Ghatal: করুণ অবস্থা বন্য়া দুর্গতদের! গৃহপালিত পশুর সঙ্গে ঠাঁই মানুষের

Flood: দারিদ্রতা থাকলেও মাথা গোজার ঠাঁইটুকু ছিল।

Ghatal: করুণ অবস্থা বন্য়া দুর্গতদের! গৃহপালিত পশুর সঙ্গে ঠাঁই মানুষের
বন্যা দুর্গত পশ্চিম মেদিনীপুর
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 03, 2021 | 7:24 PM

পশ্চিম মেদিনীপুর: একে নিম্নচাপের বৃষ্টি তার উপর বাঁধের ছাড়া জল ভেসে গিয়েছে দক্ষিণবঙ্গের একাংশ। হাওড়া গ্রামীণ, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা, বাঁকুড়া, দুই মেদিনীপুর সমস্ত জায়গার ছবিটা প্রায় এক। বিঘের পর বিঘে জমি ভেসে গিয়েছে জলে। চারিদিকে শুধু হাহাকার আর কান্না। পুজোর আগে কষ্টে বহু মানুষ।

পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমা। দারিদ্রতা থাকলেও মাথা গোজার ঠাঁইটুকু ছিল। কিন্তু এখন বহু এলাকা প্লাবিত বন্যার জলে। ডুবেছে ঘরবাড়ি। শেষ সম্বলটুকু হারিছেন বহুমানুষ। অসহায় পরিবারগুলির আশ্রয়স্থল এখন রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে। কেউ কেউ রয়েছেন ত্রিপল টাঙিয়ে। অবস্থা এতটাই সঙ্গীহীন যে গৃহপালিত পশুদের সঙ্গে নিয়েই থাকতে হচ্ছে।

ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। এক গলা জলে দাঁড়িয়ে রয়েছেন মহিলা থেকে পুরুষ। বন্যার ত্রাণের জন্য হাহাকার করছেন সকলে। দূরে দাঁড়িয়ে একটি নৌকা সেখান থেকে দেওয়া হচ্ছে ত্রিপল ও বন্যার ত্রাণ সামগ্রী। সেই ত্রাণ নিতে নৌকার কাছে সাঁতরে যাচ্ছেন মহিলারা। হুড়োহুড়ি করছেন।

গতকাল, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন মন্ত্রী সৌমেন মিত্র। সেখানে গিয়ে দুর্গত মানুষের হাতে ত্রাণ তুলে দেন। আর তারপরই বৃষ্টি শুরু হয়ে যাওয়ায় গ্রামের মুল বাঁধটি পরিদর্শন না করেই ফিরে যান তিনি। আর এতেই হতাশ এলাকাবাসী। বাঁধ পরিদর্শনের পাশাপাশি মন্ত্রী তাঁদের অভাব অভিযোগগুলিও শুনবেন এমনটাই আশা করেছিলেন তারা। কিন্তু কোনও লাভ হল না।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনায় নদীর জলস্তর অনেকটাই কমেছে। নদীর জল কমলেও চন্দ্রকোণার দুটি ব্লকের ৬ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু এলাকা এখনও জলমগ্ন। প্লাবিত এলাকাগুলি থেকে জল নামছে ধীরগতিতে।

দাসপুর ১ ব্লকের রাজনগর ও নাড়াজোল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। এই নিয়ে চতুর্থ বার বন্যার কবলে ঘাটাল, দাসপুর, চন্দ্রকোণা। দীর্ঘ জলবন্দি অবস্থায় থেকে চরম দুর্ভোগে প্লাবিত এলাকার বাসিন্দারা।পানীয় জল, যাতায়াত, নিত্যদিনের কাজকর্ম থেকে ব্যবসায়ীদের ব্যবসারও প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে জানা যায়। যদিও প্রশাসনের তরফে দুর্গত এলাকায় প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে।

দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে আরও কিছুটা কমানো হল জল ছাড়ার পরিমাণ। শনিবার রাত দশটায় ছাড়া হয়েছে ১,২৬,২০০ কিউসেক জল ।

দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ আরও কিছুটা কমানো হল। শনিবার সকালে ছাড়া হচ্ছিল ১,৫৫,৪০০ কিউসেক জল। বেলায় আরও কিছুটা কমানো হয় জল ছাড়ার পরিমাণ। ১,৪৬,৪০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়। পরে আরও কমানো হয় জল ছাড়ার পরিমাণ।

শনিবার দুপুরে ছাড়া হয় ১,৩৬,২০০ কিউসেক জল। শনিবার সন্ধ্যেয় দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ছাড়া হচ্ছিল ১,২৯,৭০০ কিউসেক জল। রাত দশটা থেকে ছাড়া হচ্ছে ১,২৬,২০০ কিউসেক জল। নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায় দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে দফায় দফায় কমানো হচ্ছে জল ছাড়ার পরিমাণ । শনিবার সন্ধ্যেয় দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ছাড়া হচ্ছে ১,২৬,২০০ কিউসেক জল ।

সেচ দফতর সূত্রে জানা গেছে বৃষ্টি না হলে ধীরে ধীরে আরও কমানো হবে জল ছাড়ার পরিমাণ। গত ১২ ঘণ্টায় দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির প্রকোপ কিছুটা কমেছে। কিন্তু ঝাড়খণ্ডে অতি বৃষ্টির জেরে ডুবতে বসেছে এ রাজ্যের একাধিক জেলা। জলাধারগুলি থেকে হু-হু করে জল ছাড়ছে ডিভিসি। ফলে যা হওয়ার হয়েছে সেটাই। পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের বেশ কিছু অংশ-সহ বাঁকুড়া, হুগলি ও হাওড়ার একাধিক ব্লক পুরোপুরি জলের তলায়। বন্যা পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গীন হয়ে উঠেছে যে এ বার সেনা নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন।

আরও পড়ুন: Ghatal Flood: চারপাশে জল, অন্ধকারে নৌকা নিয়ে প্রসূতির দরজায় পৌঁছল পুলিশ