Bongaon BJP: শান্তনুর লড়াই থামাতে কৌশলী বিজেপি, বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের করা হল পুরভোটের কনভেনার
Shantanu Thakur: প্রশ্ন হচ্ছে শান্তনু ঠাকুরের পাল্টা বিজেপির এই কৌশলী চাল কতটা কার্যকরী? উত্তর হচ্ছে, তার ফল মিলেছে রবিবারই।
উত্তর ২৪ পরগনা: বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের কৌশলের পাল্টা চাল বিজেপির। বিক্ষুব্ধ বিজেপি বিধায়কদের এবার পুর নির্বাচনের কনভেনার অর্থাৎ আহ্বায়ক ঘোষণা করল পদ্ম শিবির। দলীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, যে সব বিধায়করা শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে মতুয়া আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিলেন, তাঁদের এবার কনভেনারের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, বিক্ষুূব্ধদের সামাল দিতে এবার কৌশলী পদক্ষেপ করল বিজেপি। সূত্র মারফত খবর, কনভেনারদের তাঁদের দায়িত্ব ইতিমধ্যেই বুঝিয়ে দিতে শুরু করেছে দল।
উল্লেখ্য, বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় ৬ জন বিধায়ক রয়েছেন। পাঁচটি পৌরসভার পাঁচ জন কনভেনার হলেন বিক্ষুব্ধ পাঁচ বিধায়ক। তাঁরা হলেন, গাইঘাটায় বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া, হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার, কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায় এবং রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী। তবে বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়ক স্বপন মজুমদারের এলাকাতে কোনও পৌরসভা নেই। আর স্বপন মজুমদার প্রথম থেকেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি মতুয়া হলেও শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে নেই। বাকি পাঁচ বিধায়ককেই কনভেনার হিসাবে ঘোষণা করেছে বিজেপি। বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাঁদের দায়িত্বও।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুব্রত ঠাকুরকে এখনও তাঁর পৌরসভা অর্থাৎ গোবরডাঙা পৌরসভার কার্যভার গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। সূত্রের খবর, সুব্রত ঠাকুর দলকে জানিয়েছেন. যতক্ষণ পর্যন্ত না রামপদ দাসকে সভাপতির পদ থেকে সরানো হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি পৌরসভার কোনও দায়িত্ব নেবেন না। কিন্তু বাকি ৪ বিধায়ক দলকে সহযোগিতা করছেন বলেই দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। বনগাঁ লোকসভার সাংগঠনিক জেলার ইনচার্জ প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, সুব্রত ঠাকুর বাদ দিয়ে বাকি বিধায়করা তাঁদের দায়িত্ব বুঝে নিচ্ছেন পৌরসভা ভোটের আগে। জানা যাচ্ছে, প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে দায়িত্ব নিয়ে প্রত্যেক বিধায়কের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের ক্ষোভ, অভাব অভিযোগ মেটানোর চেষ্টা করেছেন।
তবে প্রশ্ন হচ্ছে শান্তনু ঠাকুরের পাল্টা বিজেপির এই কৌশলী চাল কতটা কার্যকরী? উত্তর হচ্ছে, তার ফল মিলেছে রবিবারই। রবিবারই শান্তনু ঠাকুর যে বনভোজনের আয়োজন করেছিলেন, তাতে সুব্রত ঠাকুর ছাড়া আর কোনও বিজেপি বিধায়ককে দেখা যায়নি। তবে শান্তনু ঠাকুরের আয়োজিত আগের পিকনিকেই উপস্থিত ছিলেন বিজেপির প্রথম সারির বহু পুরনো নেতারা। ছিলেন সায়ন্তন বসু, রিতেশ তিওয়ারি, জয়প্রকাশ মজুমদাররা। ছিলেন বাঁকুড়ার পাঁচ বিক্ষুব্ধ বিধায়কও। ছিলেন মুকুটমনি অধিকারী, অম্বিকা রায়ের মতো বনগাঁ বিক্ষুব্ধ বিধায়করাও।
শনিবার রাতেই পাঁচ বিধায়ক জানতে পেরেছেন, তাঁদেরকে সামনে রেখেই পৌর নির্বাচন হবে। তাঁদেরকে পৌর কনভেনার করে দেওয়া হয়েছে, তারপরের দিন অর্থাৎ রবিবার তাঁরা আর শান্তনু ঠাকুরের পিকনিকে সামিল হননি। গোবরডাঙায় শান্তনু ঠাকুরের পিকনিকে বিধায়কদের অনুপস্থিতি সেদিক থেকে অনেকটা বেশি তাৎপর্যপূর্ণ।
বিজেপি নেতৃত্ব জানাচ্ছেন. বিধায়কদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন দলের সঙ্গেই রয়েছেন। দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, তাঁরা তাই পালন করবেন। শান্তনু ঠাকুর যে কৌশলে মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রতিনিধিত্ব করতে উদ্যত হয়েছিলেন, তা কিছুটা থিতিয়ে পড়ল বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন: ইউনিয়ন রুমে বিজেপির পতাকা খুলে দলীয় পতাকা লাগাল তৃণমূল, আলিপুর চিড়িয়াখানায় তুমুল উত্তেজনা