Fraud Case: মাসে মাসে ১০ হাজার! ফের চিটফান্ড প্রতারণার শিকার কাউন্সিলর-পুলিশ-সহ সাধারণ মানুষ

Kharagpur: যদিও, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বাসিন্দা তথা ওই গ্রুপের মালিক 'প্রতারক' দেবদূত ভট্টাচার্য সপরিবারে এখন 'পগারপার' হয়ে গিয়েছেন। এমনকী প্রতারিত হয়েছেন খড়গপুর শহরের এক কাউন্সিলর ও কলকাতার এক পুলিশ কর্মী।

Fraud Case: মাসে মাসে ১০ হাজার! ফের চিটফান্ড প্রতারণার শিকার কাউন্সিলর-পুলিশ-সহ সাধারণ মানুষ
খড়গপুরে প্রতারণা চক্র (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 07, 2023 | 12:39 PM

খড়গপুর: আবারও চিট-ফান্ড সংস্থার খপ্পরে পড়ে সাধারণ মানুষের বিপুল টাকা খোয়ানোর অভিযোগ উঠল। সেই তালিকায় রয়েছে রেল শহর খড়গপুরেরই শতাধিক বাসিন্দা। প্রতারিত হয়ে অবশেষে তাঁরা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। ইতিমধ্যে খড়গপুর টাউন থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন। অভিযোগ উঠতেই দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বাসিন্দা তথা ওই গ্রুপের মালিক সপরিবারে এখন গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, প্রতারিতের তালিকায় রয়েছেন খড়গপুর শহরের এক কাউন্সিলর ও কলকাতার এক পুলিশ কর্মীও।

উল্লেখ্য, সারদা, রোজ ভ্যালি, অ্যালকেমিস্ট, জি-নেট থেকে শুরু করে হাজারো চিটফান্ড কেলেঙ্কারি হয়েছে গত এক দশকে। কোটি কোটি টাকা খুইয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন বহু মানুষ। দৈনন্দিন জীবনের চাহিদা পূরণ করতে কিংবা অল্প পরিশ্রমে আর স্বল্প সময়ে অধিক অর্থ লাভের লোভে পড়ে প্রতারিত হতে হয়েছে তাঁদের।

কীভাবে প্রতারণা চক্র চালানো হত?

জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে রাজ্যের প্রথম সারির সমস্ত দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে উৎসাহিত হন খড়্গপুরের বাসিন্দারা। বিজ্ঞাপনে উল্লেখ ছিল, স্বল্প বিনিয়োগের মাধ্যমে বহুল প্রচারিত ক্যাব সংস্থাকে গাড়ি দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন। এরপর সেই ফাঁদে পড়ে অনেক ক্যাব চালকই যোগাযোগ করেন সেই বিজ্ঞাপনে দেখা নম্বরে। এরপর তাঁরা জানতে পারেন, আড়াই লক্ষ (২.৫ লক্ষ) টাকা করে গাড়ি বাবদ দিতে হবে। সেই গাড়ি দেওয়া হবে ওই ক্যাব কোম্পানিকে। তার বিনিময়ে মাসে মাসে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে বিনিয়োগকারীকে। বাকি গাড়ির সমস্ত খরচাপাতি করবে ‘ফ্রড কোম্পানি’। গাড়ির মালিককে দেওয়া হবে একটি পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি। এভাবেই গোটা রাজ্য জুড়ে চলতে থাকে ব্যবসা। জন পিছু আড়াই লক্ষ টাকা করে তোলা শুরু হয়।

খড়্গপুর শহরের প্রায় ১০০ জনের বেশি মানুষ এতে বিনিয়োগ করেছে বলে জানা গেছে। ২০১৬ সাল থেকে শুরু হয় ব্যবসা। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত যাঁরা বিনিয়োগ করেছিলেন, তাঁরা মাসে মাসে ১০ হাজার টাকা করে পেয়েও যাচ্ছিলেন। তবে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কোভিড আসার পর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় ব্যবসা। মাসে মাসে ১০ হাজার টাকা দেওয়াও বন্ধ হয়। এভাবেই কাটে ২ বছর।

এরপর ২০২২ সালে এসে ওই চিটফান্ড সংস্থার মালিক জানান, “কোভিডের সময় গাড়ি চলেনি।‌ তাই, ইএমআই দেওয়ার মতো আয় হয়নি। সব গাড়ি ফাইনান্স কোম্পানি টেনে নিয়েছে। তিনি টাকা ফেরত দেবেন, তবে একটু সময় লাগবে। এরপরই, গত ২৮ ডিসেম্বর (২০২২) থেকে সপরিবারে উধাও হয়ে যান অভিযুক্ত। সব নম্বর তাঁর বন্ধ। কলকাতার বিলাসবহুল ফ্ল্যাটেও পড়েছে তালা। অগত্যা বাধ্য হয়েই পুলিশের শরণাপন্ন হয়েছেন প্রতারিতরা।

তাঁরা জানাচ্ছেন, কেউ আড়াই লক্ষ টাকা আবার কেউ ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রতারিত হয়েছেন। আর পাঁচটা চিটফান্ডের মতোই প্রথম দিকে যাঁরা ইনভেস্ট করেছিলেন তাঁদের টাকা উঠে গেলেও, পরের দিকে উৎসাহিত হয়ে যাঁরা বিনিয়োগ করেছিলেন, তাঁরা সর্বস্বান্ত হয়েছেন। এই তালিকায় আছেন খড়্গপুর শহরের প্রতারিত বাসিন্দা শুভ চক্রবর্তী, দেবারতি মিত্র, পিউ দোলইরাও। তাঁরা সুবিচার চেয়ে টাউন থানাতে শুক্রবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অন্যদিকে, গার্ডেনরিচ, নরেন্দ্রপুর সহ কলকাতার বিভিন্ন থানাতেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে।‌ পুলিশ পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রেলশহর খড়্গপুরে।