Adhir Ranjan Chowdhury: রাহুল ভিক্ষা নিয়ে ভোটে দাঁড়াননি, তাঁর আসন ঠিক করবে কংগ্রেসই: অধীর
Congress on Wayanad Seat: শোনা যাচ্ছে, সিপিআই চাইছে রাহুল গান্ধী কেরলের ওয়েনাড আসনটি ছেড়ে দিন। সম্প্রতি সিপিআই-এর জাতীয় এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠকে এমনই প্রস্তাব উঠে এসেছে বলে খবর। আর এই নিয়ে তুমুল চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির অন্দরে।
মুর্শিদাবাদ: ইন্ডিয়া জোটের অন্দরে প্রাদেশিক রাজনীতির সমীকরণ শুরু থেকেই মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে দলগুলির। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব, দিল্লি যেমন চর্চায় রয়েছে, তেমনই চর্চায় কেরলও। কারণ, সেখানে কংগ্রেস ও বামেরা হল দুই প্রধান প্রতিপক্ষ। সনিয়া গান্ধী, ডি রাজারা যখন এই সমস্যার সমাধানের উপায় খুঁজছেন, তখন আরও এক নতুন অস্বস্তি। শোনা যাচ্ছে, সিপিআই চাইছে রাহুল গান্ধী কেরলের ওয়েনাড আসনটি ছেড়ে দিন। সম্প্রতি সিপিআই-এর জাতীয় এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠকে এমনই প্রস্তাব উঠে এসেছে বলে খবর। আর এই নিয়ে তুমুল চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির অন্দরে। এবার এই নিয়ে মুখ খুললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীও। কথায় কথায় বুঝিয়ে দিলেন, বিষয়টি নিয়ে এখনই এত জলঘোলার পক্ষপাতী নন তিনি।
রাহুল গান্ধীর ওয়েনাড আসন প্রসঙ্গে সিপিআই-এর প্রস্তাব নিয়ে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন করা হয়েছিল লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীকে। তাঁর সাফ বক্তব্য, ‘রাহুল গান্ধী কারও অনুমতি নিয়ে কোথাও দাঁড়াননি। কারও থেকে ভিক্ষা নিয়েও কোথাও দাঁড়াননি। রাহুল গান্ধীকে কংগ্রেস টিকিটি দিয়েছিল ওয়েনাড থেকে। সেখান থেকে তিনি জিতেছিলেন। উত্তর প্রদেশ থেকে দাঁড়িয়েছিলেন, সেখানে তিনি হেরেছিলেন। কংগ্রেস পার্টি ঠিক করবে তিনি কোথায় দাঁড়াবেন। কংগ্রেসের কে কোথায় দাঁড়াবেন, সেটা ঠিক করতে অন্য কোনও পার্টিকে তো কংগ্রেস দায়িত্ব দেয়নি। তিনি আমেঠি থেকেও দাঁড়াতে পারেন, ওয়েনাড থেকেও দাঁড়াতে পারেন, বহরমপুর থেকেও দাঁড়াতে পারেন। কংগ্রেস সর্বভারতীয় পার্টি, উনি সর্বভারতীয় নেতা। ভারতের যে কোনও জায়গা থেকে উনি দাঁড়াতে পারেন।’
উল্লেখ্য, ওয়েনাড আসনটি সিপিআই-এর অন্যতম শক্ত ঘাঁটি। গত লোকসভা ভোটে রাহুল গান্ধী এই আসনটি থেকে জয়ী হন। তখনও তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ডি রাজার দল। এমন অবস্থায় জোট-ধর্মকে গুরুত্ব দিয়ে রাহুল যাতে ওয়েনাড আসনটি থেকে সরে দাঁড়ান, সেই প্রস্তাব উঠে এসেছে সিপিআই-এর অভ্যন্তরীণ আলোচনায়। সিপিআই-এর বক্তব্য, রাহুল যদি সেখানে ভোটে লড়েন, তাহলে তাঁর অন্যতম প্রতিপক্ষ হবে সিপিআই। আর সেক্ষেত্রে বিজেপি বিষয়টিকে হাতিয়ার করার সুযোগ পেয়ে যাবে বলে মনে করছেন সিপিআই নেতাদের একাংশ। যদিও এই নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও দাবি করেনি সিপিআই নেতৃত্ব।
তবে কংগ্রেস শিবির থেকে এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা শুরু হয়ে গিয়েছে। কেরলে কংগ্রেস সভাপতি কে সুধাকরনের বক্তব্য, রাহুল গান্ধী ২০১৯ সালে রেকর্ড ভোটে জিতেছেন ওয়েনাড থেকে। এখন তাঁকে পুনরায় সেই আসন থেকে দাঁড় করানো হবে কি না, সেটা পুরোপুরি কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত। এটা নিয়ে যে সিপিআই-এর কিছু বলার থাকতে পারে না, সেই বিষয়টিও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
তাঁর আরও বক্তব্য়, কেরল প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি চাইছে রাহুল গান্ধী ওয়েনাড থেকেই ভোটে লড়ুক এবং সেই প্রস্তাব ইতিমধ্যেই তিনি কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কে সি বেনুগোপালকেও জানিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে সিপিআই নেতৃত্ব এখনও পর্যন্ত সেভাবে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি প্রকাশ্যে। তবে কেরলের সিপিআই নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ পি সন্দোশ কুমার এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এই নিয়ে সাফাই দিয়েছেন। দলের জাতীয় এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তিনিও। তাঁর বক্তব্য, বিজেপিকে পরাস্ত করতে এলডিএফ (কেরলে বামেদের জোট) ও ইউডিএফ-কে (কেরলে কংগ্রেসের জোট) মুখোমুখি হতেই হবে। সেক্ষেত্রে রাহুল গান্ধী যদি সিপিআই-এর বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়ান, তাহলে ভুল বার্তা যেতে পারে এবং বিজেপি অন্য রাজ্যে সেটাকে হাতিয়ার করতে পারে।’