Adir Chowdhury on Kiranmay Nanda: ‘সকলেই জানে কে, কখন জ্যোতি বসুকে মাছ পাঠাত’
Murshidabad: বঙ্গ রাজনীতির ইতিহাস বলছে, জ্যোতি বসু ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট জমানায় টানা ত্রিশ বছর মন্ত্রী ছিলেন তিনি।
মুর্শিদাবাদ: উত্তর প্রদেশে বিধানসভা ভোট। সেই আবহে মঙ্গলবার কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসছেন সমাজবাদী পার্টি নেতা কিরণময় নন্দ (Kiranmay Nanda)। নিঃসন্দেহে সপা নেতার তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে সাক্ষাৎ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের তরফে জানানো হয়েছে যোগী রাজ্যের ভোটে ঘাসফুল প্রার্থী দেবে না। বরং তাদের পূর্ণ সমর্থন থাকবে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টির প্রতি। এই পরিস্থিতিতে কিরণময় নন্দের আগমনকে কার্যত কটাক্ষ করলেন প্রদেশ কংগ্রস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Choedhury)।
অধীর কথায়, “কিরণময় নন্দ কেন আসছেন! সকলেই জানেন, কে কখন কোথায় জ্যোতি বসুকে মাছ পাঠাত! কিরণময়ের পশ্চিমবঙ্গে ইন্টারেস্ট রয়েছে। সরাসরি অখিলেশ এলেন না কেন? কেন মাঝখানে কিরণময় এলেন সেটা তো ভাবতে হবে!” বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতার আরও সংযোজন, “উত্তর প্রদেশ নিয়ে দিদির কোনও ইন্টারেস্ট নেই। কারণ, দিদির মূল লক্ষ্য কংগ্রেসকে ভেঙে শেষ করা, তাই এই রাজ্যে কামানো টাকা গোয়ায় গিয়ে খরচ করছেন। কিন্তু উত্তর প্রদেশ থেকে দিদি বিধায়ক কিনবেন না।”
বঙ্গ রাজনীতির ইতিহাস বলছে, জ্যোতি বসু ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট জমানায় টানা ত্রিশ বছর মন্ত্রী ছিলেন তিনি। বাংলার মৎস্যমন্ত্রী হিসেবেও বিশেষ সাফল্য অর্জন করেছিলেন তিনি। জানা যায়, কিরণময় মন্ত্রিত্বকালে বছর বছর মাছের উৎপাদনে প্রভূত পুরস্কার পেয়েছে বাংলা। বঙ্গ রাজনীতির একদা পরিচিত নাম এখন উত্তর প্রদেশের ‘নন্দাজি’।
সেই নন্দাজির মন্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা দেশে বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা। ২০১১ সালে বাংলায় বামশক্তির সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে উত্তর প্রদেশে মন দেন কিরণময়। তারপর থেকেই সমাজবাদী পার্টির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদে কাজ করছেন। সেই কিরণময়ের বঙ্গে পদার্পণ ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ যে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বস্তুত, ২০২১ সালে বাংলায় বিধানসভা ভোটের সময় সপা নেত্রী জয়া বচ্চন এসেছিলেন এ রাজ্যে। তৃণমূলের হয়ে কলকাতায় প্রচার করেছিলেন তিনি। কিরণময় নন্দও প্রচার করেছিলেন তৃণমূলের সমর্থনে। নন্দীগ্রামে প্রচার করেছিলেন তিনি। ফলে, এ যেন বেশ খানিকটা ঋণশোধও তৃণমূলের এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
তবে, কিরণময়-মমতার বৈঠককে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, “অখিলেশের হয়তো মনে হচ্ছে অন্যের সমর্থন লাগবে। না হলে অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তর প্রদেশে গিয়ে কী সাহায্য করতে পারবেন? শিবসেনাকে কী সাহায্য করতে পারবেন? গোয়াতে যে অবস্থা হয়েছে, একই হবে। ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে ধর্মতলায় এসে সবাই হাত উঁচু করে দাঁড়িয়ে ছিলেন ব্রিগেডে, বড় সভা হয়েছিল, মাছ ভাত খাওয়া হয়েছিল তার ফল কী হয়েছিল!”