Awas Yojona: সিপিএমের প্রধানের বাড়িতে ৫ জনের নামে আবাসের ঘর, শুধু তাই নয়, অভিযোগ আছে আরও…

Murshidabad: এলাকার আরেক বাসিন্দা প্রতিমা মণ্ডলেরও একই অভিযোগ। তাঁর মাটির বাড়ি, তবু তালিকায় নাম ওঠেনি বলে দাবি করেন। তিনি জানান, মাটির বাড়িতে ফাটল ধরে গিয়েছে।

Awas Yojona: সিপিএমের প্রধানের বাড়িতে ৫ জনের নামে আবাসের ঘর, শুধু তাই নয়, অভিযোগ আছে আরও...
পঞ্চায়েত সদস্য জিমি রায়।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 21, 2023 | 2:07 PM

মুর্শিদাবাদ: আবাস যোজনা (Awas Yojona) নিয়ে নিত্য নতুন অভিযোগের মেলা। এতদিন শাসকদলের পঞ্চায়েত সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠছিল। এবার সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্যর বিরুদ্ধে একের পর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। অভিযোগ ১, পঞ্চায়েত সদস্যর শ্বশুর বেঁচে থাকার পরও তালিকায় তাঁর নামের আগে ‘লেট লেখা’। অভিযোগ ২, শ্বশুর মারা যাওয়ার কারণ দেখিয়ে আবাস তালিকায় নাম তোলা হয়েছে শাশুড়ির। অভিযোগ ৩, সিপিএম পঞ্চায়েত সদস্যর পরিবারের পাঁচজনের নাম রয়েছে আবাস যোজনার তালিকায়। মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা ব্লকের বেওয়া-২ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত যজ্ঞেশ্বরপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য জিমি রায়ের বিরুদ্ধে এই সমস্ত অভিযোগ উঠেছে। গ্রামের লোকজনের দাবি, যোগ্য লোকজনকে বাড়ি দেয়নি। অথচ ক্ষমতার বলে নিজেরা একের পর এক বাড়ি নিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয়ে জিমি রায়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তিনি বলতেও পারবেন না। কারণ, পঞ্চায়েতের যাবতীয় যা কাজকর্ম তা তাঁর স্বামী অনিল রায় দেখেন। এমনকী নিজের এলাকায় কোনওদিন যাননি পর্যন্ত।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, ফরাক্কা ব্লকের বেওয়া-২ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত যজ্ঞেশ্বরপুর এলাকায় সিপিআইএমের সদস্য জিমি রায়ের পরিবারের আবাসের তালিকায় নাম রয়েছে জিমি রায়ের, স্বামী অনিল রায়ের, জিমি রায়ের দেওর শ্যাম রায়ের, শ্বশুর বিজয় রায়ের এবং শাশুড়ি ছায়া রায়ের। এমনও অভিযোগ, বিজয় রায় জীবিত থাকা সত্ত্বেও তাঁকে মৃত দেখিয়ে বিজয় রায়ের স্ত্রী ছায়া রায়ের নামও আবাসের তালিকায় রাখা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা দশরথ রায় বলেন, “বারবার পঞ্চায়েত সদস্যকে জানিয়েছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু তালিকায় কোনও নাম নেই। ওনারা এখন বলছেন ফাইনাল লিস্টে থাকবে নাম। এদিকে ওই তালিকাও চলে এসেছে বলেই শুনেছি। এক একটা বাড়িতে পাঁচটা করে নাম এসেছে। কিন্তু আমার নাম নেই। বাড়ির ছবি তুলে নিয়ে গেল, সার্ভে করে গেল তারপর এই অবস্থা। পঞ্চায়েতের সদস্যের হয়ে গেল, অথচ আমাদের ঘর নেই। শুনেছি সিপিএমের জিমি রায়ের পাঁচ সদস্যর নাম রয়েছে তালিকায়।”

এলাকার আরেক বাসিন্দা প্রতিমা মণ্ডলেরও একই অভিযোগ। তাঁর মাটির বাড়ি, তবু তালিকায় নাম ওঠেনি বলে দাবি করেন। তিনি জানান, মাটির বাড়িতে ফাটল ধরে গিয়েছে। তাই তিনি বারান্দায় থাকছেন। যদিও পঞ্চায়েত সদস্য জিমি রায়ের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “আমরা জানি না। আমাদের হাতে কোনও তালিকা আসেনি। তাই কারও বক্তব্য নিয়ে কিছু বলতে পারছি না। আমি কখনও অঞ্চলে যাইনি। যা করে আমার স্বামী করেন। ঘোরাঘুরি সবই ও করে। কত পরিবার আছে বলতে পারব না। ক’টা বাড়ি জানি না।”

জিমির স্বামী অনিল রায়ের কথায়, “আমার স্ত্রী সিপিএমের সদস্য়। এখন পর্যন্ত আমাদের ব্লক থেকে কোনও চূড়ান্ত তালিকা এসে পৌঁছয়নি। সার্ভে যারা করেছে তারাই সবটা বলতে পারবে। আমার পরিবারের কার নাম আছে, নেই জানি না। তালিকাই তো পাইনি। যদি আমার পরিবারের লোকের নাম আসে, বিডিও অফিস থেকে তদন্ত করে দেখা হোক, সেই লোকটা পাওয়ার যোগ্য কি না। আমার বাড়ি থেকে ১৫ বছর ধরে পঞ্চায়েত সদস্য আছে। আমার মা উপপ্রধান ছিলেন। তারপর আমি ছিলাম পাঁচ বছর। এখন আমার স্ত্রী পঞ্চায়েত সদস্য। কাজকর্ম আমিই করি।”

ফরাক্কার তৃণমূল বিধায়ক মণিরুল ইসলাম বলেন, “৩৪ বছরের পুরনো অভ্যাস ভুলতে পারেনি। দুর্নীতি তো ওরাই করেছে। যারা আমাদের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তোলে তারা এখন কোথায়। সরকারকে বদনাম করতে পরিকল্পিত ভাবে সিপিআইএম এই সব কাজ করেছে।”

অন্যদিকে ফরাক্কার এরিয়া কমিটির সেক্রেটারি দিলীপ মিশ্র বলেন, “এই ঘটনার নিন্দা করি। আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছি। তবে জিমি রায় বহরমপুরে গিয়ে অনেক দিন আগে তৃণমূলে যোগদান করেছেন। তৃণমূলে যোগদানের পুরস্কার পেয়েছেন হয়ত তিনি।” যদিও পঞ্চায়েত সদস্য, তাঁর স্বামী বা এলাকার লোকজন দাবি করেছেন তাঁরা সিপিএমই করেন।