে অবৈধভাবে বোমা মজুত করা হচ্ছিল। কোনওকারণে দুই-তিনটি বোমা একসঙ্গে ফেটে যায়। এখনও বাড়ির টালির চালে তিনটি তাজা বোমা রয়েছে।

TMC: আচমকা বিকট শব্দে কেঁপে উঠল তৃণমূল নেতার পরিত্যক্ত বাড়ি! ফের 'কুরুক্ষেত্র' কালিয়াচক
কালিয়াচকে বোমাবাজি, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 24, 2021 | 1:32 PM

মালদা: ফের তৃণমূলের (TMC) গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে উত্তপ্ত কালিয়াচক। রবিবারের সকালে, আচমকাই বিকট শব্দে কেঁপে উঠল তৃণমূল নেতার পরিত্যক্ত বাড়ি। বোমবাজির জেরে ছুটে আসেন এলাকাবাসী। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। কালিয়াচক ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পাটুয়াতলী চাঁদপুর গ্রামের পরিচিত তৃণমূল নেতা রফিকুল শেখের বাড়িতে ভোররাত্রে বোমাবাজির (Bomb Blast) আওয়াজ পাওয়া যায়।

কালিয়াচক থানার পুলিশ জানিয়েছে, বাড়িটিতে অবৈধভাবে বোমা মজুত করা হচ্ছিল। কোনওকারণে দুই-তিনটি বোমা একসঙ্গে ফেটে যায়। এখনও বাড়ির টালির চালে তিনটি তাজা বোমা রয়েছে। বোমের তীব্রতায় আশেপাশের কয়েকটি ঘরের চালা উড়ে গিয়েছে। এলাকার মানুষকে সরানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই, পলাতক অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা রফিকুল শেখ ও তাঁর অনুগামীরা। গোটা এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। খবর দেওয়া হয়েছে বোম স্কোয়াডকেও।

সূত্রের খবর, ওই বাড়িটি তৃণমূল নেতা রফিকুলেরই। তবে বাড়িটিতে কেউ থাকতেন না। ওই বাড়িতেই গোপনে দীর্ঘদিন ধরে চলত বোমা বাঁধার কাজ। কাছেই একটি বাড়ি বানিয়ে সেখানেই থাকতেন রফিকুল। তবে বোমাবাজির পর থেকেই আর দেখা মেলেনি রফিকুলের। সূত্রের খবর, ওই পঞ্চায়েতে রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন অনুগামী একটি গোষ্ঠী রয়েছে। সেই গোষ্ঠীর বিরোধী নেতা হলেন রফিকুলরা। মূলত, সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই নাশকতার ছক কষা হচ্ছিল। যেখান থেকে এই বোমা মজুতের কাজ চলছিল।

প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই  কালিয়াচকের বাবুরহাট গ্রামের এক পরিত্যক্ত জমিতে বোমা মজুত করে রাখা হয়েছিল। কয়েকজন বাচ্চা সেখানে খেলতে গিয়ে বোমা বিস্ফোরণের জেরে আহত হয়। স্থানীয়রা দাবি করেন তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা ঘটে। কিছুদিন  আগেই, তৃণমূলের (TMC) পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচন ঘিরে প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে অবরুদ্ধ হয় জাতীয় সড়ক। আর সেই অবরোধ তুলতে গিয়ে পুলিশের দিকে ধেয়ে আসে গুলি! পাল্টা গুলি চালাতে বাধ্য হয় পুলিশ। গোলাগুলির ঘটনায়  পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন কালিয়াচকের ১ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান আলিউল শেখ। বাজির আগুন ছিটে লাগায় পুলিশ গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন আলিউল। তাঁর আরও অভিযোগ,  বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। মূলত পঞ্চায়েতের প্রাক্তন ও নবনির্বাচিত প্রধানের মধ্যেই বিরোধের জেরে চলে ওই গুলিবর্ষণ।

ওইদিন ছিল, কালিয়াচক ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচন। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত এই পঞ্চায়েত এদিন নবনির্বাচিত প্রধান হন তৃণমূলের আলিউল শেখ ওরফে জ্যোতি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন এই গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৫ জন সদস্যের মধ্যে ৯ জন সদস্য প্রধান পদে আলিউল শেখকে সমর্থন করেন। ফলে নতুন প্রধান নির্বাচিত হন তিনি। আগে থেকেই প্রহরায় ছিল পুলিশ। একবার দুই পক্ষের হাতাহাতি ছাড়িয়েছে তারা। কিন্তু তার পর তৈরি হল তুলকালাম পরিস্থিতি।

নতুন প্রধান নির্বাচনের পর বিজয় মিছিলে বেরোয় তৃণমূলের এক পক্ষ। অন্যদিকে আরেক পক্ষ তাদের আক্রমণ করে বলে খবর। শুরু হয় মারামারি, বিশৃঙ্খলা। এর পর উত্তেজনা প্রশমন করতে ছুটে যায় পুলিশ। কিন্তু প্রথমে সিভিক ভলান্টিয়ারদের মারধর করা হয় বলে খবর। এমনকি তার পর পুলিশ অফিসাররা গেলে তাঁদেরও গায়ে হাত তোলা হয়। তার পর মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ধেয়ে আসে গুলি। এর পর রণক্ষেত্রে পরিণত হয় জাতীয় সড়ক। পুলিশ পাল্টা গুলি চালায়। দুই পক্ষের গোলাগুলিতে আহত হন পুলিশ অফিসার, সিভিক ভলান্টিয়ার থেকে তৃণমূলের নেতারা।

আরও পড়ুন: Bhawanipur Bypoll Results 2021: ‘মুখ্যসচিবের আবেদনে ভুল ছিল না’, মমতার জয় ‘বিধান মেনেই’, দাবি বিমানের