‘সাবধানে বাড়ি ফিরিস…’ বাবার কথা রাখা হল না ঋষভের

মঙ্গলবার বৃষ্টিস্নাত কলকাতা। তার মধ্যেই তিলোত্তমা কলকাতায় ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ঘটনা। রাজভবনের সামনে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে লুটিয়ে পড়লেন বছর ছাব্বিশের এক তরতাজা যুবক। নাম ঋষভ মণ্ডল।

'সাবধানে বাড়ি ফিরিস...' বাবার কথা রাখা হল না ঋষভের
রাজভবনের সামনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ঋষভের
Follow Us:
| Updated on: May 11, 2021 | 10:53 PM

মুর্শিদাবাদ: দুপুরেই ফোনে কথা হয়েছে পরিবারের সঙ্গে। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই ফোন এল ছেলে নেই! এ কথা কিছুতেই মানতে পারছেন না রাজভবনের সামনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হওয়া ঋষভের মা। ভেঙে পড়েছেন বাবা। সারা এলাকায় শোকের ছায়া। কীভাবে ঘটে গেল এসব! মঙ্গলবার যেন মণ্ডল পরিবারের কাছে এক বড় দুঃস্বপ্ন!

মঙ্গলবার বৃষ্টিস্নাত কলকাতা। তার মধ্যেই তিলোত্তমা কলকাতায় ঘটে গেল মর্মান্তিক ঘটনা। রাজভবনের সামনে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে লুটিয়ে পড়লেন বছর ছাব্বিশের এক তরতাজা যুবক। নাম ঋষভ মণ্ডল। কিছুদিন আগে ফরাক্কা থেকে কলকাতায় হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়ামে ইঞ্জিনিয়ারিং পোস্টে চাকরি করতে এসেছিলেন তিনি।

এদিন বিকেলে বাড়ির সঙ্গে কথা হয় ঋষভের। সবাই কী খাওয়া-দাওয়া করেছেন খবর নেন বাড়ির একমাত্র ছেলে। জানান, কলকাতায় খুব বৃষ্টি হচ্ছে। ফোনের এ প্রান্ত থেকে বাবা বলেন, ‘ঠিক আছে সাবধানে বাইক নিয়ে বাড়ি ফের।’ শেষ কথা এটুকুই। তার পর ছেলের মৃত্যু সংবাদ দিল পুলিশ! আর বাড়ি ফেরা হল না ঋষভের।

ফরাক্কা এনটিপিসি নবারুণ এলাকায় বাড়ি ঋষভ মণ্ডলের। বাবার একটি ওষুধের দোকান রয়েছে। একমাত্র ছেলে ঋষভকে নিয়ে বড় স্বপ্ন পরিবারের। মাত্র ২৬ বছর বয়সে হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিং পোস্টে চাকরি করতেন ঋষভ। এলাকায় ভদ্র, মিশুকে ছেলে বলে সুনাম তাঁর। সেই ঋষভের এভাবে চলে যাওয়া কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছেন পরিবার থেকে প্রতিবেশীরা।

এদিকে এদিনের ঘটনায় কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম জানান, “বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ ছিল। বাতিস্তম্ভে আলো জ্বলছিল না। তবে এটা ঠিক ওই লাইনে হুকিং করা ছিল। আমি এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছি। মৃত্যু বিদ্যুৎস্পৃষ্ট নাকি বাজ পড়ে তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর জানা যাবে। আলো বিভাগের ডিজিকে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।” সেই সঙ্গে মৃত ঋষভের পরিবারকে দু লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: রাজভবনের সামনে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু যুবকের, বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ ফিরহাদের 

ঋষভের পরিবার এই ঘটনার বিশদ তদন্তের দাবি করেছে। তাঁদের কথায়, শহর কলকাতার রাস্তায় কীভাবে ইলেকট্রিকের ছেঁড়া তার পড়ে থাকে। আঙুল উঠেছে সরকারি দফতরের দিকেও। এসবের মধ্যে ঋষভের মা শুধু বিড়বিড় করে বলে চলেছেন, কেন একমাত্র ছেলেকে এত দূরে পাঠালাম!