Nadia Awas Yojona: আবাসের প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছিলেন যোগ্যরাই, তবুও বাংলার হতদরিদ্র মানুষগুলো জেল খাটছেন এখন!
Nadia Awas Yojona: বিরোধীদের অনেকেই বলছেন, আবাস যোজনায় সরাসরি জড়িত রাঘব বোয়ালদের থেকে নজর ঘোরাতেই গরিব মানুষগুলোকে জেলে ভরা হচ্ছে। গোটাটাই নাকি আই ওয়াশ।
নদিয়া: কেন্দ্রের আবাস যোজনা (Awas Yojona) নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। আবাস প্রকল্প নিয়ে দিকে দিকে দেখা গিয়েছে ক্ষোভ বিক্ষোভ। প্রকল্প খতিয়ে দেখতে বাংলায় এসেছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। আবাস নিয়ে চড়েছে রাজনৈতিক পারদ। এবার সেই আবাস নিয়েই বিস্ফোরক রিপোর্ট। আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকা নিয়েও নাকি বাড়ি করেননি অনেকে। ঠিক কী কারণে টাকা নিয়ে বাড়ি বানাননি তাঁরা? সূত্রের খবর, বেশিরভাগেরই অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে করোনাকালের পর। সে সময় আর্থিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন বহু মানুষ। অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয় অনেকেরই। কেউ কেউ এতটাই দরিদ্র যে সেই টাকা খরচ করে ফেলেন সংসারের গার্হস্থ্য অনুশাসনেই। কেউ আবার কাজের খোঁজে পাড়ি দেন ভিন রাজ্যে। তাঁদের থেকে টাকা ফেরত নিতে শুরু করেছে প্রশাসন। আবার বড় বড় বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাসের টাকা নিয়েছেন অনেক নেতা-বিধায়ক কিংবা অনুগামীরা। এহেন একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। কিন্তু প্রশ্ন, তাঁদের ক্ষেত্রেও কি এতটা সক্রিয় প্রশাসন? কিন্তু আবাসের টাকায় বাড়ি না বানিয়ে নয়ছয় করার অভিযোগে এরকম অনেক গরিব মানুষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কেস ১ এরকমই একজন নদিয়ার অমল বিশ্বাস। নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের নুঙ্গি গ্রামের বাসিন্দা। বলতে গেলে প্রায় বেকার। পরিবারে সেরকম কেউই নেই। মধ্যবসায়ী অমলের ভাই কৃষ্ণনগর জেলে। সূত্রের খবর, তিনি আবাস যোজনার প্রথম কিস্তিতে ৬০ হাজার টাকা পেয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা তিনি খরচ করে ফেলেন। তাই প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করে। অতঃপর তিনি আপাতত জেলে। অমলের দাদা অলোক বলেন, “ভাই শুধু বলত টাকা ঢোকেনি। আমি এই বলতেই শুনেছি। এখন কৃষ্ণনগর জেলে পাঠিয়েছে শুনেছি।”
কেস ২ নুঙ্গির আরও এক জন সুনীল বিশ্বাস, দোতলা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাসের ৬০ হাজার টাকা পেয়েছিলেন। ঘরের কিছুটা কাজ করার পরও তিনি জেলে। পরিবারের অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধান ঘরের ছবি বিডিওকে না পাঠানোয় তাঁকে জেলে যেতে হয়েছে। সুনীলের স্ত্রী অবশ্য দাবি, এই দোতলা বাড়ি তাঁদের নয়। আবাসের টাকা দিয়েই বাড়ি তৈরি হয়েছে।
কেস৩ নালুপুরের শিখা রায়। বাবার জায়গায় টিনের ছাউনি করে স্বামী আর মেয়েকে নিয়ে সংসার। আবাসের টাকা পেয়েছিলেন কোভিডের সময়ে। বাড়ি করতে পারেননি। কিন্তু টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। ফেরতও দিতে পারেননি। জেল খাটছেন শিখা।
সম্প্রতি বিডিও ও স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফে সমীক্ষা করা হয়। তাতে দেখা যায়, অনেকেই আবাসের টাকা পেয়েছেন। কিন্তু বাড়ি তৈরি করেননি। টাকা অন্যত্র খরচ হয়ে গিয়েছে।
কেস ৪ অলোকা বৈরাগী। পূর্ত দফতরের জায়গায় টিনের বাড়ি করে থাকেন। পাট্টা পাওয়ার কথা। কিন্তু পাট্টা পাননি। অথচ প্রথম কিস্তির টাকা পেয়ে গিয়েছিলেন। বিডিও অফিস থেকে বাড়ি দেখতে এসে বাড়ি তৈরি হয়নি বলে এফআইআর করা হয়। অলোকার টাকা খরচ হয়নি, তাই ফেরতও দেন। কিন্তু জামিন পেলেও আদালতে দৌড়তে হচ্ছে তাঁকে। অলোকা বৈরাগীর ছেলে বলছেন, “আমাদের তো জায়গা নেই। এটা PWDর জায়গা। তাই বাড়ি তৈরি হয়নি।”
বিরোধীদের অনেকেই বলছেন, আবাস যোজনায় সরাসরি জড়িত রাঘব বোয়ালদের থেকে নজর ঘোরাতেই গরিব মানুষগুলোকে জেলে ভরা হচ্ছে। গোটাটাই নাকি আই ওয়াশ।
এ বিষয়ে পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “গোটা পৃথিবী জুড়ে একটা সামাজিক অবক্ষয় হচ্ছে। সবাই মিলে এটা প্রতিরোধ করতে হবে। “