Malda Panchayat: রাজ্যের মধ্যে সবথেকে বেশি, মালদহে পঞ্চায়েতের তিন ভাগের এক ভাগ বোর্ডে ত্রিশঙ্কু নিয়ে কী বলছে শাসক-বিরোধী

Malda Panchayat: শুধু গ্রাম পঞ্চায়েত নয়। মালদার ১৫টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্য়ে ৪টিতে দেখা গিয়েছে ত্রিশঙ্কু।

Malda Panchayat: রাজ্যের মধ্যে সবথেকে বেশি, মালদহে পঞ্চায়েতের তিন ভাগের এক ভাগ বোর্ডে ত্রিশঙ্কু নিয়ে কী বলছে শাসক-বিরোধী
কী বলছে শাসক-বিরোধী? Image Credit source: TV-9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 15, 2023 | 11:07 PM

মালদহ: গোটা রাজ্যের মধ্যে সবথেকে বেশি। একটা বা দুটো নয়, মালদহে ১৪৬ গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৬৪টিতেই দেখা গিয়েছে ত্রিশঙ্কু। অর্থাৎ বোর্ড গঠনের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনও দলই। অন্যদিকে জেলায় ৫৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির খাতায় ১৬। কংগ্রেস ৭ পেলেও বামেরা খাতা খুলতে পারেনি। যদিও সিপিএমের মালদা জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রের দাবি, দিকে দিকে বাম-কংগ্রেসের কর্মীরা প্রতিরোধী গড়ে তুলেছিলেন ভোটের সময়। কিন্তু, গোটা জেলাজুড়েই প্রচুর ভোট লুঠ করেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। কিন্তু, বাম-কংগ্রেস এখানে ভাল লড়াই দেওয়ার কারণেই বহু আসনে সুবিধা করতে পারেনি ঘাসফুল শিবির। যার ফলেই দেখা যাচ্ছে এই ত্রিশঙ্কুর অঙ্ক। শুধু গ্রাম পঞ্চায়েত নয়। মালদার ১৫টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্য়ে ৪টিতে দেখা গিয়েছে ত্রিশঙ্কু। 

কী বলছে বিজেপি? 

ভোট লুঠের ব্যাপারে খানিকটা একমত হলেও ত্রিশঙ্কুর লাভের গুড় পুরোটাই বাম-কংগ্রেসকে দিতে নারাজ মালদা জেলার বিজেপির সহ-সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায়। তৃণমূলের বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা ভাষায় তোপ দেগে তিনি বলেন, “মানুষ বিরোধীদেরই ভোট দিয়েছে। আর শাসকদল মানুষের কাছ থেকে কিছু ভোট কেড়ে নিয়েছে। তাই কেড়ে নেওয়া আর স্বতঃস্ফূর্তভাবে পাওয়া ভোটগুলোর সম্মিলিত ফলই হয়েছে এই ত্রিশঙ্কু। আসলে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিরোধীদের ভোট দিয়েছে। এই ভোট দেখে শাসকদল দাঁড়িয়ে থেকে ভোট লুঠ করেছে। মালদায় তো এই ছবি প্রচুর দেখা গিয়েছে। ফলে মালদার বহু গ্রাম পঞ্চায়েত আর পঞ্চায়েত সমিতিতে ত্রিশঙ্কু হয়ে গিয়েছে। নাহলে আরও অনেক আসনই বিরোধীদের হাতে থাকত। আর এখন তো আরও বিরোধী শিবির থেকে লোকজনকে তৃণমূলে যোগদান করতে ওরা বাধ্য করছে। ভয় দেখাচ্ছে। পুলিশকে মাঠে নামাচ্ছে ভয় দেখাতে।”

কী বলছে বামেরা? 

অন্যদিকে ত্রিশঙ্কুর হাওয়ার জন্য আবার দলের ‘অবাধ্য’ কর্মীদের কাঠগড়ায় তুলেছে তৃণমূল। নির্দল কাঁটায় বিদ্ধ হয়েও একইসঙ্গে তোপ দেগেছে বাম-কংগ্রেস-বিজেপির দিকে। যদিও সিপিএমের মালদা জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁদের সম্মিলিত লড়াইয়ের পক্ষে সওয়াল করে বলছেন, “প্রচুর ভোট এখানে লুঠ হয়ে গিয়েছে। লুঠ না হলে আমাদের ফলাফল আরও অনেক ভাল হতে পারত। এটা না হয়ে স্বচ্ছ নির্বাচন হলে এগুলো ত্রিশঙ্কু থাকত না। বিরোধীদের হাতেই এই বোর্ডগুলি যেত। তৃণমূল সবরকমভাবে বোর্ড দখলের চেষ্টা করেছে। কিন্তু, মানুষ আপ্রাণ চেষ্টা করেছে ওদের আটকাবার। এদিকে ভোট গণনার সময় তো আবার যেখানে যেখানে বিরোধীরা ২-৪ ভোটে জিতেছিল সেখানে রিকাউন্টিং করে তৃণমূলের প্রার্থীদের জিতিয়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য অনেক জায়গায় আবার যেখানে তৃণমূল ২০-২৫ ভোটে এগিয়ে জিতে গিয়েছে। সেখানে আর রিকাউন্টিং করা হয়নি। ফলে ডামাডোলে ত্রিশঙ্কু হয়েছে বহু জায়গায়।”

কী বলছে তৃণমূল? 

বিরোধীদের কথায় কান দিতে নারাজ মালদা জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র আশিস কুন্ডু। তিনি বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ছিল মানুষের পঞ্চায়েত গড়ে তোলা। এই মানুষের পঞ্চায়েত গড়ে তুলতে গিয়ে সাধারণ মানুষ যাদের পছন্দ করেছে তাঁদেরই দল মনোনীত করেছে। সেটা করতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের অনেক কর্মীকে প্রার্থী করা সম্ভব হয়নি। মানুষের রায় তাঁদের পক্ষে ছিল না। এই ধরনের কিছু লোকজন ও কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপির যৌথ জোটের বিরুদ্ধে আমাদের প্রার্থীরা লড়াইয়ে নেমেছিল। কিন্তু, সাধারণ মানুষ গোটা বাংলার সঙ্গেই আমাদেরই বেছে নিয়েছেন।” তাঁর সাফ দাবি, বোর্ড গঠনের সময় এলে সবটাই তৃণমূলের হবে। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, “মালদায় যে কটা ত্রিশঙ্কু হয়েছে সেখানে বোর্ড গঠনের জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ করা শুরু করেছেন। কারণ তাঁরা চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যেয়র উন্নয়ন যজ্ঞে সামিল হওয়া। শুধুই এখন সময়ের অপেক্ষা।”