কীভাবে জাল বিস্তার করছে কৃষ্ণ ছত্রাক? বঙ্গে আক্রান্ত আরও ১

Mucormycosis: বারবার রূপ বদলাচ্ছে করোনা। তাই, করোনার নতুন রূপেও এই ভাইরাস কি একইভাবে সংক্রমক? উত্তর খুঁজতে নেমেছে আইসিএমআর। 

কীভাবে জাল বিস্তার করছে কৃষ্ণ ছত্রাক? বঙ্গে আক্রান্ত আরও ১
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 03, 2021 | 5:55 PM

মুর্শিদাবাদ: ফের বঙ্গে ছত্রাতাঙ্ক।  মিউকরমাইকোসিসে (Mucormycosis) আক্রান্ত হলেন আরও এক কোভিডজয়ী। জেলা স্বাস্থ্য  দফতর সূত্রে খবর, জিয়াগঞ্জের এক বছর ৫৩-এর বাসিন্দা নুরুল ইসলাম সম্প্রতি মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হন। তিনি বর্তমানে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিত্‍সাধীন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নুরুল ইসলাম নামের ওই প্রৌঢ় একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। অবসরপ্রাপ্ত নুরুল প্রায় একমাস আগে করোনা আক্রান্ত হন। এরপর সুস্থ হয়ে বাড়িতেই ফিরেছিলেন তিনি। সম্প্রতি, বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ বোধ করায় ওই ব্যক্তি স্থানীয় চিকিত্‍সালয়ে চিকিত্‍সা করাতে যান। এরপরেই ওই বৃদ্ধের শরীরে মিউকরমাইকোসিসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। তারপরেই চিকিত্‍সা করাতে কলকাতায় চলে আসেন নুরুল। তাঁর প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ওই প্রৌঢ় যে মিউকরমাইকোসিসে (Mucormycosis) আক্রান্ত তা প্রথমে কেউই জানতেন না। পরে সকলে খবর পান।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদে এই প্রথম কেউ এই ছত্রাকে সংক্রমিত হলেন। কিন্তু, উত্তরবঙ্গ জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে খবর, কয়েকমাস আগে মুর্শিদাবাদ থেকেই তাহেরা বিবি নামে এক রোগিণী কৃষ্ণ মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হয়ে চিকিত্‍সা করাতে আসেন। কিন্তু, তারপরেই হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান তিনি। যদিও, মুর্শিদাবাদ জেলা স্বাস্থ্য  দফতর সূত্রে এমন কোনও তথ্য় লিপিবদ্ধ হয়নি বলেই সূত্রের খবর।

বারবার রূপ বদলাচ্ছে করোনা। তাই, করোনার নতুন রূপেও এই ভাইরাস কি একইভাবে সংক্রমক? ভারতে গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ার জেরেই এই সংক্রমণ বেড়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু, করোনার নতুন ঢেউয়ে কি একইভাবে সংক্রমিত হবে মিউকরমাইকোসিস? কোন পথেই বা বাড়ছে এই সংক্রমণ? উত্তর খুঁজতে নেমেছে আইসিএমআর (ICMR)।

প্রসঙ্গত, ধীর গতিতে হলেও বাংলায় ক্রমশ প্রভাব বাড়াচ্ছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণ। রাজ্যে মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্তের চিকিৎসায় কলকাতা, বাঁকুড়া এবং উত্তরবঙ্গের তিনটি হাসপাতালকে নির্বাচন করা হয়েছে। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে কৃষ্ণ ছত্রাকের সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত কেন তা পরীক্ষা করার জন্যই ওই তিন হাসপাতালে রোগীদের চিকিত্‍সা চলবে। গত জুন মাসে বঙ্গে মিউকরমাইকোসিসের উপসর্গ নিয়ে ১২৪ জনের মধ্যে এখনও পর্যন্ত মোট ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য়মন্ত্রকের তথ্য় বলছে, গত তিনমাসে দেশে প্রায় ৪৫ হাজারের বেশি মৃত্য়ু হয়েছে মিউকরমাইকোসিসের সংক্রমণে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, করোনা জয় করলেই সেই রোগী উচ্চ রক্তচাপ বা মধুমেহ-জনিত রোগে আক্রান্ত। করোনার নতুন রূপে ফের এই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে কি না, কোনও বিশেষ এলাকাতেই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে আইসিএমআর। ইতিমধ্যেই একাধিক রাজ্য এই সংক্রমণকে মহামারী হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকার অবশ্য সে পথে হাঁটেনি।

মূলত কোভিড সেরে ওঠার পরই একাংশের রোগীদের শরীরে এই সংক্রমণ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। ডায়বেটিসের রোগীদের এই জীবাণুর আক্রমণের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। তাই করোনা সংক্রমিত হলে অবিলম্বে সুগার পরীক্ষা করিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। পাশাপাশি বাড়িতে থাকলে, বা হাসপাতালে ভর্তি হলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার উপরও বিশেষভাবে জোর দিতে বলা হচ্ছে। প্রধানত ভেজা এবং স্যাঁতস্যাঁতে জায়গা থেকেই এই ছত্রাক বিস্তার লাভ করে। আরও পড়ুন: ‘গতকাল কথা হয়েছে বাবুলের সঙ্গে’, সৌগতের মন্তব্যে সাংসদের ‘অলভিদা’-য় জল্পনা