মাটির বাঁধই কাঁপন ধরাচ্ছে সুন্দরবনবাসীর মনে, তবে কি এবারও সব গেল!

গত বছর আমফানে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সুন্দরবনের (Sundarban) নদীবাঁধগুলি।

মাটির বাঁধই কাঁপন ধরাচ্ছে সুন্দরবনবাসীর মনে, তবে কি এবারও সব গেল!
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: May 24, 2021 | 12:47 AM

কলকাতা: আমফানের পর একটা বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু সেই ক্ষতির প্রলেপেই মলম পড়েনি এখনও। সুন্দরবন থেকে তাজপুর —বাঁধের দুর্দশার চিত্রটা সর্বত্রই এক। আমফান এসে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছিল সুন্দরবনের নদীবাঁধগুলি। এখনও অধিকাংশই একই অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কয়েকটা মাটি দিয়ে ঠেকানো। এরই মধ্যে এবার ইয়াসের চোখ রাঙানি। প্রমাদ গোনা ছাড়া মানুষগুলোর আর কিছুই করার নেই।

১৯টি ব্লক নিয়ে সুন্দরবন। এর মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৩টি ব্লক। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে বাকি ৬টি। গত বছর আমফানে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুন্দরবনের নদীবাঁধগুলি। প্লাবন, দুকূল ছাপানো জলের তোড় ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে বাঁধগুলিকে। সঙ্গে ভেসেছে বিঘার পর বিঘা জমি, ঘর বাড়ি। এই নদীবাঁধগুলির ক্ষেত্রে সব থেকে বড় সমস্যা হল, মাটির বাঁধ।

গোসাবা, কুলতলি, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপ, সাগর কিংবা হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি, মিনাখাঁ। সর্বত্রই নদীবাঁধগুলির অত্যন্ত খারাপ অবস্থা। একটা কোথাও পাকা বাঁধ নেই। এখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি, একটা মাস্টার প্ল্যান করে এই বিপদ থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হোক। এখানকার মানুষ চান বাঁধগুলি কংক্রিটের হোক। অন্তত বছরকার এই বিপর্যয় তাঁদের সর্বস্ব যাতে এত সহজে ভাসিয়ে না নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু কোথায় কী! আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। তা আশ্বাস হয়েই থেকে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: আমফান তছনছ করেছিল সোনার ফসল, ইয়াস-আতঙ্কে কাঁচা ধানই তুলে ফেলছেন অন্নদাতারা

২০০৯ সালের ২৫ মে আয়লা ঝড়ে সুন্দরবনের সাড়ে ৩০০০ কিলোমিটার নদী বাঁধের মধ্যে প্রায় ৭৭৮ কিমি নদীবাঁধ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। প্রচুর গবাদি পশুর প্রাণহানি ঘটেছিল। উপড়ে পড়েছিল হাজার হাজার গাছ। এরপর সুন্দরবনের উপর দিয়ে ফণি, বুলবুল ও আমফানের তাণ্ডবে বাঁধের আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। কোথাও কোথাও মাটি দিয়ে সাময়িক বাঁধ তৈরি হচ্ছিল। ইয়াস তা ভাঙল বলে।

অন্যদিকে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের তাজপুর, জলদা ও চাঁদপুর মৌজা অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকা বলে সমুদ্র উত্তাল হলেই জলে প্লাবিত হয় এলাকা। ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় সাধারণ মানুষকে। দাবি মেনে এখানে বাঁধ নির্মাণের কাজ হলেও তার গতি খুবই ধীর বলে অভিযোগ গ্রামবাসীর। এখানে পাথর ফেলার কাজ চলছে। তবে কার্যত লকডাউনে ওড়িশা সীমানা থেকে গাড়ি যাতায়াত করতে না পারায় বাঁধ তৈরির কাজেও সমস্যা হচ্ছে। সেচ দফতর বলেছে সোমবারের মধ্যে সব ব্যবস্থা করে দেবে। ওদিকে ইয়াসেরও যে চোখ রাঙানি শুরু!