TMC: বার বার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ, জেলার দায়িত্ব থেকে শাওনীকে সরাল তৃণমূল
TMC: বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রীর দায়িত্ব থেকে সরানো হল শাওনী সিংহ রায়কে। শাওনীর জায়গায় জেলার নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অপূর্ব সরকার ডেভিডকে। জেলা সংগঠনে চেয়ারপার্সন পদে আবু তাহের খানের বদলে এলেন রবিউল আলম চৌধুরী। আবু তাহের দীর্ঘদিন ধরে শারীরিকভাবে অসুস্থ।
কলকাতা ও মুর্শিদাবাদ: বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোট। নির্বাচনের দামামা ইতিমধ্যেই বেজে গিয়েছে বাংলায়। সব দলগুলি নিজেদের মতো করে রাজনীতির ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে দিয়েছে। লোকসভা ভোটের মুখে এবার জেলাস্তরে একগুচ্ছ সাংগঠনিক পরিবর্তন আনল তৃণমূল কংগ্রেস। বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রীর দায়িত্ব থেকে সরানো হল শাওনী সিংহ রায়কে। বদলে ফেলা হয়েছে দলের সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যানকেও। শাওনীর জায়গায় জেলার নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অপূর্ব সরকার ওরফে ডেভিডকে। জেলা সংগঠনে চেয়ারপার্সন পদে আবু তাহের খানের বদলে এলেন রবিউল আলম চৌধুরী। আবু তাহের দীর্ঘদিন ধরে শারীরিকভাবে অসুস্থ। সেই কারণেই এই পরিবর্তন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
তৃণমূলের বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলায় বার বার গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ উঠে আসছিল। এমন অবস্থায় সংগঠনের এই পরিবর্তন যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শাওনীকে জেলার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে তাঁকে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য করা হয়েছে। জেলার রাজনীতির অন্দরমহলে কানাঘুষো, যাঁদের নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা সংগঠনে, তাঁরা তৃণমূলের অন্দরে শাওনীর বিরোধী গোষ্ঠী হিসেবেই পরিচিত।
প্রসঙ্গত, আবু তাহেরের শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনেকদিন ধরেই সেই দায়িত্ব দেখাশোনা করতেন কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার। এবার তাঁকে জেলা সভাপতি করা হয়েছে। গুঞ্জন রয়েছে, সম্প্রতি শাওনীর সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। এর পাশাপাশি বর্তমানে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া রেজিনগরের বিধায়ক রবিউল আলমও শাওনীর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর বলেই শোনা যায়। পঞ্চায়েত ভোটের আগে প্রার্থী বাছাই ঘিরে অসন্তোষ দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের অন্দরে। একাধিক বিধায়ক শাওনীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ভরতপুরের হুমায়ুন কবির, রেজিনগরের রবিউল আলম।
তাহলে কি গোষ্ঠীকোন্দলের কারণেই ভোটের মুখে জেলার দায়িত্ব থেকে সরানো হচ্ছে শাওনীকে? যদিও তৃণমূলের ব্যাখ্যা, শাওনীকে দলের রাজ্য সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে আনা হয়েছে। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, “এটি একটি রুটিন পরিবর্তন। দল সুনির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এটি করে।”
বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার এই পরিবর্তনের বিষয়ে এখনও পর্যন্ত শাওনী সিংহ রায়ের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। একাধিকবার তাঁকে ফোন করা হলেও কোনও উত্তর এখনও মেলেনি। তবে নতুন দায়িত্ব পাওয়া অপূর্ববাবু ভোটের আগে এই ‘গুরু দায়িত্বের’ জন্য দলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে তিনি চলার চেষ্টা করবেন বলেও জানিয়েছেন।
সাংগঠনিক এই পরিবর্তনের বিষয়ে ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ূন কবির বলেন, “সবাইকে নিয়ে চলতে হয়। সেই জায়গায় শাওনী সিংহ রায়ের অনেক ঘাটতি বা দুর্বলতা দেখা গিয়েছিল। আমরা বার বার তাঁকে অনুরোধ করেছিলাম সবাইকে নিয়ে চলতে। কিন্তু তিনি বিভাজনকে গুরুত্ব দিয়েছেন। আমার বিধানসভা এলাকায়, আমাকে না জানিয়ে তিনি ব্লক সভাপতিদের মাথায় তুলেছেন। তাঁদের নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আমরা জানতেই পারিনি। সেই কারণেই আমি জেলা সভানেত্রীকে পদ থেকে অপসারণের দাবি তুলেছিলাম। সঠিকটা গুরুত্ব পেয়েছে। কী করলে সংগঠন শক্তিশালী হবে, তা রাজ্য নেতৃত্ব বুঝতে পেরেছে।”