Bengal Tiger: আট ঘণ্টা ধরে চলল বাঘ বন্দির খেলা! অবশেষে জালে দক্ষিণরায়
Sandeshkhali: সুন্দরবনের বাঘ আড়বেশি জঙ্গল থেকে বেরিয়ে রায়মঙ্গল নদী সাঁতরে ঢুকে পড়ে মণিপুরের মিঠাখালি গ্রামে।
উত্তর ২৪ পরগনা: আট ঘণ্টার লড়াই শেষে ফাঁদে পা দিল সন্দেশখালির বাঘ। বনদফতরের বসিরহাট রেঞ্জের আধিকারিকরা রবিবার তাকে ধরে। রায়মঙ্গল নদী পেরিয়ে সন্দেশখালি মণিপুর গ্রামপঞ্চায়েতের মিঠাখালি গ্রামে সে ঢুকে পড়ে। দক্ষিণরায়ের হামলায় জখম হন এক কৃষক। তাঁকে ভর্তি করা হয় সন্দেশখালি গ্রামীণ হাসপাতালে। এরপরই বাঘটিকে জালবন্দি করতে সমস্ত রকম চেষ্টা শুরু করে বনদফতরের কর্মীরা। রবিবার সকাল থেকে শুরু হয় বাঘ ধরার চেষ্টা। বসিরহাট রেঞ্জের বাগনা বিটের বনাধিকারিকরা আসেন এবং স্থানীয় গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় দীর্ঘক্ষণ ধরে জাল পাতা হয়। সেই বেড়াজাল পাতার সময়ও একবার বাঘ আক্রমণের চেষ্টা করে বলে জানান স্থানীয়রা। যদিও সেই সময় বাঁশ, লাঠি উঁচিয়ে পাল্টা প্রতিরোধ করেন এলাকার লোকজন। বাঘটি জঙ্গলে ঢুকে যায়। কম বেশি তিনবার বাঘটিকে ঘুমপাড়ানি ওষুধ দিয়ে গুলি করা হয়। সেই ঘুমপাড়ানি গুলি খেয়েই নিস্তেজ হতে থাকে রয়াল বেঙ্গল টাইগার। পরিস্থিতি অনুকূল বুঝেই তারপর গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় কাদায় মাখামাখি বাঘটিকে উদ্ধার করে। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বাগনা বিটে। সেখানেই প্রাথমিক যে চিকিৎসা পরিষেবা দরকার, তা দেওয়া হবে দক্ষিণরায়কে। এরপরই তাকে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বনকর্মীদের।
সুন্দরবনের বাঘ আড়বেশি জঙ্গল থেকে বেরিয়ে রায়মঙ্গল নদী সাঁতরে ঢুকে পড়ে মণিপুরের মিঠাখালি গ্রামে। রবিবার সকাল থেকে এই বাঘ নিয়ে হুলুস্থুল পড়ে যায় এলাকায়। এরইমধ্যে শোনা যায় নদীর চরে কাজ করছিলেন ছয়রাপ কারিগর নামে এক কৃষক। তাঁর উপর হামলে পড়ে বাঘ। গুরুতর জখম হন তিনি। প্রথমে সন্দেশখালি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ছয়রাপকে। পরে সেখান থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। এদিকে লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে।
সুন্দরবনের বিভিন্ন গ্রামে গত এক বছরে বারবার বাঘ ঢুকেছে। কিছুদিন আগেই কুলতলিতে বাঘ বন্দির ‘খেলা’য় নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় হয় বনকর্মীদের। ছ’ রাত আতঙ্কে চোখের পাতা এক করতে পারেনি কুলতলির মানুষ। এরইমধ্যে একাধিক গ্রামে বাঘের পায়ের ছাপ দেখার খবর ঘিরেও হইচই পড়ে যায়। গোসাবাতেও বাঘ ঢুকেছিল ক’দিন আগেই।
কিন্তু বার বার কেন লোকালয়ে বাঘ চলে আসছে সেটা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষ যেমন জীবিকার স্বার্থে জঙ্গলে যাচ্ছে, বাঘও পর্যাপ্ত খাবার না পেয়ে বাইরে বেরিয়ে আসছে। এছাড়া বারবার সুন্দরবনের উপর দিয়ে যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ গিয়েছে তাও বাঘকে লোকালয়মুখী করার একটা কারণ। ইয়াসে বাঁধ ভেঙে জঙ্গলের সমস্ত মিষ্টি জলের পিট এখন নোনা। তেষ্টা মেটাতে তাই গ্রামে ঢুকতে হচ্ছে দক্ষিণরায়কে। একইসঙ্গে মানুষের উপর বাঘের আক্রমণের যে অভিযোগ তা নিয়েও বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের মত, মানুষও বাঘের ডেরায় পা বাড়াচ্ছে। কাঠ কাটতে বনে যাচ্ছে। মাছ ধরছে, কাঁকড়া শিকারে যাচ্ছে বাঘের ‘বাড়ি’তে। ফলে উভয়েরই অস্তিত্বের লড়াইয়ে বারবার বাধছে বিবাদ।
আরও পড়ুন: AMTA Student Death: পুলিশের কোনও গাফিলতি? তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখার আশ্বাস পুলিশ সুপারের