Farmer Suicide: বারবার ব্যাঙ্কের নোটিশ, ঝামেলা পুরোপুরি শেষ করতে কৃষক এমন পদক্ষেপ করবেন কেউ ভাবেননি!
Chandrakona Suicide: শুধু এই বছর নয়, আগের বছরও ভরা মরশুমে ব্যপক ক্ষতি হয়েছিল চাষের। কখনও অকাল বৃষ্টি, কখনও বা ক্ষরা এই করে-করেই শেষ শস্যের ফলন।
চন্দ্রকোণা: একবার নয় একাধিকবার। লাগাতার ব্যাঙ্কের নোটিশ। রীতিমত জেরবার হয়ে পড়েছিলেন তিনি। ঋণ শোধের নোটিশ পেতে-পেতে মানসিক ভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। এরপরই কঠীণ পদক্ষেপ গ্রহণ। গতবছরের পর এই বছর ফের। চন্দ্রকোণায় আত্মঘাতী আরও এক চাষী। একদিকে ব্যঙ্কের ঋণ,অন্যদিকে চাষের ব্যাপক ক্ষতি। সব মিলিয়ে ঋণের বোঝার মধ্যে পড়ে আত্মঘাতী হলেন তিনি। শোকের ছায়া চন্দ্রকোণার যদুপুর গ্রামে।
শুধু এই বছর নয়, আগের বছরও ভরা মরশুমে ব্যপক ক্ষতি হয়েছিল চাষের। কখনও অকাল বৃষ্টি, কখনও বা ক্ষরা এই করে-করেই শেষ শস্যের ফলন। মাথায় হাত পড়েছিল কৃষকদের। ঋণ নিয়ে চাষ করেছিলেন তারা। এবার ফলন নষ্ট হলে কীভাবে চলবে সংসার, কেমন করেই বা ঋণ মেটাবেন সেই ভেবেই অবশেষে চরম সিদ্ধান্ত নেন কৃষকরা।
বছর ঘুরতে না ঘুরতে আবারও একই ছবি ফুটে উঠল চন্দ্রকোণায়। ফের আলুচাষে ক্ষতি। ঋণের বোঝা মেটাবেন কীভাবে? ভেবে-ভেবে নিজেকে শেষ করে দিলেন আবার এক কৃষক। মৃতের নাম রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। চন্দ্রকোণার যদুপুরের বাসিন্দা তিনি। চলতি মরসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দু’দফায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আলুচাষে। তার উপরে ব্যাঙ্ক থেকে চাষের জন্য কয়েক হাজার টাকা লোন নিয়েছিলেন চাষে ক্ষতির কারণে ব্যাঙ্ক থেকে বারবার নোটিশ দিলেও লোন পরিশোধ করতে পারেননি তিনি। যা ঘিরে দিনকয়েক ধরেই চরম মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। অবশেষে মঙ্গলবার রাতে বাড়ির থেকে বেরিয়ে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
স্থানীয়দের নজরে আসে গোটা বিষয়টি। পরে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় চন্দ্রকোণা গ্রামীণ হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে প্রথমে স্থানান্তরিত করা হয় ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। পরে স্থানান্তরিত করা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসারত অবস্থাতেই বুধবার ভোরে মৃত্যু হয় ষাটোর্ধ্ব এই কৃষকের। পরিবারের সদস্যদের দাবি, দেনার দায়েই কার্যত আত্মঘাতী হতে হল তাঁকে।
এক এলাকাবাসী বলেন, ” রবীন্দ্রনাথ বাবুর এক ছেলে বিশেষ ভাবে সক্ষম। তার চিকিৎসার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে অনেক টাকা তুলেছিলেন। কিন্তু চাষের এত ক্ষতি। কীভাবে ঋণ শোধ করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। ছেলের চিকিৎসার খরচ মেটানোর পাশাপাশি ব্যাঙ্ক ঋণ শোধ সব মিলিয়ে মানসিক সমস্য়ায় জর্জরিত হয়েছিলেন তিনি। তারপরই এই সিদ্ধান্ত।”
ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, বুধবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত হবে আত্মঘাতী কৃষকের। আত্মহত্যার পিছনে ঋণের বোঝা নাকি অন্য কোনেও কারণ তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কৃষক মৃত্যুর কথা গ্রামে পৌঁছতেই রীতিমতো শোকের ছায়া গোটা গ্রাম জুড়ে।