টিভি নাইন বাংলার খবরের জের! পানিহাটি টিকাকাণ্ডে পলাতক চিকিত্সকের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের
Panihati Vaccine Case: খড়দহ পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত চিকিত্সক পলাতক। তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ। এলাকার ত্রিসীমানায় নেই ড. বিপ্লব রুদ্র। চিকিত্সকের এইভাবে পালিয়ে যাওয়ায় তথ্য প্রমাণ লোপাটের আশঙ্কাও করছেন গোয়েন্দারা।
উত্তর ২৪ পরগনা: টিভি নাইন বাংলার খবরের (TV9 Impact Story) জের। পানিহাটির ভ্যাকসিন দুর্নীতি-কাণ্ডে (Panihati Vaccine Case) অভিযুক্ত চিকিত্সক বিপ্লব রুদ্রের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের খড়দহ পুলিশের। পলাতক অভিযুক্ত পুরচিকিত্সক বিপ্লব রুদ্র। স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজুর পরেই অভিযুক্তের খোঁজে পুলিশ। মধ্যমগ্রাম, কলকাতা, দমদম-সহ একাধিক এলাকায় তাঁর খোঁজ চলছে।
খড়দহ পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত চিকিত্সক পলাতক। তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ। এলাকার ত্রিসীমানায় নেই ড. বিপ্লব রুদ্র। চিকিত্সকের এইভাবে পালিয়ে যাওয়ায় তথ্য প্রমাণ লোপাটের আশঙ্কাও করছেন গোয়েন্দারা। ইতিমধ্যেই, পানিহাটি টিকাকাণ্ডে টিকাপ্রাপক, টিকার জোগানদার তথা মধ্যস্থতাকারী-সহ একাধিকের গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। সেই জবানবন্দি থেকেই স্পষ্ট, পানিহাটির টিকা দুর্নীতিচক্রে অত্যন্ত বড় ভূমিকা পালন করছেন অভিযুক্ত চিকিত্সক বিপ্লব রুদ্র। শুধু তাই নয়, এই চক্রের নেপথ্যে কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব এমনকী রাজনৈতিক নেতৃত্বের হাত থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা।
পানিহাটি পৌরসভা সূত্রে খবর, পুরসভার তরফে অভিযুক্ত চিকিত্সকের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পৌরসভার প্রসাশক মলয় রায় জানান, চিকিৎসকের জন্য পৌরসভার নাম খারাপ হয়েছে। তাই ওইচিকিত্সকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। আইন মেনেই পদক্ষেপ করা হবে। ইতিমধ্যেই, চিকিত্সক বিপ্লব রুদ্রকে (Biplab Rudra) পুরসভার মেডিক্যাল অফিসার পদ থেকে অপসারিত করা হয়েছে।
পানিহাটি টিকা চক্রের পর্দাফাঁস হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। অভিযুক্ত পুর চিকিত্সক বিপ্লব রুদ্রকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় খড়দহ পুলিশ। কিন্তু পরেরদিন রাতেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। জেলাশাসক নিজেই জানিয়েছিলেন, পানিহাটি ভ্যাকসিন কাণ্ডে অভিযুক্ত চিকিৎসক নাকি থানায় গিয়ে নিজের প্যাডে লিখিত বয়ান দিয়েছেন। অভিযুক্ত লিখিত জানিয়েছেন, তাঁর চেম্বারে কোনও টিকাই দেওয়া হয়নি। তখন তাঁকে পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে। এরপরেই পলাতক চিকিত্সক বিপ্লব রুদ্র। প্রশ্ন উঠছে পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও। কেন এইভাবে চিকিত্সককে কেবল প্য়াডে লিখিয়েই ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। পুলিশের গা-ছাড়া মনোভাবের জেরেই ফেরার অভিযুক্ত, এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
কসবার দেবাঞ্জন-কাণ্ডের পর টিকা কেলেঙ্কারির হদিশ মেলে পানিহাটিতে। ঠিক কী হয়েছিল? প্রদীপ মজুমদার নামে মধ্যমগ্রামের এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, কিছু মাস আগে তাঁরই প্রতিবেশী অমিত বিশ্বাস জানান, ৩০০ টাকা দিলেই টিকা পাওয়া যাবে, লাইনে না দাঁড়িয়েই। ঝঞ্ঝাট এড়াতে ওই প্রতিবেশীর কথাতেই রাজি হয়ে যান প্রদীপবাবু। অভিযোগ, টিকা নেওয়ার পরেই নিয়মমতো শংসাপত্র চান তিনি। অভিযোগ, বলা হয় রসিদ নেই। এমনকী টিকার দাম ৩০০ টাকা দেওয়ার জন্য যে রসিদ তাও দিতে অস্বীকার করেন টিকাদাতারা। প্রদীপবাবু জোরাজুরি করলে বলা হয় তাঁর অন্য একটি যোগাযোগ নম্বর দিতে এবং শংসাপত্রের জন্য তিনদিন অপেক্ষা করতে হবে।
তিনদিন পর হাতে শংসাপত্র পান ওই টিকাপ্রাপক। অভিযোগ, শংসাপত্রটি পুরসভার প্যাডে ছাপানো। তাতে সই রয়েছে, স্ট্যাম্পও রয়েছে! শুধু তাই নয়, প্রদীপবাবু বিকল্প যোগাযোগের নম্বর হিসেবে নিজের স্ত্রীর নম্বর দিয়েছিলেন। সেই নম্বরে একটি মেসেজ আসে। যেখানে বলা হয়, গত ১৯ এপ্রিল প্রথম ডোজ ও ১১ অগস্ট দ্বিতীয় ডোজ পেয়ে গিয়েছেন প্রদীপবাবু। অথচ, গত ১৭জুন প্রথম ডোজই নিয়েছিলেন প্রদীপ। TV9 -এর জেরে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই নড়ে চড়ে বসে প্রশাসন। আরও পড়ুন: রাস্তায় আস্ত দু’টো বাড়ি ঢুকে যাবে! সামনেই ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ খুঁটি, আতঙ্কে রানিগঞ্জবাসী