‘এমন আমি ঘর বেঁধেছি…’ করোনা এড়াতে গাছে নিভৃতবাস সাধুর!

সাধুর অবশ্য দাবি, ভয়ে নয়, মারনব্যাধী করোনা ভাইরাস থেকে সমাজকে মুক্ত করতে নিভৃতে তিনি ভগবানের উপাসনা করে চলেছেন।

'এমন আমি ঘর বেঁধেছি...' করোনা এড়াতে গাছে নিভৃতবাস সাধুর!
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 31, 2021 | 11:03 PM

নদিয়া: করোনা (Corona) সংক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে স্বাস্থ্য সচেতনতা গ্রহণ করার পাশাপাশি জনসংযোগ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন প্রায় সকলেই। চলছে ওয়ার্ক ফ্রম হোম, অনলাইন ক্লাস, ভার্চুয়াল মিটিং। কিন্তু শারীরিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখতে এক অভিনব ধরনের পন্থা নিলেন এক সাধু। একে নজিরবিহীনও বলা চলে। করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে গাছের ওপরে বাসা বাঁধলেন তিনি!

খাওয়া-দাওয়া, ঘুম সবই করছেন গাছের ওপর ঘরে বসে। সংক্রমণ থেকে নিজেকে বাঁচাতে এভাবেই সবার থেকে একেবারে নিজেকে সরিয়ে নদী-পার্শ্ববর্তী জঙ্গল ঘেরা নির্জন এলাকায় গাছের উপর ঘর বেঁধে একান্তে বসবাস শুরু করেছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব এক সাধু।

saint 1

খুব প্রয়োজন ছাড়া গাছ থেকে নামেন না

গাছের ওপরে বাস , সেখানেই পুজা আর্চা, খাওয়া-দাওয়া। স্নান আর খাবার জল আনতে বেরোন বটে, তবে সেটাও জনমানব শূন্য এক জায়গায়। এবাবেই করোনা সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে এক সাধুর নিভৃতবাসের চিত্র উঠে এলো নদিয়ার তীর্থনগরী নবদ্বীপে।

সাধুবাবা নিজেই জানাচ্ছেন, বাড়তি সচেতনতা গ্রহণ করার পাশাপাশি ভাইরাসের প্রকোপ থেকে নিজেকে বাঁচাতেই এই উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। তথাকথিত লোকসামাজ থেকে নিজেকে একেবারে বিচ্যূত করে নবদ্বীপ পুরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের রানিচড়ায় ভাগীরথী নদীর পার্শ্ববর্তী জঙ্গল ঘেরা এক ফাঁকা এলাকাকে নিজের ডেরা করেছেন এই সাধু। সেখানে একটি গাছের ওপর ঘর বেঁধে বসবাস করছেন তিনি।

জানা গিয়েছে, এই সাধুর আসল নাম শ্যামল দাস। কর্মজীবনে এলাকায় একজন নামকরা কাঠমিস্ত্রি ছিলেন। বর্তমান তাঁর পরিবারে স্ত্রী রয়েছে। তবে তিনি বহুদিন আগেই সংসার ছেড়েছেন। সাধুবাবার মেয়েরা বিবাহসূত্রে থাকেন বাইরে। আর তিনি ধর্ম-কর্মে মনোনিবেশ করার জন্য বেশ কয়েক বছর আগে সংসার ত্যাগ করে বেরিয়ে পড়েন বাইরে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ধর্মস্থান দর্শন করে এখন করোনা পরিস্থিতিতে ভাগীরথীর তীরে গাছের ওপরই তাঁর স্থায়ী ঠিকানা করেছেন তিনি।

saint 2

জল নিয়ে আবার নিভৃতবাসে

শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ভিক্ষাবৃত্তি করেই নিজের অন্ন সংস্থান করেন এই সাধু। কিন্তু করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে সপ্তাহে মাত্র একদিনই ভিক্ষা করতে বের হন বলে জানান তিনি।

saint 3

স্নান সারতে জলে

তাছাড়া আশেপাশের লোকজনও সাধুকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তবে সাধুর দাবি, ভয়ে নয়, মারনব্যাধী করোনা ভাইরাস থেকে সমাজকে মুক্ত করতে নিভৃতে থেকে তিনি ভগবানের সাধনা করে চলেছেন।