Cyclone Mokha: আম্ফান-ইয়াশ থেকে শিক্ষা নিয়ে মোখায় সতর্ক প্রশাসন, সুন্দরবনে মাঠে নামল NDRF
Cyclone Mokha: সুন্দরবনের কালিন্দী, রায়মঙ্গল ও ইছামতি নদীতে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের মহড়া চলছে। সাধারণ মানুষকে সতর্ক করতে স্থলপথে চলছে মাইকিং। বসিরহাটের সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি ১ ও ২ নম্বর ব্লক, হাসনাবাদ, হাড়োয়া ও মিনাখাঁ এই ছটি ব্লকে সকাল থেকে নদীবাঁধগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
হিঙ্গলগঞ্জ: বাংলায় সরাসরি কোনও প্রভাব না পড়লেও ঘূর্ণিঝড় মোখার (Cyclone Mocha) পরোক্ষ প্রভাব পড়বে বাংলার বুকে এমনটাই জানাচ্ছে হাওয়া অফিস (Weather Department)। শনিবার রয়েছে বৃষ্টির পূর্বাভাস (Rain Forecast)। এদিকে মোখাকে কোনও মওকা দিতে নারাজ প্রশাসন। বৃহস্পতিবার থেকেই রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে শুরু হয়েছে সতর্কতামূলক প্রচরাভিযান। দিঘাতে মাঠে নেমেছে এনডিআরএফ। এবার সুন্দরবনেও (Sundarban) নদী বাঁধ পরিদর্শন করল এনডিআরএফ। বসিরহাটের সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি ১ ও ২ নম্বর ব্লক, হাসনাবাদ, হাড়োয়া ও মিনাখাঁ এই ছটি ব্লকে সকাল থেকে নদীবাঁধ পরিদর্শন, সাইক্লোন সচেতনতার বার্তা ও নৌপথে মহড়া দিতে শুরু করল জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল। সুন্দরবনের নদীমাতৃক এলাকায় সেই ছবি দেখা গেল কালিন্দী, রায়মঙ্গল, ইচ্ছামতী ও বেতনি সহ বিভিন্ন নদীতে।
অন্যদিকে স্থলপথে মাইকিং করে ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে সাইক্লোন নিয়ে সতর্কবার্তা দিতে দেখা গেল জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে। ঝড়ের সময় কী করতে হবে, কোথায় যেতে হবে, নিজেরদের কিভাবে সুরক্ষিত রাখতে হবে সবটাই হাতে-কলমে তাদেরকে বুঝিয়ে দিলেন তাঁরা। ইতিমধ্যে হিঙ্গলগঞ্জের কালিতলা ও যোগেশগঞ্জ এবং সন্দেশখালি ২নং ব্লকের ধামাখালি সহ বিভিন্ন নদীর পয়েন্টে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যরা মাইকিং প্রচার শুরু করেছে।
সূত্রের খবর, মোখা সতর্কতায় বসিরহাটে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবেলা দলের দুটি দলকে নিযুক্ত করা হয়েছে। প্রত্যেক দলে ৩৩ জন করে সদস্য রয়েছে। এছাড়াও বসিরহাটের দশটি ব্লকে দশটি সিভিল ডিফেন্সের দল মোতায়েন করা হয়েছে। প্রত্যেক দলে ১২ জন করে সদস্য রয়েছে। পাশাপাশি তিন পৌরসভা বাদুড়িয়া, বসিরহাট ও টাকি সহ সীমান্ত থেকে সুন্দরবনের দশটি ব্লকে ১২০ জন ‘আপদা মিত্র’দের নিযুক্ত করা হয়েছে। কোনও বড়সড় বিপর্যয় আসলে মানুষকে দ্রুত যাতে উদ্ধার করে সুরক্ষিত জায়গায় পৌঁছে দেওয়া যায়, তার সবরকম ব্যবস্থা ইতিমধ্যে গ্রহণ করেছে বসিরহাটের প্রশাসন।
পাশাপাশি স্বাস্থ্য দপ্তর, রাজ্য বিদ্যুৎ দপ্তর ও সেচ দপ্তরের সমস্ত কর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের যোগেশগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নগেন্দ্রনাথ বৈদ্য বলেন, “মোকার খবর পাওয়া মাত্রই আমরা সমস্ত রকম প্রস্তুতি নিয়েছি। বিগত দিন থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা যথেষ্টই তৎপর। আশা করছি মোকা আমাদের এই এলাকায় কোন প্রভাব ফেলতে পারবে না।” আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী মোখা সেইভাবে বসিরহাটের উপকূলীয় এলাকায় প্রভাব না ফেললেও বিগত দিনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সাইক্লোনের নিরাপত্তার প্রস্তুতিতে কোনরকম থামতে রাখতে চাইছে না বসিরহাটের প্রশাসন। যদিও আম্ফান, বুলবুল ও ইয়াশের ভয়াবহ স্মৃতিকে মনে করে যথেষ্টই আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন সুন্দরবনের মানুষজন। এরইমধ্যে হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, শুক্রবার বিকালের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় মোখা দিক পরিবর্তন করে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে। চরম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ১৪ মে রবিবার দুপুরে মায়ানমারের সিতওয়ে (sittwe) বন্দরের কাছাকাছি এটি ল্যান্ডফল করবে। পশ্চিমবঙ্গে উপকূলে মৎস্যজীবীদের শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করেছে আবহাওয়া দফতর।