একুশের আগে মতুয়া-মন পেতে মমতার মুখেও ‘নাগরিকত্ব’
এবার আর শুধু ঠাকুরবাড়িতেই আটকে থাকতে চাইছেন না মমতা। সাধারণ মতুয়াভক্তদেরও সমান প্রাধান্য দিয়ে মতুয়া উন্নয়নে তৈরি বোর্ডের নতুন কমিটি গড়েছেন।
আরও পড়ুন: অভিমানী মমতা: সবকিছু করুন, আমাকে দু:খ দেবেন না
বাংলায় প্রায় ৩ কোটি মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন। নদিয়া, বনগাঁর পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের সীমান্ত জেলাগুলিতে প্রচুর মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। রাজ্য়ে ভোটব্যাঙ্কে এই সম্প্রদায়ের ভূমিকাও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। লোকসভা ভোটের আগে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এসেছিলেন মতুয়া সঙ্ঘের বড়মার সঙ্গে দেখা করতে। গত মাসেই বাগুইআটিতে মতুয়া পরিবারে মধ্যাহ্নভোজ সারেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে বড়মা ও তাঁর পরিবারের একাংশের হৃদ্য়তাও সর্বজনবিদিত।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, একুশের বিধানসভা ভোটের আগে বাংলায় নাগরিক শংসাপত্র প্রদান কেন্দ্রের কাছে যেমন গুরুত্বপূর্ণ। গোটা মতুয়া সম্প্রদায়কে ‘সঙ্গে আছি’ বোঝানোটাও তৃণমূলের জন্য বিশেষ দরকার। কারণ, ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়ির প্রতি মমতার পক্ষপাতের অভিযোগ রয়েছে মতুয়াদের অন্দরেই।
এই প্রেক্ষিতেই বুধবার বনগাঁর সভা থেকে মমতা বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন রাজ্যের সমস্ত মতুয়ার ভালমন্দে পাশে সরকার আছে। গোপালনগর হাইস্কুলের মাঠে জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,”রাজ্য ইতিমধ্যেই সব কলোনিগুলিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ রাজ্যে সব মতুয়াই নাগরিক।” মতুয়াদের উন্নয়নে রাজ্য সরকার কী কী করেছে তার খতিয়ানও এদিন তুলে ধরেন তিনি। গত লোকসভা ভোটে তৃণমূলকে খালি হাতে ফিরিয়েছিল বনগাঁ। এদিন মতুয়াদের মন পেতে হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথিতে সরকারি ছুটি ঘোষণার পরিকল্পনার কথাও শোনান তিনি।
আরও পড়ুন: ‘উন্নয়নে অনেক কিছু করেছি, আমি কথা দিয়ে কথা রাখি’, মতুয়াদের মাঝে মমতা
এবার আর শুধু ঠাকুরবাড়িতেই আটকে থাকতে চাইছেন না মমতা। সাধারণ মতুয়াভক্তদেরও সমান প্রাধান্য দিয়ে মতুয়া উন্নয়নে তৈরি বোর্ডের নতুন কমিটি গড়েছেন। ভক্ত মতুয়া মহাসঙ্ঘের দাবি মেনেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মতুয়া গড় বনগাঁয় এদিন তৃণমূলের মঞ্চে হাজির ছিলেন হরি গুরুচাঁদ ভক্ত মতুয়া মহাসংঘের নেতা নরোত্তম বিশ্বাস। এই নরোত্তম বিশ্বাসই গত লোকসভা নির্বাচনে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরের অন্যতম প্রচারক। এই প্রথম ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়ির বাইরে কোনও মতুয়া সদস্যকে এতটা প্রাধান্য দিতে দেখা গেল তৃণমূল নেত্রীকে। সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের পাশাপাশি ভক্তদের সংগঠনকেও সমান গুরুত্ব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।