Darjeeling Mail: আর এনজেপি নয়, হলদিবাড়ি থেকে ছাড়বে দার্জিলিং মেল
Jalpaiguri: এ দিকে, ট্রেন নিয়ে চালু রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি। বিজেপির দাবি তাদের সাংসদ ডাক্তার জয়ন্ত কুমার রায়ের লাগাতার আন্দোলনের ফলে এই ট্রেন হলদিবাড়ি থেকে চালু হচ্ছে।
জলপাইগুড়ি: দার্জিলিং জেলার অন্যতম ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত দার্জিলিঙ মেল। এতদিন ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) স্টেশন থেকে ছাড়ত। তবে আর এনজেপি নয়, আগামী ১৫ অগস্ট থেকে ছাড়বে হলদিবাড়ি থেকে। সোমবার এই বিষয়ে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে রেল দফতর। এরপর মঙ্গলবার বিজেপির পক্ষ থেকে জলপাইগুড়ি রেল স্টেশনের আধিকারিক এবং যাত্রীদের মধ্যে ফুল ও লাড্ডু বিলি করে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠেন।
এ দিকে, ট্রেন নিয়ে চালু রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি। বিজেপির দাবি তাদের সাংসদ ডাক্তার জয়ন্ত কুমার রায়ের লাগাতার আন্দোলনের ফলে এই ট্রেন হলদিবাড়ি থেকে চালু হচ্ছে। একই দাবি করেছে তৃণমূল। ফলে যুযুধান রাজনৈতিক দলের তরজায় সরগরম রাজনৈতিক মহল।
একসময় হলদিবাড়ি প্যাসেঞ্জার ট্রেনের সঙ্গে দার্জিলিং মেলের দু’টো বগি জুরে দেওয়া হত। এরপর ট্রেনটি এনজেপি পৌঁছনোর পর কামরা দু’টিকে বিচ্ছিন্ন করে তারপর মুল দার্জিলিং মেলের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হত।
এরপর ১০ এপ্রিল ২০২০ সাল থেকে হলদিবাড়ি থেকে দার্জিলিং মেলের দু’টি কামরাকে পাকাপাকি ভাবে তুলে নেয় রেল কর্তৃপক্ষ। শুধু দার্জিলিং মেল নয় একইভাবে তুলে নেওয়া হয় তিস্তা-তোর্ষা এক্সপ্রেস ট্রেনটিও। ট্রন গুলিকে তুলে নেওয়ার ফলে প্রচণ্ড অসুবিধা পড়েন হলদিবাড়ি ও জলপাইগুড়ির যাত্রীরা। কারণ দার্জিলিং মেল করে শিয়ালদহ যেতে হলে তাঁদের এনজেপি পৌঁছনোর জন্য ৫০ কিলোমিটারের বেশি পথ বাসে বা গাড়ি করে গিয়ে তারপর নিউ জলপাইগুড়ি গিয়ে দার্জিলিং মেল ধরতে হত।
যেহেতু হলদিবাড়ি ও জলপাইগুড়ি স্টেশনে কোনও দূরপাল্লার ট্রেন দাঁড়ায় না, সেই কারণে যাত্রীরা লাগাতার অসুবিধার সম্মুখীন হতে হত।
আর এর ফলে দফায়-দফায় আন্দোলনে নামে যুব তৃণমূল। এবং ৬ জুন ২০২২ জলপাইগুড়ি স্টেশনে স্টেশন মাস্টারের অফিসে গিয়ে তারা মহাশ্মশান পোস্টার সাঁটিয়ে দেয়। এবং রেল লাইন ধরে হেটে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন যুব তৃণমূল জেলা সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বিরুদ্ধে রেল দফতরও লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
এরপর আগামী ১৫ অগস্ট থেকে হলদিবাড়ি থেকে পুরো দার্জিলিং মেল চলবে। ফলে আর এই অসুবিধায় পড়তে হবে না যাত্রীদের। এতেই খুশি সাধারণ মানুষ।
চন্দ্রশেখর সিং নামে এক যাত্রী জানান, এর ফলে আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। নইলে ট্রেনে যেতে হলে লাগেজ নিয়ে জলপাইগুড়ি থেকে অনেকদূরে থাকা রোড স্টেশন কিংবা নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে গিয়ে তারপর ট্রেন ধরতে হত।
স্বপন মুখোপাধ্যায় নামে জলপাইগুড়ির এক বাসিন্দা বলেন, ‘সামনে পঞ্চায়েত ভোট। বিজেপি আবার এইসব করে চমক দিচ্ছেনাতো। আগেও এরকম অনেক ট্রেন চালু হয়েছিল। কিন্তু পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। পাকাপাকি ভাবে ট্রেন চলুক তারপর রেলকে ধন্যবাদ দেব।’
বিজেপি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী বলেন, ‘আমাদের সাংসদের লাগাতার চেষ্টার ফলে আগামী ১৫ অগাস্ট হলদিবাড়ি থেকে পুরো দার্জিলিং মেল চালু হবে। সাংসদের আন্দোলনের ফলে জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে পদাতিক এক্সপ্রেস সহ ৭ টি ট্রেনের স্টপেজ চালু হয়েছে। তিস্তা ব্রিজ, ফ্লাই ওভার, ফোর লেন, সিক্স লেন ইত্যাদি বিভিন্ন রকম জিনিস নির্মাণের ফলে যোগাযোগ ব্যাবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। যার সুফল মানুষ পাচ্ছে। আগামীতে আরও উন্নয়ন হবে। আর এইসব দেখে হিংসায় জ্বলে যুব তৃণমূল নেতা স্টেশনে মহাশ্মশান পোস্টার সাঁটিয়ে দিচ্ছে। রেল কর্মীদের সাথে দুর্ব্যবহার করেছে। ওনার উচিৎ রেলকর্মীদের কাছে ক্ষমা চাওয়া।’
যুব তৃণমূল জেলা সভাপতি সৈকত চ্যাটার্জী বলেন এই ট্রেন চালু হওয়ার পেছনে সম্পূর্ণ সাফল্য আমাদের। কারন আমি হলদিবাড়ি থেকে ট্রেন চালুর দাবীতে বহুবার রেল রোকো আন্দোলন করেছি। স্টেশন মাস্টার এর অফিসে পর্যন্ত মহাশ্মশান পোস্টার সাঁটিয়ে দিয়েছি। এরফলে রেল দপ্তর আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। কিন্তু আমাকে থামাতে পারেনি। মানুষের সার্থে আমার এই আন্দোলন চলবে।