Murshidabad Anniversary: বিয়ের ৭০ বছর উদযাপন! ফাগুনি দিনে আবারও চোখে-চোখ, হাতে-হাত নবতিপর দম্পতির
Murshidabad Anniversary: চামড়া কুচকেছে, চোখে পড়েছে ছানি, গলা ভেঙেছে- তবে প্রতিশ্রুতি ভাঙেনি। মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ থানার বেলিয়াপুকুরের বিশ্বনাথ সরকার ও সুরোধনি সরকারের বিয়ে হয় ১৩৫৯ সালে।
ফাগুন মাসের ৩ তারিখ ভগবানগোলা থানার বামুনিয়া গ্রামের বিশ্বনাথ সরকারের সঙ্গে রঘুনাথগঞ্জ থানার ফেজালপুর এলাকার সুরোধনি সরকারের বিয়ে হয় । বিয়ের পর কেটে গিয়েছে বহু সময়। একসঙ্গে কাটিয়েছেন বহু বসন্ত। আজ বিয়ের ৭০ তম বিবাহবার্ষিকী। বিশ্বনাথ সরকার ও সুরোধনি সরকারের ৬ ছেলে ও ৩ মেয়ে নিয়ে সংসার। বিয়ে হয়ে গিয়েছে সব ছেলে মেয়েদের ।
কাজের সূত্রে সবাই এখন বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছেন। কিন্তু ছেলেমেয়েরা ভোলেননি তাঁদের বাবা মায়ের বিবাহবার্ষিকী। বাবা মাকে তাঁদের বিবাহবার্ষিকী স্মরণ করিয়ে রাখতে আজকের দিনেই আবারও নতুন করে বাবা মায়ের বিয়ের ব্যাবস্থা করলেন ছেলে মেয়েরা । নিয়ম করে বাবার পৈত্রিক বাড়ি ভগবানগোলা থানার বামুনিয়া গ্রামে মাকে রেখে আসেন ছেলে মেয়েরা। আর বাবাকে বরের বেসে সাজিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে বসিয়ে মাকে আনতে হাজির হন ছেলে মেয়েরা।
অন্যদিকে, সুরোধনী সরকার ও রীতিমতন নতুন হলুদ রঙের তাঁতের শাড়ি পরে মাথায় টোপর দিয়ে বউ-এর বেশে অপেক্ষা করেছেন তাঁর বরের জন্য। রীতিমতন ধূমধাম করে বাবা মায়ের বিয়ে দিলেন ছেলে মেয়েরা । প্রায় ৭০০ অতিথিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ধূমধাম করে বিয়ে দিলেন বাবা মায়ের। বিশ্বনাথ সরকারের চতুর্থ পুত্র বলেন, “আমি কর্মসূত্রে দিল্লিতে পরিবার সহ থাকি। একদিন হটাৎ করে রাত্রে ঘরে ফিরলে আমার স্ত্রী আমাকে বলেন বাবা মায়ের আবার নতুন করে বিয়ে দেওয়ার কথা। প্রথমে শুনে একটু কেমন লাগলেও পরে আমার বাকি ভাই বোনদের সঙ্গে কথা বলি। তাঁরাও রাজি হয়ে যান।”
পুতিন পায়েল সরকার বলেন, “আমি তো খুব আনন্দ পেয়েছি। যে আমি আমার ঠাকুমা ও ঠাকুরদার বিয়েতে বরযাত্রী যেতে পারছি , নিজের হাতে ঠাকুমাকে সাজিয়ে দিতে পেরেছি।” অপরদিকে বিশ্বনাথ সরকার ও সুরোধনী সরকারের নাত জামাই সমর মন্ডল বলেন, “আমি যেদিন থেকে শুনেছি সেদিন থেকে আমি তারিখ গুনছি যে কবে আসবে! বিয়ের জন্য তৈরি করা হয়েছে ছাদনাতলা। সব নিয়ম পালন করেই ফের বিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি বৃদ্ধ দম্পতি। পাত্র বললেন, “এই সৌভাগ্য ক’জনের হয়। এমন দিন দেখব বলে কোনওদিন ভাবিওনি। তবে আমরা সত্যিই ভাগ্যবান। আমাদের জন্য যে এতটা ভাবে ওরা।” পাত্রী আজও লজ্জা পেয়েছেন। শুধু স্বামীর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘জন্ম জন্মান্তরে যেন পাই’…. আর নির্বাক দৃষ্টি বলেছে বাকিটা।
আরও পড়ুন: Bengal BJP: বিধানসভার পর পুরনিগমের নির্বাচনেও কেন পরাজয়? তথ্য-তালাশে বিজেপি