Abhishek Banerjee : আমার ছবি নয়, আজ এই দু’জনের ছবি ছাপুন; সংবাদমাধ্যমকে অনুরোধ অভিষেকের

Abhishek Banerjee : বিরোধীদের অভিযোগ, আবাসে ঘর দিতে মানা হচ্ছে না কোনও সরকারি শর্তই। ‘শর্ত’ একটাই, করতে হবে ঘাসফুল, থাকতে হবে সবুজ ছাতার তলায়।

Abhishek Banerjee : আমার ছবি নয়, আজ এই দু'জনের ছবি ছাপুন; সংবাদমাধ্যমকে অনুরোধ অভিষেকের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 04, 2023 | 5:27 PM

কেশপুর: একটু আগেই ডেকেছিলেন শেখ হসিনউদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে। আবাস যোজনায় টাকা পেলেও ঘর তৈরির জন্য বাড়তি খরচের ভয়ে ফিরিয়েও দিয়েছিলেন তিনি। করেন না তৃণমূল (Trinamool Congress)। করেন না কোনও দলই। এ কথা জানিয়েছিলেন খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। অথচ, হসিনউদ্দিনের রয়েছে মাত্র ছোট্ট একটা এক চালা ঘর। সেই ছবিও দেখিয়েছিলেন অভিষেক। নিয়েছিলেন তাঁর মেয়ের বিয়ের যাবতীয় খরচের দায়িত্ব। এরপরই পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election 2023) তাঁকেই দল মুখ করতে চলেছে বলে ঘোষণা করেন অভিষেক। ঠিক এরপরই কেশপুরের (Keshpur) গোলার গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য মঞ্জু দলবেরা ও তাঁর স্বামী অভিজিৎ দলবেরাকে ডেকে নেন অভিষেক। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে এলাকায় তৃণমূলের বুথ সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন অভিজিৎ। অভিষেকের দাবি, দলের সঙ্গে যোগ রয়েছে, দায়িত্বেও রয়েছেন তারপরেও আবাস যোজনার ঘর নিতে চাননি এই দম্পতি। 

অভিজিৎ-মঞ্জুকে পাশে নিয়েই সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে অভিষেক বলেন, “সারাদিন খবরে দেখানো হচ্ছে তৃণমূলের বুথ সভাপতি, পঞ্চায়েত সদস্য ফুলেফেঁপে উঠেছে! এই দুজনকে দেখে কী মনে হয় আপনাদের? আমি সংবাদমাধ্যমকে অনুরোধ করব যদি আপনাদের মধ্যে নিরপেক্ষতা থাকে, বিবেকবোধ থাকে আমার মিটিংয়ে আজকে আমার ছবি দিতে হবে না। এদের দুজনের ছবি দিন। কারণ মঞ্জু দেবী পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে বলেছেন আমার স্বামী বুথ সভাপতি, আমি পঞ্চায়েতের মেম্বার, আমি তৃণমূল করি, আমি ঘর নেব না।” এরপরই মঞ্জু দেবীর বাড়ির একটি ছবি সকলের সামনে তুলে ধরেন অভিষেক। 

প্রসঙ্গত, আবাস যোজানার সার্ভের কাজ শুরু হতেই সাম্প্রতিককালে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক শিবির। কোথাও সার্ভের কাজে যাওয়া সরকারি কর্মীদের গায়ে হাত তোলার অভিযোগ, তো কথাও আবার তৃণমূল ঘনিষ্ঠদের ঘর পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে লাগাতার বিক্ষোভের ছবি দেখতে পাওয়া গিয়েছে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে। বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান থেকে দিদির দূতেরা। এমনকী সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের এক পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের প্রাসাদোপম বাড়ির ছবি সামনে এসেছিল। কিন্তু, তাঁর পরিবারের সদস্যদের নাম ছিল আবাস যোজনার তালিকায়। এই ছবি সামনে আসতেই শোরগোল শুরু হয়েছিল গোটা রাজ্যে। বিরোধীদের অভিযোগ, আবাসে ঘর দিতে মানা হচ্ছে না কোনও সরকারি শর্তই। ‘শর্ত’ একটাই, করতে হবে ঘাসফুল, থাকতে হবে সবুজ ছাতার তলায়।

Abhisekh in Paschim Medinipur

ভীত শক্ত হচ্ছে ‘নতুন তৃণমূলের’? 

এই আবহে কেশপুরে অভিষেকের একের পর এক ‘স্বচ্ছতার বার্তা’ পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মনোবল নতুন করে বৃদ্ধি করবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ। অনেক বলতে শুরু করেছেন, অভিষেকের এই বার্তাতেই আরও শক্ত হবে ‘নতুন তৃণমূলের’ ভীত। প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিককালে অভিষেকের মুখে একাধিকবার শোনা গিয়েছে নতুন তৃণমূলের কথা। দক্ষিণ কলকাতার (Kolkata) একাধিক প্রান্তে অভিষেকের ছবি দেওয়া পোস্টারেও নতুন করে বাড়ে নতুন তৃণমূলের জল্পনা। কী এই নতুন তৃণমূল? উত্তর দিয়েছিলেন তিনি নিজেই। বলেছিলেন, “তৃণমূলকে দেখতে চায়, তৃণমূলকে সেভাবে তৃণমূলকে প্রতিষ্ঠিত করা বা তৈরি করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। তৃণমূলকে যাতে নতুন রূপে দেখতে পায় তার জন্য যা করনীয় আমরা করব। ব্লক কমিটিতে যে পরিবর্তনগুলি হচ্ছে সেগুলি লক্ষ্য করলেই আপনারা নিজেরাও উপলব্ধি করতে পারবেন। নতুন তৃণমূল মানে এমন একটা তৃণমূল, যে তৃণমূলকে স্বপ্ন নিয়ে মা-মাটি-মানুষের সরকার প্রথমবার ক্ষমতায় এসেছিল।”