তৃণমূলে যোগদান সম্ভাবনার মধ্যেই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের এই মন্তব্য যথেষ্টই তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
উত্তর ২৪ পরগনা: একদিকে যখন দল ছাড়ার ঝোড়ো ইনিংস চলছে তৃণমূলে, তখন উদ্বেগ দানা বেঁধেছে বিজেপি অন্দরেও। বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur) কি আদৌ দলে থাকবেন? তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিজেপি অন্দরে।
এনআরসি-সিএএ নিয়ে ক্ষুব্ধ শান্তনু ঠাকুরের অবশ্য স্পষ্ট জবাব, “নাগরিকত্ব আইন পাশ করানোর দাবিতে বিজেপিতে যোগ দিয়ে সাংসদ হয়েছিলাম। তা দিতে না পারলে সঙ্খ যেমন সিদ্ধান্ত নেবে, তাই করব।” সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের এই মন্তব্য যথেষ্টই তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ইতিমধ্যে বেশ কিছু বিজেপির কর্মসূচিতে যোগদান করেননি শান্তনু। তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনাও তৈরি হয়েছে প্রচুর। একবার সিএএ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখও খোলেন শান্তনু। তার আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠিও লেখেন। মানভঞ্জনে তড়িঘড়ি শান্তনু ঠাকুরের বাড়ি যান কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। উল্লেখ্য, কৈলাশের হাত ধরেই বিজেপিতে এসেছিলেন শান্তনু। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, তাই শান্তনুকে সামলানোর দায়িত্বও অনেক কৈলাশের ওপরেই। তিনিই শান্তনুকে আশ্বস্ত করেন, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই সিএএ লাগু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আশ্বাসে চিড়েও ভেজে। মাঝের ক’দিনে কোনও বিতর্কিত মন্তব্য করেননি তিনি।
তবে শেষবার অমিত শাহর সভা হওয়ার পর সিএএ লাগু করার ব্যাপারে লক্ষ্যণীয় কোনও অগ্রগতি দেখেননি শান্তনু। বরং, করোনা টিকা বেরনোর পরই সিএএ নিয়ে ভাবা হবে বলে বাংলায় দাঁড়িয়ে জানিয়ে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাতে উদ্বেগ আরও বেড়েছে শান্তনুর। কারণ কবে করোনার টিকা আবিষ্কার হবে? কবেই বা সিএএ চালু করার ব্যাপারে দিনক্ষণ নির্ধারিত হবে, কোনও আশার আলোই দেখছেন না শান্তনু।
নাগরিকত্ব বিলকে হাতিয়ার করেই একদিকে বিজেপির বিরুদ্ধে ঘুঁটি সাজাচ্ছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই উত্তর ২৪ পরগনার সাংগঠনিক সভা থেকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক শান্তনু ঠাকুরকে দলে ফেরার বার্তা দিয়ে রেখেছেন। তা নিয়ে নতুন করে গুঞ্জনও তৈরি হয়েছে। বিজেপি শিবিরের আশঙ্কা, বনগাঁ সাংসদ কি তবে একুশের নির্বাচনের আগেই জ্যোতিপ্রিয়র ডাকে সাড়া দেবেন?
আরও পড়ুন: শিল্প না হলে জমি চাই, মুখ্যমন্ত্রীর সামনে বিক্ষোভ দেখানোর হুঁশিয়ারি কৃষকদের
২০১১ সালে শান্তনু ঠাকুরের বাবা মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে জয়লাভ করে রাজ্যের মন্ত্রী হয়েছিলেন। তৃণমূলে মোহভঙ্গ হয়ে মঞ্জুল ঠাকুর বিজেপিতে যোগদান করেন। শান্তনু ঠাকুরের তৃণমূল যোগদান সম্ভাবনা নিয়ে ইতিমধ্যে ক্ষিপ্ত প্রাক্তন বনগাঁর সাংসদ মমতা বালা ঠাকুর। তিনি মনে করেন, “শান্তনু ঠাকুর যেভাবে মতুয়াদের উপরে অত্যাচার করেছে, তারপর দলে আসলে দলের ক্ষতি হবে।” এই নিয়ে অবশ্য ‘স্পিক টি নট’ বিজেপির বারাসাত জেলার সহ-সভাপতি দেবদাস মন্ডল।