Paschim Medinipur: জোরপূর্বক রাস্তা ঢালাই করে বিপাকে তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েত, জল গড়াল হাইকোর্ট পর্যন্ত

Paschim Medinipur: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর ১ নং ব্লকের নন্দনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রবিদাসপুর গ্রামের। জানা গিয়েছে, রবিদাসপুর গ্রামের বাসিন্দা কার্তিক কাপাস ও তাঁর ভাইদের কৃষি জমি জোর করে দখল করে পুলিশ নামিয়ে রাতারাতি ঢালাই করে নেওয়া হয় দাসপুরের নন্দনপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফ থেকে।

Paschim Medinipur: জোরপূর্বক রাস্তা ঢালাই করে বিপাকে তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েত, জল গড়াল হাইকোর্ট পর্যন্ত
এই রাস্তা নিয়েই বিতর্ক (নিজস্ব ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 06, 2022 | 12:17 PM

পশ্চিম মেদিনীপুর: জোর পূর্বক ঢালাই রাস্তা করে বিপাকে তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত। অভিযোগ গড়াল হাইকোর্ট পর্যন্ত। সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতকে কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ আদালতের। ঘটনায় শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক জল্পনা। রাস্তার ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় এলাকাবাসী।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর ১ নং ব্লকের নন্দনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রবিদাসপুর গ্রামের। জানা গিয়েছে, রবিদাসপুর গ্রামের বাসিন্দা কার্তিক কাপাস ও তাঁর ভাইদের কৃষি জমি জোর করে দখল করে পুলিশ নামিয়ে রাতারাতি ঢালাই করে নেওয়া হয় দাসপুরের নন্দনপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফ থেকে। আর এই নিয়েই কাপাস পরিবার তরফ থেকে একাধিক বার প্রশাসনের দফতরে জানিয়েও কোনও সুবিচার না পেয়ে তারা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।বেশ কিছুদিন মামলা চলার পর কয়েকদিন আগেই কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে নির্দেশ দেয়, কোনও অজুহাত নয় অবিলম্বে জমির বাজার মূল্য অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দিতে হবে দুই নন্দনপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে। স্থানীয় সূত্রে খবর যার বাজার মুল্য কোটি টাকার সমান।

মামলাকারীদের দাবি, ২০২০ সালে করোনার সময় রবিদাসপুর মৌজায় তাঁদের প্রায় ৪৬ শতর কৃষি জমি জবরদখল করে ঢালাই রাস্তা নির্মাণ করেছে গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ।রাস্তা দখলের সময় সমস্ত প্রশাসনের দফতরে জানিও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ কাপাস পরিবারের সদস্যদের।

জানা গিয়েছে, দাসপুর ব্লক প্রশাসনের ভূমি দফতর সেই জমি কার এই তদন্ত করে রিপোর্টে জানিয়েছে। জমি রায়ত। এবং এটি কাপাস পরিবারের জমি। অবশেষে কোনও সুরাহা না হওয়ার জন্যই কাপাস পরিবারের সদস্যরা হাইকোর্টের দারস্থ হন সেই সময়। এরপর গত ১৫ই ফেব্রুয়ারি বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের সিঙ্গেল বেঞ্চে জমির বাজারমূল্য অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও, গ্রাম পঞ্চায়েত তা মেনে নেয়নি।

গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ উল্টে ওই রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করে। অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের  ডিভিশন বেঞ্চ সেই রায় বহাল রাখে, এবং নির্দেশ দেয় অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার। এমনকী পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে রাজ্য সরকারেরও পরামর্শ নিতে বলা হয়।

এ দিকে, বিষয়টি নিয়ে কাপাস পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে বিরোধী দল বাম, কংগ্রেস। তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে তারা গাজোয়ারির অভিযোগ তুলছেন। গ্রামের মানুষজন বলছেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। ফলত রাস্তা না থাকলে তাঁরা খুবই সমস্যায় পড়বেন।

অপরদিকে, এ বিষয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কল্যাণী দোলইয়ের দাবি, এখনও কোনও অর্ডার কপি তাঁর হাতে আসেনি। অর্ডার কপি আসলে তবেই তিনি বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসবেন। কিন্তু ওই রাস্তা দীর্ঘদিন ধরেই ওইখানে ছিল বলে দাবি করেছেন। অন্যদিকে, গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য তপন চৌধুরীর দাবি, ‘গ্রাম পঞ্চায়েতকে সমস্যায় ফেলার জন্যই এইসব বিষয়গুলি করছেন কাপস পরিবারের সদস্যরা। যখন রাস্তা হয় সেই সময় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ছিলেন কাপাস পরিবারের এক সদস্য। তখন ওই জায়গা দিয়েছিলেন রাস্তা করার জন্য।’

ঘটনার বিষয়ে বিজেপি ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক তপন মাইতি বলেন, ‘হাইকোর্ট একদম সঠিক রায় দিয়েছে। তৃণমূল না আইন মানে, না কোর্ট মানে কিছুই মানে না এরা। যার যেমন ইচ্ছা সে তেমন ভাবে চালচ্ছে এই রাজ্যকে। নিচ থেকে উপর দাদাগিরিতে চলছে।’ শুভাশীস কাপাস বলেন, ‘আমার রায়তি জায়গার উপরে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জোর করে একটি পাকা রাস্তা তৈরি করেছে। এই রাস্তা নির্মাণের কারণে আমরা স্থানীয় বিডিও, এসডিওকেও জানিয়েছিলাম। এরপর কোনও কাজ না হওয়ায় আমরা বাধ্য হয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। এরপর হাইকোর্ট রায় দেয় যে বাজারমূল্য অনুযায়ী জরিমানা দিতে হবে। তবে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ কোনও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।’