শুভেন্দুর কনভয়ে ‘হামলা’, ‘মীরজাফর’-কে সাবধান করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কিত পোস্ট আনিসুরের!

Suvendu Adhikari: কাউন্সিলরের বাড়ি থেকে শুভেন্দু যখন ফিরছেন তখনই বেশ কিছু দুষ্কৃতী তাঁর কনভয় লক্ষ্য করে হামলা করে বলে অভিযোগ। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে।

শুভেন্দুর কনভয়ে 'হামলা', 'মীরজাফর'-কে সাবধান করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কিত পোস্ট আনিসুরের!
কনভয়ে হামলার পর শুভেন্দু, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 22, 2021 | 11:58 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: আচমকা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) কনভয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ‘হামলা’য় আহত ১০ বিজেপি কর্মী। অভিযোগ, রবিবার রাতে পাঁশকুড়ার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সুকুমার ভুঁইয়াকে দেখতে যান শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)। সেখান থেকে ফেরার পথে তাঁর কনভয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। কনভয়ে লক্ষ্য করে ‘গো ব্যাক’ ‘গদ্দার’ স্লোগান দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এমনকী, বিজেপি কর্মীদের ‘মারধর’ করা হয়।

গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, শনিবার পাঁশকুড়ার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুকুমার ভুঁইয়া ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে সাহায্য করতে গিয়েছিলেন। সেখানে শাসক শিবিরের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। এরপরেই তৃণমূলের কয়েকজন দুষ্কৃীতী তাঁকে মারধর করে বলে অভিযোগ। ‘আক্রমণের’ চোটে তাঁর মাথায় ও কানে চোট লাগে বলে অভিযোগ। রবিবার রাতে নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী ওই আক্রান্ত কাউন্সিলরকে দেখতে যান। তাঁর সঙ্গে বেশ খানিকক্ষণ সময় কাটান। কাউন্সিলরের বাড়ি থেকে শুভেন্দু যখন ফিরছেন তখনই বেশ কিছু দুষ্কৃতী তাঁর কনভয় লক্ষ্য করে হামলা করে বলে অভিযোগ। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে।

অপরদিকে বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের তুমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, “আমার কাছে এই ধরনের কোনও খবর এখন নেই । বিজেপি বা শুভেন্দুবাবুর ওপরে কোন হামলা হলে তা তৃণমূলের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়াটা বিজেপির একটা প্রবণতা । কারোর ওপর হামলা করে তাঁকে বড় করার ইচ্ছে তৃণমূলের নেই । যদি এই ধরনের কোন গোলমাল হয় তা দেখার দায়িত্ব পুলিশের।”

অন্যদিকে, অধুনা ‘দিদির অনুগামী’ বলে চর্চিত আনিসুর রহমান সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনার পোস্ট করে লেখেন, ‘আজ মীরজাফর শুভেন্দু নামক অবাঞ্ছিত একটি নেতাকে পাঁশকুড়ার মানুষ সারমেয়র মতো তাড়াল। গো ব্যাক শুভেন্দু স্লোগান উঠল পাঁশকুড়ার মাটিতে। মনে পড়ে, এই মাটির ভুমিপুত্র আজও তোমার মিথ্যা ষড়যন্ত্রে জেলে দিন মুক্তির অপেক্ষায়। মীরজাফর শুধু পাঁশকুড়ায় নয় অবিভক্ত মেদিনীপুরের মাটিকে কলঙ্কিত করেছে,তাই আজ সেই প্রতিবাদের সূচনা হলো,পাঁশকুড়ার মাটিতে। আমাদের নেতার মুক্তির পর আমরা এই মীরজাফর কে আমরা জেলায় ঢুকতে দেব না। এখানকার পবিত্র শান্তিপূর্ণ এলাকাকে যতই গরম করার চেষ্টা করুক,আমরা সবাই রুখে দাঁড়াবো। সারা বাংলাকে একত্রিত করে আমরা মীরজাফরকে যোগ্য জবাব দেব। লড়াই করে এই মাটির সংগঠন সাজাল যে, সে আজ বিনা দোষে প্রায় তিন চার বছর জেলবন্দি। তাই পাঁশকুড়ার মানুষ, ভুমিপুত্রের সৈনিক মীরজাফর কে রাজনৈতিক ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। যে খেলা শুরু করছো তুমি তার যবনিকা টানবে আমাদের নেতা। সাবধান মীরজাফর পাঁশকুড়ার মাটিতে তুমি পা রেখো না,আমাদের শান্তিতে থাকতে দাও নইলে প্রবল খেলা হবে। বিরোধী নেতা তুমি তোমার অওকাতে থাকো।’

শুভেন্দু এদিন বলেন, “এই ধরনের হামলা ছোট ঘটনা। আমি এই এলাকা তৈরি  করেছি। আমার হাতে সব নেতা মন্ত্রী হয়েছে। আজ যাঁরা হামলা করছেন তাঁরা ২০০২ সালে হেরেছিলেন, আমি ছিলাম না তাই। ২০০৭ সাল  থেকে আমি ভোট করাই বলে জেতে। ভোট হয় রাজনৈতিকভাবে। এই বোধটা আসা দরকার যে  সরকার ফর দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, অফ দ্য় পিপল। এটা মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ও তাঁর কোম্পানি যদি না বোঝে তাহলে এই ধরনের হামলা হবে।” শুভেন্দুর কনভয়ে এই হামলার নেপথ্যে ‘দিদির অনুগামী’ আনিসুর রহমানের হাত রয়েছে বলেই অনুমান পদ্মশিবিরের।

বিজেপিতে যোগদানের পরেই পাঁশকুড়ার তৃণমূল নেতা কুুরবান শাহ-খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার হন আনিসুর রহমান। পরবর্তীতে একুশের বিধানসভা মমতা বলেন, ‘‘আনিসুরকে অত্যাচার করে জেলে রেখে দিয়েছে।’’ পরে জমি আন্দোলন পর্বে নিজের নন্দীগ্রামের লড়াই প্রসঙ্গেও তৎকালীন তৃণমূল নেতা আনিসুরের কথা উল্লেখ করেন মমতা। নন্দীগ্রাম আন্দোলনে আনিসুরের স্কুটারে চড়েই তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন এমন কথাও সভামধ্যেই বলেন মমতা। শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই আনিসুরকে মুক্ত করতে রীতিমতো ‘উঠে পড়ে’ লাগে তৃণমূল। ঘটনায়, শুভেন্দুর গলাতেও কটাক্ষের সুর শোনা যায়। নির্বাচনী প্রচারে স্পষ্টই বলেন, “মাননীয়া পুলিশমন্ত্রী। তিনি একদা এক খুনিকে জেলে ঢুকিয়েছিলেন। তারপর আবার তাকেই জেল থেকে বের করার চেষ্টা করছেন।” এদিকে, আনিসুরও বিজেপিতে যোগ দিলেও আদালতের রায়ে জামিন পাননি। ফলে, তিনিও কার্যত বর্তমানে ‘দিদির অনুগামী’। এই পরিস্থিতিতে, আনিসুরের সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কিত পোস্ট যে নয়া ইঙ্গিতবাহী তা অস্বীকার করছেন না রাজনৈতিক মহল। আরও পড়ুন: মঙ্গলকোট-কাণ্ডে জড়িত তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সদস্য! সিআইডির জালে আরও ১ লিঙ্কম্যান