Partha Bhowmick: গাড়ি নেই, স্ত্রীকে ঋণ দিয়েছেন ৬৮ লক্ষ টাকা, হলফনামায় আর কী জানিয়েছেন পার্থ ভৌমিক?
Partha Bhowmick: হলফনামায় পার্থ ভৌমিক জানিয়েছেন, তাঁর বা তাঁর স্ত্রীর কোনও গাড়ি নেই। কোনও গয়নাও নেই তাঁদের দু'জনের। সবমিলিয়ে পার্থ ভৌমিকের অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ১ কোটি ৬৫ লক্ষ ৮৭ হাজার ১৫২ টাকা ৪৮ পয়সা। আর তাঁর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৭৮ লক্ষ ১৬ হাজার ৮১০ টাকা ৮৮ পয়সা।
ব্যারাকপুর: তিনি রাজ্যের মন্ত্রী। নৈহাটির বিধায়ক। অভিনয়ও করেন। এবার ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির গাঁট পেরোতে সেই পার্থ ভৌমিকের উপরই ভরসা করেছে তৃণমূল। ভোটের ফল কী হবে, তা জানা যাবে ৪ জুন। তার আগে জেনে নেওয়া যাক, নির্বাচনী হলফনামায় নিজের সম্পর্কে কী জানিয়েছেন ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী। তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ কত? কতদূরই বা পড়াশোনা করেছেন?
বছর ষাটের পার্থ ভৌমিক ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষ পর্যন্ত আয়ের হিসেব জানিয়েছেন হলফনামায়। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে তাঁর আয় ছিল ১৩ লক্ষ ১৬ হাজার ১০০ টাকা। তার আগের অর্থবর্ষ অর্থাৎ ২০২১-২২ এ তাঁর আয় ছিল ১০ লক্ষ ৬০ হাজার ১০ টাকা। হলফনামায় পার্থ ভৌমিক জানিয়েছেন, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে আয় করেছিলেন ৮ লক্ষ ২ হাজার ৯৭০ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে তাঁর আয় ছিল ৯ লক্ষ ৭৩ হাজার ৬২০ টাকা। আর ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে ৯ লক্ষ ৩৩ হাজার ৩৩০ টাকা আয় করেছিলেন তিনি।
হলফনামায় স্ত্রী নূতন ভৌমিকের আয়ের হিসেব জানিয়েছেন পার্থ ভৌমিক। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে পার্থর স্ত্রীর আয় ছিল ২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৩৬০ টাকা। তার আগের অর্থবর্ষে অর্থাৎ ২০২১-২২ এ নূতন ভৌমিকের আয় ছিল ২ লক্ষ ৬০ হাজার ৪৯০ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে তাঁর আয় ছিল ৫ লক্ষ ২ হাজার ১৫০ টাকা। রাজ্যের মন্ত্রীর স্ত্রী ৬ লক্ষ ১২ হাজার ৭৫০ টাকা আয় করেছিলেন ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে। আর ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে নূতন ভৌমিকের আয় ছিল ৫ লক্ষ ৮৭ হাজার ১৭০ টাকা।
পার্থ ভৌমিকের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি কত?
নির্বাচনী হলফনামায় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ জানিয়েছেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল প্রার্থী। মনোনয়ন পেশের সময় তাঁর হাতে নগদ ছিল ২২ হাজার ২৮২ টাকা। আর তাঁর স্ত্রীর হাতে ছিল নগদ ৫ লক্ষ ৮৩ হাজার ৪০১ টাকা। পার্থ ভৌমিক ও তাঁর স্ত্রীর একাধিক ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। জীবনবিমা রয়েছে তাঁদের। হলফনামায় পার্থ জানিয়েছেন, স্ত্রীকে তিনি অগ্রিম হিসেবে ৬৭ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা দিয়েছেন।
হলফনামায় পার্থ ভৌমিক আরও জানিয়েছেন, তাঁর বা তাঁর স্ত্রীর কোনও গাড়ি নেই। কোনও গয়নাও নেই তাঁদের দু’জনের। সবমিলিয়ে পার্থ ভৌমিকের অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ১ কোটি ৬৫ লক্ষ ৮৭ হাজার ১৫২ টাকা ৪৮ পয়সা। আর তাঁর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৭৮ লক্ষ ১৬ হাজার ৮১০ টাকা ৮৮ পয়সা।
চাষযোগ্য কোনও জমি নেই পার্থ ভৌমিকের। নৈহাটিতে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া বাড়ি রয়েছে তাঁর। এছাড়া সোদপুরে রয়েছে একটি ফ্ল্যাট। ২০২২ সালের মার্চে ফ্ল্যাটটি কিনেছেন তিনি। দাম পড়েছিল ২৭ লক্ষ ৫৬ হাজার ৮৭২ টাকা। সবমিলিয়ে তাঁর স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৭৮ লক্ষ ৩৬ হাজার ৭৬০ টাকা। দোকান, ফ্ল্যাট-সহ তাঁর স্ত্রীর একাধিক স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। সবমিলিয়ে নূতন ভৌমিকের স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ২ কোটি ১৯ লক্ষ ৯৫ হাজার ১১৯ টাকা।
হলফনামায় পার্থ ভৌমিক জানিয়েছেন, তাঁর কোনও ঋণ নেই। তবে তাঁর স্ত্রীর ঋণের পরিমাণ ১ কোটি ১০ লক্ষ ৫১ হাজার ৫৫৭ টাকা। যার মধ্যে স্বামীর কাছ থেকে নেওয়া ৬৭ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকার কথা উল্লেখ রয়েছে। নিজের আয়ের উৎস হিসেবে মন্ত্রী ও বিধায়ক হিসেবে পাওয়া ভাতার কথা উল্লেখ করেছেন তৃণমূল প্রার্থী। আর তাঁর স্ত্রীর আয়ের উৎস হিসেবে লিখেছেন বিভিন্ন সংস্থায় অংশীদার হিসেবে পাওয়া লভ্যাংশের কথা।
কতদূর পড়াশোনা করেছেন পার্থ ভৌমিক?
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন পার্থ ভৌমিক। ১৯৮৭ সালে স্নাতকোত্তর পাশ করেন।
চব্বিশের নির্বাচনে ব্যারাকপুরে বিজেপি প্রার্থী করেছে বিদায়ী সাংসদ অর্জুন সিংকে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন অর্জুন। তবে চব্বিশে ঘাসফুলের টিকিট না পেয়ে ফের বিজেপিতে ফিরে যান। এবং পদ্মশিবির তাঁকে পার্থর বিরুদ্ধে প্রার্থী করেছে। এই কেন্দ্রে বামেদের প্রার্থী দেবদূত ঘোষ। ২০ মে এই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। শেষপর্যন্ত কে বাজিমাত করবেন, তা জানা যাবে ৪ জুন।