Bengal Flood: জল থই থই এলাকা, কোদাল হাতে নিজেই ড্রেন সাফে উদ্যোগী বিজেপি বিধায়ক!

Bengal Flood: দুর্গতদের ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Bengal Flood: জল থই থই এলাকা, কোদাল হাতে নিজেই ড্রেন সাফে উদ্যোগী বিজেপি বিধায়ক!
কোদাল চালাচ্ছেন বিধায়ক, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 05, 2021 | 9:20 PM

পশ্চিমবঙ্গ:  নিম্নচাপের জেরে বানভাসি (Flood) রাজ্য।  প্লাবন পরিস্থিতিকে  কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য় তরজা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় জানিয়েছেন এই বন্যা ‘ম্য়ান মেড’। অন্যদিকে, দুর্গতদের ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এলাকার পর এলাকা যখন বানভাসি তখন রাস্তায় নামলেন খোদ বিধায়ক। বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে নিজেই হাতে তুলে নিলেন কোদাল।

বনগাঁ: 

বনগাঁ পৌরসভার একাধিক ১১,৮,৬,৭ ওয়ার্ডে বুধবারের ভারী বর্ষণের ফলে জলামগ্ন হয়ে পড়েছে । জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করতে গিয়ে নিজে হতে কোদাল তুলে নিয়ে ড্রেন পরিষ্কার করে উদ্যোগী বিজিপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া। পায়ে হেঁটে জলে ডোবা এলাকা পরিদর্শনও করেন বিধায়ক। তাঁর অভিযোগ,  পরিকল্পনা ছাড়া কাজ করার ফলেই বনগাঁ পৌরসভা এলাকার এই দুর্দশা। জলমগ্ন পরিস্থিতির জন্য রাজ্য  সরকারের বিরুদ্ধেই তোপ দাগেন বিজেপি বিধায়ক। পাল্টা, বনগাঁ পৌর প্রশাসক গোপাল শেঠ বলেন,  “বিজেপি বিধায়ক ছবি তোলার জন্যে ভাওতাবাজি করছে । জল নামাতে  উদ্যোগ নিয়েছি আমরা । বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাম্প বসানো হয়েছে। খুব দ্রুত  এই সমস্যার সমাধান হবে।”

সোনারপুর:

অল্পবৃষ্টি হোক বা অতিবৃষ্টি, বর্ষায় বদলায় না সোনারপুর মিশনপল্লির চালচিত্র। গত কয়েকদিন টানা বৃ্ষ্টির জেরে জল দাঁড়িয়েছে কোমরের কাছাকাছি। মিলছে না পানীয় জল। বাড়ি-বাড়ির মিটার বক্সের কাছেও জল জমেছে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ। সব মিলিয়ে আতঙ্কিত বাসিন্দারা। স্থানীয়দের অভিযোগ, মিশনপল্লির এই ছবি নতুন কিছু নয়। ফি বছর জলমগ্ন হয়ে যায় এলাকা। প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও কোনও লাভ হয়নি। তাঁদের আরও অভিযোগ, জমা জলের জন্যই ব্যাহত চিকিত্‍সা পরিষেবাও। জরুরি পরিস্থিতিতে দেখা মিলবে না এম্বুলেন্সের। অগত্যা প্রতিবাদ করতে শুক্রবার পথ অবরোধ করতে চলেছেন এলাকাবাসী। ঘটনায়, রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার প্রশাসনিক মণ্ডলের সদস্য নজরুল আলি মণ্ডল বলেন, “এত বৃষ্টি হবে ভাবিনি। তবে পৌরসভার পক্ষ থেকে এলাকার সমস্ত পাম্প চালানো হচ্ছে। জল ছাড়া হচ্ছে। আশা করছি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে।”

গোয়ালতোড়:

গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির জেরে পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড় থানার জগারডাঙ্গা গ্রামে দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয় এক দম্পতির । বুধবার রাত্রে ভারী বৃষ্টির সময় বাড়িতেই ঘুমোচ্ছিল দুলাল পাল ও স্ত্রী সাধনা পাল। ভোর তিনটের সময় দেওয়াল ভেঙে পড়ে তাঁদের ওপর। দেওয়াল ভাঙার শব্দ শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। দেখা যায় দেওয়ালের তলায় চাপা পড়ে রয়েছেন দম্পতি। ভাঙা দেওয়ালের চাঁই সরিয়ে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। খবর দেওয়া হয় গোয়ালতোড় থানায়। খবর পেয়ে এসে পৌঁছয় পুলিশ। মৃতদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

বার্ণপুর:

বিগত ১৩ দিন ধরে মিলছে না পানীয় জল, বিদ্যুত্‍ পরিষেবা। বন্যা পরিস্থিতির জেরে ব্যাহত  জনজীবন। পানীয় জল ও বিদ্যুত্‍ পরিষেবা চেয়ে বার্ণপুরের ওয়াগন কলোনিতে আগেই ধর্নায় বসেছিলেন স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার থেকে আমরণ অনশন শুরু করলেন এলাকাবাসী। কলোনির বাসিন্দাদের সঙ্গে আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন কাউন্সিলর তৃণমূল নেতা মিলন মণ্ডল প্রথম থেকেই ছিলেন। এ বার আন্দোলনকারী আবাসিকদের মঞ্চে এলেন মন্ত্রী মলয় ঘটকের ভাই, পুরবোর্ডের সদস্য তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অভিজিত্‍ ঘটক। তাঁর অভিযোগ, আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক হওয়ার পর অগ্নিমিত্রা পালকে  পাওয়া যায়নি। অথচ ভোটের আগে  জল ও বিদ্যুতের সুষ্ঠু পরিষেবা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি।

খানাকুল:

প্রায় জলের তলায় গোটা খানাকুল। ২৮ টি উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যে ২৬ টি জলে নিমজ্জিত। স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে চিন্তিত স্বাস্থ্যকর্মীরা। জলযন্ত্রণায় সর্বাধিক সমস্যায় প্রসূতি ও মায়েরা। অভাব পর্যাপ্ত নৌকারও। এই পরিস্থিতিতে বিএমওএইচের স্ব-উদ্যোগে নৌকার ব্যবস্থা করে প্রত্য়ন্ত গ্রাম থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে প্রসূতিদের। এগিয়ে এসেছেন শাসক দলের জনপ্রতিনিধিরাও। রামচন্দ্রপুরের এক প্রসূতিকে উদ্ধার করে নিজ উদ্যোগে স্বাস্থ্য়কেন্দ্রে নিয়ে আসেন তৃণমূল নেতা ও জেলা পরিষদের সদস্য মুন্সি নজবুল করিম।

দুর্গাপুর ব্যারেজ:

বন্ধ হয়নি জল ছাড়া। দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে বুধবারের মতোই বৃহস্পতিবারও ৬০ হাজার ৮৭৫ কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে। বিকেলের দিকে জলের পরিমাণ কম হলেও বন্ধ হয়নি জলছাড়ার কাজ। এদিকে, দুর্গাপুর ব্যারেজের জলধারণ ক্ষমতা কম। নেই রিজার্ভারও। এই পরিস্থিতিতে এত পরিমাণ জল ছাড়া আশেপাশের জেলাগুলিতে প্লাবন পরিস্থিতি তৈরি করেছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের। আরও পড়ুন: যৌনপল্লিতে গিজ গিজ করছে নাবালিকারা! গভীর রাতে গোপন অভিযানে গ্রেফতার একাধিক