জোর করে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে বৃদ্ধার অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হল কেন্দ্রীয় যোজনার টাকা, অভিযুক্ত তৃণমূল

প্রতি কিস্তিতেই টাকা দিতে হবে, বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে এমনটাই দাবি করেন তৃণমূল নেতারা।

জোর করে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে বৃদ্ধার অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হল কেন্দ্রীয় যোজনার টাকা, অভিযুক্ত তৃণমূল
অভিযোগকারিণী বৃদ্ধা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 17, 2021 | 9:54 AM

মালদা: মারধর করে, জোর করে ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে তুলে নেওয়া হল এক আদিবাসী বৃদ্ধার আবাস যোজনার টাকা। এমনই অভিযোগ উঠল মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে। তিন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে থানায়অভিযোগ দায়ের করেছে বৃদ্ধার পরিবার। মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ওই বৃদ্ধা। তিন নেতার বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। অন্যদিকে, বিজেপির দাবি, রাজ্যে যে কাটমানির সরকার চলছে, সেটাই আরও একবার প্রমাণিত হয়ে গেল।

মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের বাইশা গ্রামের ঘটনা। এই গ্রামের বাসিন্দা সাবিত্রী ওঁরাও সম্প্রতি পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা। ৬০ হাজার টাকা ঢুকেছিল তাঁর আ্যাকাউন্টে।আধার লিঙ্ক যুক্ত করা অ্যাকাউন্টেই ঢোকে সেই টাকা। অভিযোগ, টাকা ঢুকতেই তাঁর কাছে হাজির হন এলাকার তিন তৃণমূল নেতা। অভিযুক্তরা হলেন রফিক আলম, নারায়ণ কর্মকার এবং মনু ভাস্কর। বৃদ্ধার অভিযোগ, তাঁরা হুমকির সুরে জানায় যে তাঁদের বদান্যতায় এই টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। তাই প্রতি কিস্তিতে তাঁদের ভাগ দিতে হবে। বিষয়টি নিয়ে বৃদ্ধা প্রতিবাদ করলে তাঁরা হুমকি দিয়ে চলে যায়।

দু’দিন পরে ফের তাঁকে ঘরে একলা পেয়ে চড়াও হয় ওই তিন নেতা। একরকম জোর করেই রফিক আলমের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় ওই বৃদ্ধাকে। বৃদ্ধা জানান, সেখানে তাঁকে গলা চেপে ধরে তিন জনে মিলে মারধর করে তাঁর ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে নেয়। এরপর সেই অ্যাকাউন্ট থেকে ১২ হাজার টাকা তুলে নেয় ওই তিন নেতা। আহত অবস্থায় কোনোক্রমে বাড়ি ফিরলে তাঁর ছেলে তাঁর চিকিৎসা করান। তবে এখনও অসুস্থ বৃদ্ধা। পাশাপাশি ভুগছেন আতঙ্কে।

এরপরে তিনি হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় ওই তিন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। এই ঘটনায় বিজেপি তীব্র সমালোচনা করেছে তৃণমূলের। বিজেপির মালদার জেলার সম্পাদক কিষাণ কেদিয়া বলেন, ‘আমরা বারবারই বলেছি রাজ্যে কাটমানির সরকার চলছে। এই ঘটনা সেটাই আরও একবার প্রমাণ করে দিল। একজন বৃদ্ধাকে মহিলাকেও ওরা ছাড়ে না। মানুষ বুঝে গিয়েছে যে তৃণমূলকে ক্ষমতায় এনে কত বড় ভুল করেছেন তাঁরা। তৃণমূল আর ফিরবে না।’

যদিও জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ।এই তিন যুব নেতার বিরুদ্ধে দলগতভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ যাতে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয় সেই দিকেও নজর দেওয়ার কথা বলেছে তৃণমূল। তৃণমূল নেতা বুলবুল খান বলেন, ‘এই অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা অভিযোগকারীর বাড়ি গিয়ে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।’ তবে, তিন অভিযুক্ত যুব নেতার একজন মনু ভাস্কর এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছে। আরও পড়ুন: ‘সত্যের জয় হল’, সজল ঘোষের জামিনের পর বললেন শুভেন্দু