Newtown Case Update: ‘ভিডিয়ো তো থেকেই যাবে’, নীলছবি-কাণ্ডে ‘চাপসৃষ্টি’ পুলিশের, লজ্জায় আত্মহত্যার চেষ্টা যুবকের!
North 24 :Pargana: অভিযোগ করলে পাল্টা চাপে পড়বেন ওই যুবকই, এমনই বলেন পুলিশকর্তারা। লজ্জায় আত্মহত্যাও করার চেষ্টা করেন ওই যুবক।
কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনা: নিউটাউনের নীল ছবি কাণ্ডে মূল অভিযুক্তকে হাতেনাতে ধরে ফেলে বেলঘড়িয়া থানার হাতে তুলে দিয়েছিলেন অভিযোগকারী ও তাঁর পরিবার। কিন্তু, অভিযোগ, বেলঘড়িয়া থানা সামান্য জেনারেল ডায়রি করে অভিযুক্তকে ছেড়ে দেয়। বেলঘড়িয়া থানার তরফে বলা হয় নিউটাউন থানায় অভিযোগ জানাতে। সেই মতো নিউটাউন থানায় অভিযোগ জানাতে যান অভিযোগকারী। কিন্তু সেখানেও তাঁকে বলা হয়, ফিরে যেতে। বরং অভিযোগ করলে পাল্টা চাপে পড়বেন ওই যুবকই, এমনই বলেন পুলিশকর্তারা। এমনটাই অভিযোগ করেছেন অভিযোগকারীর আইনজীবী। এমনকী, লজ্জায় আত্মহত্যা করার চেষ্টাও করেন ওই অভিযোগকারী।
ঠিক কী অভিযোগ?
নীল ছবি কাণ্ডে ফেঁসে যাওয়া শোভাবাজারের বাসিন্দা ওই যুবকের অভিযোগ, থানা-পুলিশ করেও কোনও লাভ হয়নি। পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করছে না। সেই সুযোগই লাগাচ্ছে অপরাধী। ওই অভিযোগকারীর কথায়, “আমি প্রথমে বেলঘড়িয়া থানায় যাই। কিন্তু সেখান থেকে বলা হয় নিউটাউন থানায় অভিযোগ দায়ের করতে। নিউটাউন থানায় আসি। সেখানে পুলিশ আমায় বলে, ‘তোর কমপ্লেন নিয়ে কী হবে! উল্টে তুই তো কেস খাবি। ভিডিয়ো তো থেকেই যাবে।’ পুলিশের কথা শুনে আমি বাড়ি চলে আসি। লজ্জায় আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলাম।”
ওই যুবকের আরও সংযোজন, “আমাকে বারবার অভিযোগ ফিরিয়ে নিতে পুলিশ চাপ দিচ্ছে। বলছে, গোটা ব্যাপারটা চেপে যেতে। কিন্তু আমি কেন চেপে যাব? আমি ধরেই নিলাম না হয় ভুল করেছি, কিন্তু এই একই কাজ তো অন্য কারোর সঙ্গেও হতে পারে। আমি মূল অপরাধীর শাস্তি চাই।”
অভিযোগকারীর আইনজীবী জানিয়েছেন, “আমার মক্কেল সুইসাইড করতে গিয়েছিল। পুলিশ যেভাবে হেনস্থা করছে তা বলার নয়। যখন দেখা যাচ্ছে, এত বড় অপরাধ হয়েছে। একটা চক্র কাজ করছে। কী করে সেখানে কেবল একটা জিডি করে বিষয়টা ছেড়ে দেওয়া হল। মানুষ কোথায় রায় চাইবে তবে?”
ঠিক কী ঘটেছিল?
বছর তিরিশের ওই যুবক দাবি করেন, ওয়েব সিরিজে অভিনয়ে সুযোগ দেওয়ার নাম করে তাঁকে দিয়ে জোর করে নীল ছবি শুটিং করানো হয়েছে। নিগৃহীত যুবকের দাবি, প্রত্যেক ওয়েব সিরিজের শুটিংয়ের জন্য কুড়ি হাজার টাকা দেওয়া হবে বলে তাঁকে জানানো হয়েছিল। যুবকের বয়ান অনুযায়ী, তিনি সেখানে গেলে তাঁকে দিয়ে জোর করে পর্ন ভিডিয়ো শুট করানো হয়। এরপর ওই নিগৃহীত যুবককে জোর করে কাগজে সই করানো হয়।
ওই যুবকের বক্তব্য, “আমাকে বলা হয়েছিল, তোমাকে এক জায়গায় নিয়ে যাব। ২০ হাজার টাকা করে দেব। ওয়েব সিরিজে অভিনয় করার সুযোগ থাকবে। আমাকে ওখানে নিয়ে গিয়ে কিছু কাগজে সই করিয়েছিল। আমি যেহেতু পড়াশোনা জানি না। তাই সেভাবে বুঝতেও পারি নি। চারটে পাঁচটা কাগজে সই করানো হয়। ভিডিয়ো করানো হয় জোর করে। ফোনও কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। ২ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। বলল বাড়ি চলে যা।”
গোটা ঘটনা ধরা পড়তেই তদন্তে নামে পুলিশ। যদিও, এখনও মূল অভিযুক্ত পলাতক। তাঁর বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর করেও পাওয়া যায়নি। কোথায় গিয়েছেন অভিযুক্ত তা বলতে পারছেন না স্থানীয়রা। উল্টে এলাকাবাসীর দাবি, তাঁরা জানেনই না যে অভিযুক্ত পর্নোগ্রাফির শ্যুটিং করেন। সকলেই জানতেন তিনি ওয়েব সিরিজ ও সিনেমা করেন।
আপাতত পুলিশের জালে এক মধ্যস্থতাকারী যুবক। শুভজিত নামের ওই যুবকের দাবি, আগে থেকে সব জানিয়েই কাজে নেওয়া হয়েছিল। তাঁর কথায়, “আমি ওকে কোনও ওয়েব সিরিজের কথা বলিনি। আমি বলেছিলাম পুরোটাই এই সব হবে। পর্ন ভিডিয়ো শুট করানো হবে। টাকাটা পর্ন করবে বলেই দেওয়া হয়েছিল। পর্ন ভিডিয়ো শুট করার জন্যই ডাকা হয়েছিল।”
আরও পড়ুন: Dilip Ghosh on Alipur Zoo clash: ‘ওটাই সংস্কৃতি, সিপিএমের পার্টি অফিসও গায়ের জোরে দখল করেছে’