‘বাংলায় গণহত্যা দেখলে মনে হয়, রাস্তায় শাড়ি পরা মুসোলিনি দৌড়াদৌড়ি করছেন’, নিশানায় মমতা, তোপ সায়ন্তনের

মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে, বঙ্গভোটে গেরুয়া শিবিরের ভরাডুবি প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন সায়ন্তনবাবু। তিনি বলেন, "পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে রাজ্য়বাসী দেখেছে সন্ত্রাসের নমুনা। তখন, আমাদের বিধায়কের সংখ্যা তিন। আর বোধহয় দুজন সাংসদ। সেখান থেকে এই রাজ্যে আজ সাতাত্তর জন বিজেপির বিধায়ক।"

'বাংলায় গণহত্যা দেখলে মনে হয়, রাস্তায় শাড়ি পরা মুসোলিনি দৌড়াদৌড়ি করছেন', নিশানায় মমতা, তোপ সায়ন্তনের
মমতাকে তোপ সায়ন্তনের, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 01, 2021 | 11:30 PM

কোচবিহার: ভোটপর্ব মিটলেও রাজ্যে জারি সন্ত্রাস। শাসক শিবিরের আক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন বিজেপির (BJP) কর্মী সমর্থকরা এমন অভিযোগও বারবার তুলেছে গেরুয়া শিবির। মঙ্গলবার, তুফানগঞ্জে, বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর ও লুঠপাঠের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এদিন, আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ঘুরে দেখেন বিজেপির রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসু (Sayantan Basu) ও তুফানগঞ্জের বিধায়ক মালতী রাভা রায়।

এদিন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, “ভোটের পর থেকেই বাংলায় গণহত্যার জোয়ার বইছে। বাংলার এই অবস্থা দেখলে যে কেউ মনে করবে রাস্তায় শাড়ি পরা মুসোলিনি দৌড়াদৌড়ি করছেন। তুফানগঞ্জের নাককাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের দুশো পাঁচ নম্বর বুথের বিজেপি কর্মীদের উপর যেভাবে সন্ত্রাস চালানো হয়েছে, বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে তা মেনে নেওয়া যায় না। এই সময়ে আমরা কর্মীদের পাশে আছি।” বিজেপি নেতার আরও অভিযোগ, ওই এলাকারই বাসিন্দা হারাধন দাসের পানের দোকানে গিয়ে দশ হাজার টাকা চায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। টাকা না পেলে দোকান বন্ধের হুমকিও দেয় তারা এমনটাই অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের।

মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে, বঙ্গভোটে গেরুয়া শিবিরের ভরাডুবি প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন সায়ন্তনবাবু। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে রাজ্য়বাসী দেখেছে সন্ত্রাসের নমুনা। তখন, আমাদের বিধায়কের সংখ্যা তিন। আর বোধহয় দুজন সাংসদ। সেখান থেকে এই রাজ্যে আজ সাতাত্তর জন বিজেপির বিধায়ক। নিঃসন্দেহে এ আমাদের জয়। হয়ত আমরা হেরে গিয়েছি, কিন্তু আটত্রিশ শতাংশ মানুষ আমাদের নির্বাচন করেছেন। বাংলায় কি কেবল বাষট্টি শতাংশের থাকার অধিকার আছে! বাকিদের নেই! গোটা বাংলায় আমাদের এককোটির উপর কর্মী আছেন। তাই লড়াইটা এতটাও সহজ নয়।” ভোটের মুখে প্রার্থী পদ না পেয়ে তৃণমূলের অনেক বিধায়কই দল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ভোট মিটতেই সোনালী গুহ, সরলা মূর্মূ, অমল আচার্য্যের মতো বিধায়ক ফের ‘ঘরে ফেরার’ আবেদন জানিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আবেগঘন চিঠিও দিয়েছিলেন। সেই প্রসঙ্গে এদিন, সায়ন্তন বলেন, “হাতির পিঠের থেকে একটা পিঁপড়ে চলে গেলে হাতির কিছু হয় না। যাঁরা দলে এসে ভোটের পর দল ছেড়েছেন তাঁদের বিজেপির কোনও সভা সমিতি, মিটিং মিছিলে দেখা যায়নি। তাঁরা ভোটের আগে এসেছিলেন, ভোটের পর নিজের অবস্থা বুঝে সরে গিয়েছেন। তাই তাঁদের কথা ধরে বসে থাকার কিছু নেই। যাঁরা বরাবর বিজেপি করেছেন তাঁরা মন দিয়ে এই পার্টিটাকেই ভালবেসেছেন। এই পার্টির জন্যই কাজ করেছেন।”

উল্লেখ্য়, একুশের বঙ্গ নির্বাচনে, বাংলায় সবুজ ঝড় তুলে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২১৩ টি আসনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল, বিজেপি পেয়েছে ৭৭ টি আসন। লক্ষ্যণীয় ভাবে, এ বার বাংলায় ‘বামশূন্য’ বিধানসভা। ২০১৯- এ লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই কার্যত উত্তরবঙ্গে প্রতাপ বেড়েছে বিজেপির। এ বারেও, বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে ভাল ফল করেছে গেরুয়া শিবির।

আরও পড়ুন: ‘আপনাকে চিঠি লিখেছিলাম, জেলাশাসককেও, উত্তর মেলেনি’, করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীকে পত্রাঘাত অধীরের