দরপত্রে বিরোধ, তৃণমূল নেতা মোস্তফা শেখ হত্যা-মামলায় পুণে থেকে গ্রেফতার ৩

Murder Case: তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এলাকায় রাস্তার উন্নয়নকে কেন্দ্র করে দরপত্র নিয়ে মৃত মোস্তফার সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছিলেন সবুর শেখ। সেখান থেকেই শত্রুতা। সেই শত্রুতার জেরেই খুন করা হয় বলে অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূল নেতার পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।

দরপত্রে বিরোধ, তৃণমূল নেতা মোস্তফা শেখ হত্যা-মামলায় পুণে থেকে গ্রেফতার ৩
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 02, 2021 | 7:07 PM

মুর্শিদাবাদ: তৃণমূল (TMC) নেতা মুস্তফা শেখ হত্য়া-মামলায় তিন মূল চক্রীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুণে থেকে ওই তিন অভিযুক্তকে ট্রানজিট রিমান্ডে এ রাজ্য়ে নিয়ে আসা হয়। বুধবার, ধৃত সাদ্দাম শেখ, সবুর শেখ ও ফুরাই শেখকে  গ্রেফতার করে কান্দি মহকুমা আদালতে তোলা হয়। তদন্ত চালিয়ে যেতে ধৃতদের ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন গোয়েন্দাদের।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এলাকায় রাস্তার উন্নয়নকে কেন্দ্র করে দরপত্র নিয়ে মৃত মোস্তফার সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছিলেন সবুর শেখ। সেখান থেকেই শত্রুতা। সেই শত্রুতার জেরেই খুন করা হয় বলে অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূল (TMC) নেতার পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। খুনের পর থেকেই গা-ঢাকা দিয়েছিল ওই তিন দুষ্কৃতী। খুনের পরেরদিনই অভিযুক্ত সবুর শেখ মল্লারপুর থানার বড়তুরি গ্রামে দূর সম্পর্কের আত্মীয় আপেল শেখের বাড়িতে জোর করে আশ্রয় নেন। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে ধরতে গেলে তিনি পুলিশের দিকে কয়েক রাউন্ড গুলি চালান। তখনই একটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে আপেলের ডান পায়ে লাগে। তাঁকে জখম অবস্থায় রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালের বেডে শুয়েই আপেল বলেছিলেন, “রাত ৮টা নাগাদ সবুর আমার বাড়িতে এসে বলে আশ্রয় নেবে। আমি তাকে নিষেধ করি। কিন্তু সবুর জোর করেই আমার বাড়িতে ঢুকে পড়ে। কিছুক্ষণ পর পুলিশ আসে। তখন সবুর পালিয়ে যাওয়ার সময় গুলি চালায়। তখনই আমার পায়ে একটা গুলি এসে লাগে।” তারপর থেকেই সবুর শেখের খোঁজ শুরু করেছিলেন তদন্তকারীরা।

বড়ঞা থানা ও তৃণমূলের দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বড়ঞার কুরুনুরুন পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা মোস্তফা শেখ গত ১৩ অগস্ট খুন হন। শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফা শেখ ওইদিন সকালে নিজের মোটরবাইকে সুন্দরপুর মোড়ে বাজার করতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার সময়ে ধরেছিলেন রাজ্য সড়ক। অভিযোগ, তখনই চৈত্রপুর-রাজহাট গ্রামের মাঝে মাঠে কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁকে তাড়া করে। তারপর আচমকা বোমাবাজি করা হয় বলে অভিযোগ। বোমার আঘাতে বাইক থেকে পড়ে যান তৃণমূল নেতা। তারপর তাঁকে লক্ষ্য করে এক রাউন্ড গুলিও চলে। তাতেও শেষ হয়নি। ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় মোস্তাফার দেহ। তারপর তাঁর দেহ ধানখেত থেকে উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনায়, বিরোধী বিজেপির দিকে নিশানা করেছিল শাসক শিবির। যদিও, সেই অভিযোগ অস্বীকার করে গেরুয়া শিবির।

বুধবার, ওই তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতারের পর বড়ঞা ব্লক তৃণমূল সভাপতি গোলাম মোর্শেদ বলেন, “প্রশাসন যা পদক্ষেপ করার করবে। যারা দোষী তাদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে। ” বিজেপি নেতা মনিরুল ইসলাম বলেন, “এটা তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। ভাগ-বাটোয়ারার লড়াইয়ের ফলেই এই খুন হয়েছিল। তৃণমূলের কর্মী কেবল নন, তৃণমূলের সকল নেতা বা এই দলের কোনও নীতি আদর্শ নেই। সেই ভাগবাটোয়ারার গন্ডগোলের জেরে খুন হয়েছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য।” আরও পড়ুন: তালিকায় রয়েছে নাম, দুয়ারে সরকার প্রকল্পে আবেদনকারীর নথি যাচাই করতেই চোখ কপালে প্রশাসনের!