TMC: স্কুলে স্যানিটাইজার টানেল বসানো নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর ধুন্ধুমার, আক্রান্ত রাজের শ্বশুর

Purba Burdwan: আক্রমণের মুখে পড়ে দেবপ্রসাদ বাবুর সঙ্গে থাকা সেখ হায়দার আলি, সেখ খোকন, শশীরাম ও গোবিন্দা মাল নামে চার তৃণমূল কর্মী আহত হন। অন্যদিকে স্যানিটাইজার টানেলটিও ক্ষতিগ্রস্ত করা হয় বলে অভিযোগ।

TMC: স্কুলে স্যানিটাইজার টানেল বসানো নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর ধুন্ধুমার, আক্রান্ত রাজের শ্বশুর
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে আক্রান্ত রাজের শ্বশুর। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 16, 2021 | 12:35 AM

পূর্ব বর্ধমান: স্কুলে স্যানিটাইজার টানেল বসানোকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের (TMC) দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ, আর তাতে আহত হলেন তৃণমূল বিধায়ক তথা চিত্র পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর (Raj Chakraborty) শ্বশুরমশাই সহ পাঁচ তৃণমূল কর্মী (TMC Worker)। বিধায়ক, পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর শ্বশুর এবং অভিনেতা শুভশ্রীর বাবা দেবপ্রসাদ গাঙ্গুলিকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে বর্ধমান পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর মহম্মদ আলি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এদিকে দেবপ্রসাদবাবু নিজেকে চার নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের কনভেনার বলে দাবি করেছেন। ফলতঃ দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা ঘিরে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল।

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার সকালে। দেবপ্রসাদ গাঙ্গুলির শ্যালিকা অনাবাসী ভারতীয় অনিতা গাটকারি স্থানীয় দুটি স্কুলে স্যানিটাইজার টানেল করে দেওয়ার জন্য মনস্থির করেন। সেইমত দেবপ্রসাদ বাবু বর্ধমান শহরের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের  বর্ধমান দুবরাজদিঘি হাইস্কুল ও ছয় নম্বর ওয়ার্ডের রেলওয়ে বিদ্যাপীঠ স্কুলে যোগাযোগ করেন। দেবপ্রসাদ বাবুর দাবি, স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিয়েই তাঁর শ্যালিকা ও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে এদিন সকালে হাইস্কুলে স্যানিটাইজার টানেল লাগাতে যান।

অভিযোগ, সেই সময় চার নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলার মহম্মদ আলি ও তার ভাইপো তৃণমূল কংগ্রেসের যুবনেতা নুরুল আলম তাঁদের সেই কাজে বাধা দেন। ম্যানেজিং কমিটির অনুমতি না নিয়ে কারও ব্যক্তিগত নামে স্যানিটাইজার টানেল স্কুলে লাগানো যাবে না বলে আপত্তি জানান তাঁরা। এই বিতণ্ডার মধ্যেই মহম্মদ আলি ও নুরুল আলমের নেতৃত্বে একদল তৃণমূল কর্মী তৃণমূলের তারকা বিধায়কের শ্বশুরের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তিনি জানান, বন্দুক, লাঠি ও রড নিয়ে তাঁদের উপর আক্রমণ চালানো হয়। এই আক্রমণের মুখে পড়ে দেবপ্রসাদ বাবুর সঙ্গে থাকা সেখ হায়দার আলি, সেখ খোকন, শশীরাম ও গোবিন্দা মাল নামে চার তৃণমূল কর্মী আহত হন। স্যানিটাইজার টানেলটিও ক্ষতিগ্রস্ত করা হয় বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে দেবপ্রসাদ বাবু দলের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।

এদিকে তাঁদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে নুরুল আলম জানান, “উনি কোনও অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগত একজনের নামে স্যানিটাইজার টানেল লাগাতে এসেছিলেন। কোনও সরকারি স্কুলে কাজ করাতে গেলে ম্যানেজিং কমিটির অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হয়। উনি তা না করে গায়ের জোরে এলাকায় নিজের কর্তৃত্ব তুলে ধরতে এই কাজ করতে এসেছিলেন। তাই তাঁকে বাধা দেওয়া হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটিতে আলোচনা হবার পর স্যানিটাইজার ট্যানেল লাগানোর ব্যাপারে সিধান্ত নেওয়া হবে”। নিজেকে ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বলেও দাবি করেন নুরুল আলম।

যদিও স্কুলের প্রধান শিক্ষক নবকুমার মালিক জানিয়েছেন, “দেবপ্রসাদ বাবু আমার কাছে স্যানিটাইজার টানেল লাগানোর জন্য লিখিত আবেদন করেছিলেন। ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে আমি ওঁনাকে এটি করতে বলেছিলাম। যেটা ঘটল, সেটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক”।

আমেরিকার বাসিন্দা অনিতা গাটকারি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। কোনও উন্নয়নমূলক কাজ করতে এসে এভাবে হেনস্থার মধ্যে পরতে হবে তার এই ধারণা ছিলনা বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, “যেখানে সদূর আমেরিকায় আমরা ভারতীয় কালচার ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে থাকি, সেখানে এই রাজ্যে কোনও উন্নয়নমূলক কাজ করতে গেলে এই ধরনের ব্যবহার আমাকে ব্যথিত করেছে”। এ নিয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ করবেন বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: ‘বাংলার মেয়ের রাজত্বে মরেও শান্তি নেই’, বিজেপি কর্মীর মৃত্যুতে তীব্র আক্রমণ শুভেন্দুর