Girl Child: কন্যাসন্তান জন্মের হারে ভয়ঙ্করভাবে পিছিয়ে রানিগঞ্জ! কারণ খুঁজতে গিয়ে আরও ভয়ঙ্কর তথ্য
Raniganj: রানিগঞ্জ শহর এলাকায় কন্যা সন্তান জন্মের অনুপাতের ছবিটা কীরকম জানেন? প্রতি এক হাজার পুত্র সন্তানের জন্ম হলে, কন্যা সন্তানের জন্ম হচ্ছে ৮৩৩। হরিয়ানায় ক্ষেত্রে প্রতি হাজার জন পুত্র সন্তান পিছু এই হিসেব ৯১৬ জন কন্যা সন্তানের। যেখানে রাজ্যে কন্যা-সন্তানদের জন্য এতরকম ব্যবস্থা, এতরকম সুযোগ-সুবিধা, সেই রাজ্যে রানিগঞ্জে এই শোচনীয় অবস্থা কেন?
রানিগঞ্জ: কন্যাসন্তান জন্মের হারে এ কী করুণ দশা রানিগঞ্জে! হরিয়ানার থেকেও পিছনে পড়ে গিয়েছে রানিগঞ্জে কন্যা সন্তানের জন্ম হার। রানিগঞ্জ শহর এলাকায় কন্যা সন্তান জন্মের অনুপাতের ছবিটা কীরকম জানেন? প্রতি এক হাজার পুত্র সন্তানের জন্ম হলে, কন্যা সন্তানের জন্ম হচ্ছে ৮৩৩। হরিয়ানায় ক্ষেত্রে প্রতি হাজার জন পুত্র সন্তান পিছু এই হিসেব ৯১৬ জন কন্যা সন্তানের। যেখানে রাজ্যে কন্যা-সন্তানদের জন্য এতরকম ব্যবস্থা, এতরকম সুযোগ-সুবিধা, সেই রাজ্যে রানিগঞ্জে এই শোচনীয় অবস্থা কেন?
কন্যা সন্তানের জন্ম হারের দিক থেকে বাংলার সামগ্রিক চিত্র যথেষ্ট ভাল। এমনকী গোটা দেশের জাতীয় হারের তুলনাতেও বেশি। ২০১৯-২০ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী ভারতে কন্যা সন্তান জন্মের হার ৯২৯। সেখানে ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে কন্যা সন্তানের জন্ম হার ৯৬৩। কিন্তু বাংলার সামগ্রিক চিত্রের সঙ্গে একেবারেই খাপ খাচ্ছে না রানিগঞ্জের ছবিটা। পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের বৈঠকে এক উদ্বেগজনক চিত্র উঠে আসছে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক, কতটা উদ্বেগজনক পরিস্থিতি? রানিগঞ্জ শহর এলাকায় কন্যা সন্তান জন্মের হার ৮৩৩। রানিগঞ্জ ব্লকে তা ৮৭৯। কাঁকসায় ৮৮৬। বারাবনিতে ৯৪৩।
বিষয়টি নিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শেখ মহম্মদ ইউনূস বলছেন, ‘২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত যে বার্থ রেজিস্ট্রেশন হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে জেলার কয়েকটি জায়গায় কন্যা সন্তানের জন্মের হার কিছুটা কম। তার মধ্যে রানিগঞ্জ, পাণ্ডবেশ্বর ও কাঁকসা ব্লক আছে।’
কিন্তু কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে? যেখানে গোটা রাজ্যের সামগ্রিক চিত্র যথেষ্ট চমকপ্রদ, তখন কেন রানিগঞ্জে এই দশা? এক্ষেত্রে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ করে গর্ভপাতের আশঙ্কার কথাও উড়িয়ে দিচ্ছে না প্রশাসন। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলছেন,’গর্ভে ছেলে আছে নাকি মেয়ে আছে, তা জেনে নিয়ে হয়ত গর্ভপাত করানো হচ্ছে। বাচ্চা নষ্ট করানো হচ্ছে। সেটা কোথায় হচ্ছে, তা আমার খুঁজছি। জেলায় নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি ঝাড়খণ্ড থেকেও কিছু মানুষ গর্ভপাত করিয়ে আসছেন বলেও খবর আছে আমাদের কাছে।’
উল্লেখ্য, হরিয়ানার ক্ষেত্রেও অতীতে কন্যা সন্তানের জন্মের হার এককালে ৮০০-র কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ উদ্যোগের হাত ধরে হরিয়ানার চিত্র এখন অনেক বদলে গিয়েছে। কিন্তু রানিগঞ্জের পরিস্থিতি এখন হরিয়ানার গড়ে থেকেও নীচে নেমে গিয়েছে। আর এই নিয়ে ইতিমধ্যেই জেলার রাজনৈতিক মহলেও হইচই পড়ে গিয়েছে।
বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির বক্তব্য, “এই সমস্যা দূর করতেই প্রধানমন্ত্রী ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ কর্মসূচি নিয়েছিলেন। সারা বাংলায় আপনি একটিও ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ হোর্ডিং পাবেন না। তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।” তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় আবার বলছেন, যদি ভ্রূণহত্যা হয়েই থাকে, তার যেন নির্দিষ্ট অভিযোগ নেওয়া হয়। কোন হাসপাতালে, কোন নার্সিংহোমে হচ্ছে, সেই বিষয়ে অভিযোগ নেওয়া হোক। একইসঙ্গ রাজ্যে যে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ বেআইনি, সেকথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
তবে রাজ্যের সামগ্রিক চিত্রের সঙ্গে তুলনা করে দেখলে, রানিগঞ্জ সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী এক চিত্র। কিন্তু জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক যে আশঙ্কার কথা শোনাচ্ছেন, সেটার অবশ্যই অগ্রাধিকারিকের ভিত্তিতে খোঁজ নেওয়া দরকার বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।