Ghatal : বর্ষার আগমনী বার্তা পেয়েই নৌকা-ডিঙি মেরামতে ব্যস্ত বন্যা-বিধ্বস্ত ঘাটালবাসী
Ghatal : বন্যায় পারাপারের একমাত্র মাধ্যম নৌকা, ডিঙি। তাই জোর কদমে শুরু হয়েছে নৌকা, ডিঙি মেরামতির কাজ। সঙ্গে মজুদ করা হচ্ছে শুকনো খাবার ও গবাদিপশুর খাবার।
ঘাটাল : রাজ্যে বর্ষা আসতে আর বেশি দেরি নেই। আর বর্ষা মানেই ঘাটাল এলাকায় বন্যা অবধারিত। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান (Ghatal Master Plan) এখনও খাতায়-কলমে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাই নিজেরাই নেমে পড়েছেন। বানভাসি এলাকার মানুষ এখন নৌকা, ডিঙি মেরামতে নাওয়া খাওয়া ভুলেছেন।
বর্ষা আসলেই সংবাদ শিরোনামে উঠে আসে ঘাটাল-সহ বেশ কয়েকটি পার্শ্ববর্তী এলাকা। প্রতিবছর বন্যায় প্লাবিত হয় ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা। গৃহবন্দি হন লক্ষাধিক মানুষ। বন্যার জলে ডুবে যায় ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট। আর তখন নৌকা বা ডিঙি যাতায়াতের একমাত্র ভরসা বানভাসি মানুষের।
ঘাটাল শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে গিয়েছে শিলাবতী নদী। শিলাবতী নদীর জল বেড়ে প্লাবিত হয় ঘাটাল শহরের পশ্চিম পাড়। ঘাটাল পৌরসভার ১৭ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩ টি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়। ঘাটাল ব্লকের মনসুকা ১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত, সুলতানপুর ১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত, অজবনগর ১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত, দেওয়ানচক ১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এছাড়াও দাসপুর ১ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা, চন্দ্রকোনা ১ ও ২ নম্বর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা শিলাবতী নদীর জলে প্লাবিত হয়। বন্যায় ডুবে বিঘের পর বিঘে চাষের জমি।
গতবছর ঘাটাল মহকুমায় একাধিকবার ভয়াবহ বন্যা হয়। শিলাবতী নদীর পূর্বপাড়ে মহকুমা শাসকের দেওয়ালের প্রাচীর ভেঙে প্লাবিত হয় মহকুমা শাসকের কার্যালয় সহ ঘাটাল উপ সংশোধনাগার। ঘাটালের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসেন একাধিক নেতা মন্ত্রী সহ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২৭ মে কেরলে পৌঁছবে মৌসুমী বায়ু। বাংলার মাটি ছুঁতে ছুঁতে ৮ জুন হতে পারে। অর্থাৎ সামনেই বর্ষা। তাই ঘাটালের বানভাসি মানুষ শুরু করেছেন বন্যার প্রস্তুতি। বন্যায় পারাপারের একমাত্র মাধ্যম নৌকা, ডিঙি। তাই জোর কদমে শুরু হয়েছে নৌকা, ডিঙি মেরামতির কাজ। সঙ্গে মজুদ করা হচ্ছে শুকনো খাবার ও গবাদিপশুর খাবার। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতিতে তৎপর প্রশাসনও। শিলাবতী নদীতে বোট নামিয়ে চলছে প্রশিক্ষণ ।
বর্ষা আসার আগে খাওয়া ভুলেছেন নৌকা মেরামতির কাজে যুক্ত কারিগররা। তাঁরা বলেন, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল, পাশের জেলা হুগলি-সহ বিভিন্ন এলাকায় নৌকা মেরামতের কাজ করেন। বর্ষা সামনেই। তাই তাঁদের ডাকও পড়ছে বিভিন্ন জায়গা থেকে। দম নেওয়ার ফুসরতও নেই তাঁদের। এক কথায় বন্যার প্রস্তুতি জোরকদমে শুরু করেছে বানভাসি মানুষ।
এ বিষয়ে ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, প্রশাসনের তরফে বন্যার আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে সমস্ত এলাকায়। এমনকি তাড়াতাড়ি এনডিআরএফ-এর একটি টিম ঘাটাল এসে পৌঁছাবে।