Child Death: জগদ্ধাত্রী পুজোয় সাঙের দাবিতে জাতীয় সড়কে বিক্ষোভ, অ্যাম্বুলেন্সেই ধুঁকতে ধুঁকতে মৃ্ত্যু শিশুর!
Nadia: অবরোধের জেরে অ্যাম্বুলেন্স আটকে যেতেই হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই মৃত্য়ু হল শিশুর। অভিযোগ, ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থেকেও কোনও পদক্ষেপ করেনি।
নদিয়া: জগদ্ধাত্রী পুজো সাঙের আয়োজন করতে দিতেই হবে। আর এই দাবি নিয়ে মঙ্গলবার বিকেল থেকে নদিয়ার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে চলল অবরোধ। সেই অবরোধে আটকে গেল একটি অ্য়াম্বুলেন্স। এক সাত বছরের অসুস্থ শিশুকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল কলকাতার এসএসকেএম হাসপাাতালে। কিন্তু, শেষ রক্ষা হল না। অবরোধের জেরে অ্যাম্বুলেন্স আটকে যেতেই হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই মৃত্য়ু হল শিশুর। অভিযোগ, ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থেকেও কোনও পদক্ষেপ করেনি।
ঠিক কী হয়েছিল এদিন? জগদ্ধাত্রী পুজোয় সাঙের অনুমতি নিয়ে কৃষ্ণনগরের বেশ কিছুদিন ধরেই সমস্য়া চলছিল। যা নিয়ে কৃষ্ণনগরের বাসিন্দাদের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করে। সেই ক্ষোভের পরিণতিতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে চলে বিক্ষোভ। বিক্ষোভের জেরে কার্যত সন্ধে থেকে অচল হয়ে পড়ে ওই রাস্তা। পথের মাঝেই টায়ার জ্বেলে, পোস্টার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। অবরোধের জেরে কলকাতা এবং উত্তরবঙ্গ গামীপুর বহু ট্রাক-বাস বাস আটকে পড়ে।
এই অবরোধের জেরেই কার্যত বিপত্তি দেখা দেয়। আটকে যায় একটি অ্য়াম্বুলেন্স। কিন্তু, অ্য়াম্বুলেন্সের সাইরেন শুনেও মন গলেনি বিক্ষোভকারীদের। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে থাকে আপত্কালীন গাড়ি। গাড়ির ভেতর তখন রীতিমতো কাতরাচ্ছে বছর সাতেকের এক বালক। নাকে পরানো রয়েছে অক্সিজেনের নল। কিন্তু তাতে কী! তার তখন দরকার জরুরি চিকিত্সা।
অ্যাম্বুলেন্স থেকে নেমে বিক্ষোভকারীদের জমায়েতের দিকে এগিয়ে গেলেন শিশুর এক পরিজন। অনেক কাকুতি মিনতি করলেন। লাভ হল না। ।ফিরে আসতে হল গাড়িতেই। এদিকে, তখন হু হু করে কেঁদে চলেছেন ওই দুধের শিশুর মা। ছেলেটাকে একটু হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। সে যে করেই হোক। কিন্তু কোথায় কী! কে শুনবে কার কথা! দাঁড়িয়ে থাকল পুলিশ, চলল বিক্ষোভ।
ওই অসুস্থ শিশুর যখন মরো মরো অবস্থা তখন শেষ মুহূর্তে এসে পৌঁছলেন কৃষ্ণনগরের পুলিশ। দ্রুত ট্রাক বাস চালানোর ব্যবস্থা করতেই উঠে যায় অবরোধ। কিন্তু, তখন আর বেঁচে নেই ওই শিশু। অ্যাম্বুলেন্সেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে সে। জানা গিয়েছে, মালদা থেকে তাকে চিকিত্সার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। তবে সে সুযোগ আর হল কই!
ঘটনাকে কেন্দ্র করে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। কেন অ্যাম্বুলেন্স দেখেও ছাড়পত্র মিলল না? কেনই বা পুলিশ এল না যথাসময়ে। তাহলে কি পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ প্রশাসন? প্রশ্ন একাধিক। তবে সদুত্তর নেই। এক প্রাক্তন পুলিশকর্তার কথায়, “কোনওভাবেই এই আচরণ কাম্য নয়। অ্য়াম্বুলেন্সে রোগী যাচ্ছে মানে তার অবস্থা ক্রিটিক্যাল। সেক্ষেত্রে আগে ছেড়ে দেওয়া উচিত। রোগী আটকে বিক্ষোভ কোনও উপায় হতে পারে না।”
প্রায় একই কথা বলেছেন সমাজকর্মী মীরাতুন নাহার। রাস্তা আটকে বেলাগাম বিক্ষোভ ও তা কেন্দ্র করে শিশুর মৃত্য়ু যে প্রশাসনের ব্যর্থতা এমনটাই মনে করছেন বিশিষ্ট সমাজকর্মী। যদিও, এই ঘটনায় দ্রুত তদন্তে নেমেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই বিক্ষোভের ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের আজই আদালতে পেশ করা হবে।
আরও পড়ুন: Video: ‘বাংলার পুলিশ আমাদের,প্রশাসন আমাদের’, ভাইরাল যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি!