Durga Puja 2023: বিসর্জনের পরও সাদা থান পরে হাঁটেন দেবী, সুন্দরবনের দে বাড়ির পুজোর রোমহর্ষক কাহিনি জানুন
Durga Puja 2023: নদীতে নয় এই বাড়ির পুকুরেই বিসর্জিত হন এই দেবী দুর্গা। আগে তাঁকে ঠাকুর দালান থেকে পুকুরঘাট অবধি নিয়ে যেতেন পার্শ্ববর্তী গ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। আজ সেই প্রথায় একটু ব্যাঘাত ঘটেছে। কারণ কর্মসূত্রে আদিবাসীরা এই গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছেন।
বসিরহাট: কখনও উমা, কখনও মহামায়া, কখনও গৌরী, কখনও পার্বতী আবার কখনও কালী-চণ্ডী! এক এক সময় দেবী দুর্গা অবতীর্ণ হয়েছেন বিভিন্ন রূপ নিয়ে। তবে সুন্দরবনের ভেবিয়া গ্রামের মানুষ একটু অন্যভাবে দেখে থাকেন দেবীকে। এখানে তিনি নাকি অবতীর্ণ হন এক অলৌকিক রূপে।
বসিরহাটের সুন্দরবনের হাসনাবাদ ব্লকের ভেবিয়া গ্রামের দে বাড়ির পুজো। এবার ১১৬ তম বর্ষে পদার্পণ করল। কথিত আছে ১৩১৪ বঙ্গাব্দে ভেবিয়ার তৎকালীন জমিদার দীননাথ দে স্বপ্নাদেশ পেয়ে মায়ের পুজো শুরু করেন। তারপর থেকে একে একে বহু বছর কেটে গিয়েছে। পেরিয়েছে শতাব্দী। পুজোর বয়স অনেক। অথচ এখনো অমলিন সেখানকার ঐতিহ্য।
প্রথা অনুযায়ী মহালয়ার পরদিন প্রতিপদ থেকে দে বাড়ির চণ্ডী ঘরে ঘট স্থাপনের মধ্য দিয়ে পুজো শুরু হয়ে যায়। দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, চতুর্থী ও পঞ্চমী একইভাবে পুজো হওয়ার পর ষষ্ঠীতে বাড়ির বেল গাছের নিচে বোধনতলায় মায়ের বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মৃন্ময়ীর আরাধনা। অষ্টমীতে চলে মিষ্টি ভোগ বিতরণ। পুজোর সময় দে বাড়ির যে সমস্ত সদস্য যারা দেশ-বিদেশে থাকেন তারা বাড়িতে ফেরেন। এবং গ্রামবাসীদের সঙ্গে পুজোর আনন্দে মেতে ওঠেন।
নদীতে নয় এই বাড়ির পুকুরেই বিসর্জিত হন এই দেবী দুর্গা। আগে তাঁকে ঠাকুর দালান থেকে পুকুরঘাট অবধি নিয়ে যেতেন পার্শ্ববর্তী গ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। আজ সেই প্রথায় একটু ব্যাঘাত ঘটেছে। কারণ কর্মসূত্রে আদিবাসীরা এই গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছেন।
তবে কিছু আদিবাসী মানুষ আজও আসেন বিসর্জনের দিন। তাঁরাই মাকে ট্রলিতে তোলেন। তারপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঘাটে। ট্রলিতে করে অভিনব সেই যাত্রা দেখতে আশপাশের গ্রামের প্রচুর মানুষ ভিড় জমান দে বাড়িতে। আর বিসর্জনের পর্ব মিটতেই রাত হলেই নাকি গ্রামের মানুষ দেখতে পান এক অদ্ভুত অবতার। ভেবিয়া গ্রামের মানুষ দে বাড়ির ওই পুকুরেই মাকে অন্যরূপে সাদা থান পরে জলের উপর দিয়ে হেঁটে বেড়াতে দেখেন।
তাঁদের ধারণা মা যেন তাঁদের ছেড়ে যেতে চান না। তাই বিসর্জনের পরেও তিনি গ্রামের মানুষকে দেখা দেন। সেই বিশ্বাস যেন আজও স্বহমহিমায় বিরাজ করছে সুন্দরবনের এই গ্রামে।