Daspur: সালিশি সভায় অপমানের কারণেই কি আত্মঘাতী? দাসপুরে কিশোরী মৃত্যুর পরতে পরতে রহস্য

Paschim Medinipur: প্রকাশ্যে সালিশি সভার বিষয়টি নিয়ে কেউ মুখ না খুললেও স্থানীয় সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ২৯ জুন রাত ৮ টা নাগাদ মণিদীপা ও তাঁর মাকে সালিশি সভায় জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া হয়।

Daspur: সালিশি সভায় অপমানের কারণেই কি আত্মঘাতী? দাসপুরে কিশোরী মৃত্যুর পরতে পরতে রহস্য
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 03, 2022 | 6:09 PM

দাসপুর : সালিশি সভায় চরম অপমান থেকেই কি আত্মঘাতী হয়েছিলেন দাসপুরের শৌলান গ্রামের সদ্য উচ্চমাধ্যমিক পাশ করা তরুণী মণিদীপা মণ্ডল? আত্মহত্যায় তরুণীকে প্ররোচনার অভিযোগে পুলিশ ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে তরুণীর কাকিমা বছর ঝুমা মণ্ডলকে। জানা গিয়েছে, কাকিমার দেওয়া মিথ্যা বদনামের জেরে ধস্তাধস্তি হয়। আর তারপর বসেছিল সালিশি সভা। সেই সালিশি সভার শেষে নিঁখোজ হয় তরুণী। পরের দিন অর্থাৎ ৩০ জুন সকালে তরুণীর ঝুলন্ত দেহ দেখা যায় পাশের গ্রামের মাঠের মাঝখানে রাস্তার ধারের একটি গাছে। দাসপুর থানার সৌলান গ্রামের ওই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল চারিদিকে।

বছর আঠারোর মণিদীপার বাবার অমল মণ্ডল জানিয়েছিলেন, পরবর্তী পড়াশোনা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ২৭ জুন সন্ধ্যায় এক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলেন মণিদীপা। সেই সময় তাঁর কাকিমা ঝুমা মণ্ডল বন্ধুর সঙ্গে প্রেমের বদনাম দিয়ে নানান অকথা-কুকথা বলে গালাগালি শুরু করেন বলে অভিযোগ। এর মিনিট পাঁচেক পর বন্ধু চলে যায়। কিন্তু কাকিমা বন্ধুর সঙ্গে প্রেমের বদনাম দিয়ে অকথ্য ভাষা বলতেই থাকেন। মণিদীপা প্রতিবাদ জানালে কাকিমার গলার সুর আরও চড়ে। শেষে বিষয়টি ঠেলাঠেলি ও ধস্তাধস্তির পর্যায়ে চলে যায়। পরের দিন অচেনা কয়েকজন লোকজন এনে মণিদীপাকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ঝুমা মণ্ডলের বিরুদ্ধে।

প্রকাশ্যে সালিশি সভার বিষয়টি নিয়ে কেউ মুখ না খুললেও স্থানীয় সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ২৯ জুন রাত ৮ টা নাগাদ মণিদীপা ও তাঁর মাকে সালিশি সভায় জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয় তৃণমূল পার্টি অফিসে সালিশি সভা বসে। সালিশি সভায় কাকিমা ঝুমা মণ্ডলের অকথ্য ভাষার বিচার হয়নি, উল্টে মোড়লরা মণিদীপাকে বাধ্য করে ঝুমা মণ্ডলের পা ধরে ক্ষমা চাইতে। মণিদীপার চোখের জল, কথা… কোনওকিছুই গুরুত্ব না দিয়ে একতরফা সালিশি সভা শেষ হয় বলে অভিযোগ। সালিশি সভা শেষে মণিদীপা মাকে বারবার বলছিল, কেন তাঁর প্রতি মিথ্যা বদনামের বিচার হল না। কেন মিথ্যা প্রেমের অপবাদ তাকে বয়ে বেড়াতে হবে। এরপর হঠাৎ করে মেয়েকে আর দেখতে পাননি মা। সারারাত খোঁজ করেও লাভ হয়নি। ভোরের আলো ফুটলে ৩০ জুন পাশের গ্রামে মাঠের রাস্তার মাঝে গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায় মণিদীপার নিথর দেহ।

যদিও সূত্র মারফত এই অভিযোগ পাওয়ার পর যোগাযোগ করা হয়েছিল তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বাবলু দাসের সঙ্গে। তবে তিনি সালিশি সভার বিষয়টি পুরোপুরি এড়িয়ে গিয়েছেন। এদিকে ঘটনার পর ন্যায় বিচারের দাবি করছেন অমল বাবু। ঝুমা মণ্ডল-সহ সালিশি সভার উপস্থিত সকলের বিরুদ্ধে দাসপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ঘাটাল মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অগ্নিশ্বর চৌধুরী জানান, অভিযোগ পেয়েই ঝুমা মন্ডলকে গ্রেফতার করে দাসপুর পুলিশ। শনিবার ঘাটাল আদালত তার ২ দিনের পুলিশ হেফাজত দেয়।