Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Mamata Banerjee: নদিয়ায় কেন কো-অর্ডিনেশন কমিটি গড়তে হল মমতাকে? কোথায় খামতি? কী বলছে শাসক-বিরোধী

Mamata Banerjee: সাম্প্রতিক অতীতে বার বার খবরে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ। বিভিন্ন নেতার অনুগামীদের আলাদা আলাদা গোষ্ঠী গজিয়ে উঠেছে বলে বার বার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা।

Mamata Banerjee: নদিয়ায় কেন কো-অর্ডিনেশন কমিটি গড়তে হল মমতাকে? কোথায় খামতি? কী বলছে শাসক-বিরোধী
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 09, 2022 | 9:49 PM

নদিয়া: তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বুধবার কৃষ্ণনগরের সভা থেকে দলের নিচু তলার কর্মীদের সতর্ক করে দিয়েছেন গোষ্ঠীকোন্দলের ইস্যু নিয়ে। বলেছেন, “বিধায়ক যাঁরা আছেন, নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করবেন না। আর কেউ করলে তাঁকে আমি পার্টিতে স্থান দেব না।” নদিয়ায় তৃণমূলের একমাত্র সাংসদ মহুয়া মৈত্র, জেলার সব দলীয় বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে নিয়ে একটি কো-অর্ডিনেশন কমিটি তৈরি করে দিয়েছেন। বলেছেন, “এটা তৃণমূল কংগ্রেস পরিবার, এটাকে ভাঙা যাবে না।” কিন্তু কেন এই কোঅর্ডিনেশন কমিটি গঠনের দরকার পড়ল? সাম্প্রতিক অতীতে বার বার খবরে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ। বিভিন্ন নেতার অনুগামীদের আলাদা আলাদা গোষ্ঠী গজিয়ে উঠেছে বলে বার বার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা।

কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী?

কৃষ্ণনগরের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “আমাদের যাঁরা পঞ্চায়েতে, ব্লকে, জেলা পরিষদে আছেন… কে বড় হনু? আমি না মানুষ? মানুষ না থাকলে আমি শূন্য। রোজ তৃণমূলের প্রতীককে আমি নমস্কার করি। যাঁর ইগো থাকবে, বাড়িতে বসে যান। কাজ করার দরকার নেই। কলকাতার সঙ্গে কার যোগাযোগ আছে আপনার জানার দরকার নেই। আমরা মাঠে খুঁজে নেব তাঁকে। আজকে আমি একটি কো-অর্ডিনেশন কমিটি তৈরি করে দিয়ে যাচ্ছি। মহুয়া-উজ্জ্বল-নন্দ ও সব বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতিদের নিয়ে এই কো-অর্ডিনেশন কমিটি তৈরি করে দিয়ে গেলাম। আপনারা একসঙ্গে বসে কাজ করবেন। যখন যে ব্লকে যাবেন, সবাইকে ডেকে নেবেন। এটা দেখার দরকার নেই, এটা আমার গ্রুপ, ওটা আমার গ্রুপ। এটা তৃণমূল কংগ্রেস পরিবার। এটাকে ভাঙা যাবে না।”

গলদ কোথায়? চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে বিরোধীরা

বিজেপির রাজ্য কিষান মোর্চার সভাপতি মহাদেব সরকার বলছেন, “এই দল আপাদমস্তক ঘুন ধরা, দুর্নীতিগ্রস্ত। নদিয়া জেলাতেই পলাশিপাড়ার বিধায়ক দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। এই জেলায় গোষ্ঠীকোন্দল প্রতিটি স্তরে। বুথ থেকে, মণ্ডল থেকে সর্বত্র। কিছুদিন আগে বিমলেন্দু সিংহ রায়ের উপরেও খাঁড়া নেমে এসেছে। তিনি একজন সৎ, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির মানুষ। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক। তিনি গোষ্ঠীকোন্দলের শিকার। তাঁর বিরুদ্ধে নোংরামি করা হয়েছে।” উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই নদিয়া জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান পদ খুইয়েছেন বিমলেন্দু সিংহ রায়। তিনি করিমপুরের তৃণমূল বিধায়ক। বর্তমান সাংসদ মহুয়া মৈত্র অতীতে এই এলাকার বিধায়ক ছিলেন। জেলার রাজনীতির অন্দরমহলে কানাঘুষো শোনা যায়, বিমলেন্দু ও মহুয়ার মধ্যে সম্পর্ক বেশ নরমে গরমে। শুধু তাই নয়, অতীতে একাধিকবার দলের অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠে এসেছে।

বিজেপি নেতা আরও বলেন, “যে কমিটিই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করুন না কেন, এটি জোড়া দিতে পারবেন না। পলাশিপাড়া থেকে হরিণঘাটা পর্যন্ত সর্বত্র তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল এমন জায়গায় পৌঁছেছে, সেটি কোনওভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেক আপ দিতে পারবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অ্যান্টিবায়োটিকে কাজ হবে না।”

লক্ষ্য সাংগঠনিক শ্রীবৃদ্ধি, দাবি তৃণমূলের

নদিয়ার নাকাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক কল্লোল খাঁ অবশ্য বলছেন, “নদিয়া জেলার সাংগঠনিক শ্রীবৃদ্ধি করার জন্য এবং নজরদারি করার জন্যই এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে আমাদের সংগঠনকে চাঙ্গা করার জন্যই এই কমিটি করা হয়েছে।” পঞ্চায়েত নির্বাচন যাতে ঠিকভাবে পরিচালনা করা যায়, সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানাচ্ছেন তিনি। দলের স্বার্থেই এই কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে দাবি বিধায়কের।

অতীতেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মমতা

অতীতে এক প্রশাসনিক বৈঠকে সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে কড়া ভাষায় মুখ্যমন্ত্রী সতর্ক করে দিয়েছিলেন। সাংসদের নাম করে বলেছিলেন, “মহুয়া, আমি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছি। কে কার পক্ষে, কে কার বিপক্ষে, সেসব আমার দেখার দরকার নেই। এই রাজনীতি এক দিন চলতে পারে, চিরদিন নয়। সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।” দলের মধ্যে যাতে কোনও মতপার্থক্য না থাকে, সেই কথাও তখন বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তারপরও সমস্যা মেটেনি বলেই স্থানীয় সূত্রে খবর। সম্ভবত সেই কারণেই এই কমিটি গঠন করে দেওয়া হল বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের।