ধোপে টিকল না তৃণমূল নেতার ‘দাদাগিরি’, গর্ভবতী মহিলাদের টিকা শিবিরে গোলমাল পাকিয়ে গ্রেফতার
Duttapukur: গত বৃহস্পতিবার দত্তপুকুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গর্ভবতী মহিলা ও ০-১২ বছর বয়সী শিশুদের মায়েদের টিকাকরণ কর্মসূচি চলছিল।
উত্তর ২৪ পরগনা: অভিযোগ ছিল মারাত্মক। ভ্যাকসিন সেন্টারে গিয়ে ‘দাদাগিরি’। তার জেরেই বন্ধ করে দিতে হয়েছিল গর্ভবতীদের টিকাকরণ। টিকা না পেয়ে ঘরেও ফিরতে হয়েছিল ১২ বছরের অনুর্ধ্ব শিশুর মায়েদের একাংশকে। অবশেষে এই ঘটনায় গ্রেফতার হলেন মূল অভিযুক্ত রাজু দত্ত। যাঁর পরিচয় স্থানীয় গ্রামপঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের স্বামী। ধৃত রাজুকে শনিবারই বারাসত আদালতে তোলা হবে।
গত বৃহস্পতিবার দত্তপুকুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গর্ভবতী মহিলা ও ০-১২ বছর বয়সী শিশুদের মায়েদের টিকাকরণ কর্মসূচি চলছিল। অভিযোগ, চড়া রোদ, গরমের চিড়বিড়ানি উপেক্ষা করেও গর্ভের সন্তান কিংবা ঘরের ছোট্ট শিশুটির সুরক্ষার জন্য যখন মহিলারা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে, তখন হঠাৎই নিজের সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে সেখানে হাজির হন রাজু দত্ত। হাতে একটি তালিকা ধরা। সেখানে বাছাই করা হয়েছে ১০টি নাম।
অভিযোগ, রাজু দত্ত সেখানে রীতিমতো হুমকির সুরে বলেন, তাঁর বেছে দেওয়া তালিকা অনুযায়ী টিকাকরণ হবে। আগে ওই ১০ জন করোনার প্রতিষেধক নেবেন, তার পর অন্য কেউ। স্বাস্থ্য কর্মীরা পাল্টা দাবি করেন, স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশ মেনে বাড়ি বাড়ি ঘুরে তাঁরা যে মায়েদের নাম সংগ্রহ করেছেন, একমাত্র তাদেরই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
অভিযোগ, স্বাস্থ্যকর্মীরা রুখে দাঁড়াতেই সুর চড়ান রাজু দত্ত। নিজেকে তৃণমূল গ্রামপঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী পরিচয় দিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন তাঁদের মারার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ ওঠে। এমনকী এক স্বাস্থ্যকর্মীকে চুলের মুঠি ধরে দেওয়ালে মাথা ঠুকে দেওয়ারও হুমকি দেন ওই তৃণমূল নেতা বলে অভিযোগ ওঠে। রাজু দাবি করেন, ১০০ জন টিকাপ্রাপকের মধ্যে তাঁর
এই ঘটনায় স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করতে অস্বীকার করেন। ফলে ভ্যাকসিন দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। অবস্থা বেগতিক বুঝে দত্তপুকুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পুরো ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয় ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে। ঘটনার প্রতিবাদ করে তিনি জানান প্রশাসনের সব স্তরের আধিকারিককে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এই ঘটনায় আমডাঙার তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক রফিকুর রহমান বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে টিকা নিয়ে কোনও রাজনীতি করা চলবে না। যদি এই ধরনের কাজ যদি কেউ করে থাকে তবে তা অন্যায়। আমি গোটা বিষয়টা খতিয়ে দেখব।” বিজেপি নেতা অনন্তদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটা তৃণমূলের কাছে নতুন কোনও বিষয় নয়। গোটা রাজ্য জুড়ে তৃণমূল কংগ্রেস কী ধরনের কাণ্ডকারখানা ঘটিয়ে চলেছে তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা এই ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করছি।” অবশেষে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হল। আরও পড়ুন: ‘রাতে মা থাকে না, তখনই এসব করে! ও আমার সৎ বাবা বলেই হয়ত…’ বিস্ফোরক ষষ্ঠের ছাত্রী