Maldah News: তৃণমূল নেতা শয্যাশায়ী, ফেরাচ্ছে ‘স্বাস্থ্যসাথী’; স্বেচ্ছামৃত্যু চাইছেন হতাশায়
Maldah: স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকার বেশ পরিচিত মুখ ইমরান আলি। তাঁর বিপদের দিনে এভাবে দলের লোকজন মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় মন ভেঙেছে তাঁর।
মালদহ: প্রায়শই অভিযোগ শোনা যায়, শাসকদলের কোনও নেতা হলে সহজেই তাঁর জায়গা হয়ে যায় এসএসকেএমের উডবার্ন ব্লক কিংবা অন্য কোনও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। আবার সেই শাসকদলের নেতাকেই চিকিৎসার সুযোগ না পেয়ে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানাতে হয়, এমন অভিযোগও উঠছে এই বাংলায়। মালদহের রতুয়া-২ ব্লকের আড়াইডাঙা গ্রামপঞ্চায়েতের শিবপুর গ্রাম। সেখানেই থাকেন ইমরান আলি। ইমরান তৃণমূলের বুথ সভাপতিও থেকেছেন। কিন্তু পুরোপুরি বিছানায় পড়ে যাওয়ার পর দলের কোনও বিধায়ক, সাংসদ তাঁর দিকে ঘুরে তাকান না বলে অভিযোগ। শয্যাশায়ী ইমরানের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলেও তাতে সুবিধা মেলে না বলে অভিযোগ তাঁর। দুয়ারে এসে পৌঁছয় না সরকারের রেশন। যন্ত্রণায় জর্জরিত ইমরান এখন চান তাঁকে এই জরাব্যাধি থেকে মুক্তি দেওয়া হোক। স্বেচ্ছামৃত্যুর আর্জি জানান তিনি।
পুখুরিয়া থানা এলাকার বাসিন্দা ইমরান আলি। সম্প্রতি করোনার করাল গ্রাসে মা, বাবাকে হারিয়েছেন। ছোট থেকে তাঁর পায়ে একটা সমস্যা ছিল। তবে ঠিকমতো চিকিৎসা করাতে না পারায় তা ক্রমেই খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে। এখন একেবারেই হাঁটতে পারছেন না। বিছানায় শুয়ে দিন কাটছে। মুখের সামনে ভাতের থালা তুলে দেওয়ার কেউ নেই। শরীরেও বাসা বাঁধছে নানা রোগ। পুষ্টির অভাবে ধুঁকছেন তিনি।
ইমরান আলি বলেন, “আমার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড রয়েছে। হাসপাতাল, নার্সিংহোম সকলেই ফিরিয়ে দিচ্ছে। বলছে এতে চিকিৎসা হবে না। আমার রেশন কার্ড রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী দুয়ারে রেশনের কথা বলেছেন। অথচ কেউ এসে আমাকে কিছুই দিয়ে যায়নি বাড়িতে। আমি বারবার বিডিওকে জানিয়েছি। উনি বলেছেন, পাঠাবেন। কিন্তু কিছুই আসেনি। বিধায়ক থেকে সাংসদ সকলের কাছে জানাচ্ছি, কেউ কোনও কথা শুনছে না।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকার বেশ পরিচিত মুখ ইমরান আলি। তাঁর বিপদের দিনে এভাবে দলের লোকজন মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় মন ভেঙেছে তাঁর। তাই এখন স্বেচ্ছামৃত্যু চান তিনি। ইমরানের কথায়, “আমি একা এখন কিছুই করতে পারি না। ওষুধের টাকা, খাবারের টাকা কিছুই তো হাতে নেই। এভাবে কতদিন চলবে? এভাবে যদি প্রশাসন, দল সাহায্যের হাত না বাড়িয়ে দেন আমার তো স্বেচ্ছামৃত্যু ছাড়া পথ খোলা থাকবে না।”
এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “এমন জীবন অনভিপ্রেত। আমরা তাঁর সুস্থ জীবন কামনা করি। তিনি যাতে সমস্ত নাগরিক সুবিধা পান সে ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন উদ্যোগী হোক চাইব। আসলে এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। যারাই তদ্বির করতে পারে না, তৃণমূলের কাছ থেকে নীতি বহির্ভূত সুবিধা চায় না তাদের এই পরিণতিই হচ্ছে। এখন দখলদারির সমাজ চলছে।”
যদিও জেলার তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, “এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এলাকায় পঞ্চায়েত আছে, পঞ্চায়েত সমিতি আছে, বিধায়ক আছে, জেলা পরিষদ সদস্য আছে কেন তারা জানে না সেটা আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। এমনটা কখনওই হওয়ার কথা নয়। মানবিকভাবে এটা দেখা উচিৎ।”
আরও পড়ুন: TMC Party Office: তৃণমূলের পার্টি অফিসে ‘মেয়ে নিয়ে আড্ডা, মদ-জুয়ার আসর’, বিস্ফোরক দলেরই কাউন্সিলর
আরও পড়ুন: Kankinara Blast: লেডিজ ব্যাগে বোমা, রেললাইনে ছুঁড়তেই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ