‘এখন আমায় ভুলে গেলেন!’ ঘাড়ধাক্কা খেতেই চোখে জল যুবনেতার, ‘সিন ক্রিয়েট’ বলে ধমক দিলীপের
BJP Yuva Morcha Protest: বৈঠক সেরে তড়িঘড়ি বেরিয়ে যুবনেতার সামনে দেখা করেন দিলীপ ঘোষ।
পূর্ব বর্ধমান: সদ্য় সমাপ্ত বিধানসভায় বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। বঙ্গ মসনদ তো হাতে আসেইনি, উপরন্তু সাতাত্তরটি আসন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে পদ্ম শিবিরকে। মঙ্গলবার, বর্ধমান জেলা পার্টি অফিসে সাংগঠনিক বৈঠকে আসেন বিজেপির রাজ্য় সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেখানে প্রবেশাধিকার না পেয়ে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন জেলা বিজেপির যুব মোর্চার (BJP Yuva Morcha) সহ-সভাপতি ইন্দ্রনীল গোস্বামী। পাল্টা ধমক দিলীপের।
বিজেপি যুব নেতার অভিযোগ, বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের কারণ নিষ্ঠাবান কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার না দিয়ে কিছু তোলাবাজ, ‘পেটোয়া’ কর্মীদের উপর অধিক আস্থা রাখা। এরফলে, যাঁরা আদি নেতা, যাঁরা সংগঠনের ভাল চান তাঁরা কাজ করতে পারছেন না। থমকে যাচ্ছে কাজ। এদিন, বিজেপির রাজ্য সভাপতির সঙ্গে সেই বিষয়ই কথা বলতে যাচ্ছিলেন ইন্দ্রনীল। কিন্তু, বিজেপির সেই ‘পেটোয়া কর্মীরাই’ তাঁর পথ আটকান বলে অভিযোগ। ফলে সংবাদমাধ্য়মের সামনেই নিজের ক্ষোভ উগড়ে দেন ইন্দ্রনীল।
চোখের জলে ভাসতে ভাসতে ইন্দ্রনীল (BJP Yuva Morcha leader) বলেন, “দিলীপবাবু এখন আমায় ভুলে গিয়েছেন। আমার বাড়িতে এসে থেকেছেন, খেয়েছেন। আমার বউ রান্না করে দিয়েছে। আর সেই দিলীপবাবুর বৈঠকেই আমায় আজ ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। সেখানে ঢুকত গেলে আটকে দেওয়া হচ্ছে। দলে নতুন যেসব পেটোয়া নেতারা যোগ দিয়েছে তারা সংগঠন চালাচ্ছে। আমার মতো পুরনো কর্মকর্তাদের কোনও জায়গা নেই, সম্মান নেই। আমাকে আজ বৈঠক থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, আমি যদি ঢুকতে যাই আমায় খুন করে দেওয়া হবে। দিলীপবাবুর সঙ্গে দেখা করতে পারব না। তৃণমূলের লোক এসে আমার ঘর ভেঙে দিয়েছে। তাও আমি দলের জন্য লড়াই করে গিয়েছি। আমি দিলীপবাবুকে সম্মান করি, কিন্তু এমন আচরণ ফেরত পাব আশা করিনি। আমি দল ছেড়ে প্রয়োজনে স্বাধীনভাবে প্রতিবাদ মঞ্চ গড়ব। কিন্তু এখানে থাকব না।”
এরপরেই বৈঠক সেরে তড়িঘড়ি বেরিয়ে যুবনেতার সামনে দেখা করেন দিলীপ ঘোষ। সংবাদমাধ্যমের সামনেই ‘ধমক’ দিয়ে বলেন, “পুরনো কর্মী হয়ে এমন কাজ করো কী করে! কেন সিন ক্রিয়েট করছ? জানো না, যে এইরকম করা যায় না। আমি কি বলেছি যে কথা বলা যাবে না বা আমি কথা বলব না! সময় দেবে তো!” এরপর অবশ্য দিলীপবাবুর সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন ইন্দ্রনীল। তারপরেই সুর নরম করে বলেন, “আমি রাগের মাথায় কিছু ভুল কথা বলে ফেলেছিলাম। আর কখনও বলব না। আসলে আমার খুব খারাপ লেগেছিল। দিলীপবাবুর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমি এই সংগঠনেই আছি। বিজেপি-ই করব মন দিয়ে। আমার ভুল হয়েছিল। দিলীপবাবু আমায় বুঝিয়ে বলেছেন।”
জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক এস আর বন্দ্যোপাধ্যায় যদিও বলেছেন, “আজকের বৈঠকে যুব মোর্চার নেতাকে ডাকা হয়নি। সেইজন্য ইন্দ্রনীলকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ব্যক্তিগত ক্ষোভকে দল প্রশ্রয় দেয় না। ওঁকে বোঝানো হয়েছে ওঁর ভুলটা কোথায়। দল যা বলবে সেই সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। কারোর ব্যক্তিগত মতের উপর ভিত্তি করে কোনও পদ দেওয়া হয় না। আর তা নিয়ে এমন কোনও মন্তব্য করা উচিত নয় যা দলবিরোধী।” ঘটনায়, স্থানীয় শাসক শিবিরের দাবি, ভোটে পরাজয়ের পর বিজেপি নিজেদের অবস্থান বুঝতে পারছে না। এ আসলে আদি-নব্য বিজেপির দ্বন্দ্ব। আরও পড়ুন: ‘কাল যা পদ্মফুল, আজ তা জোড়াফুল!’ দুবরাজপুরে রাতারাতি ভোল বদল দলীয় কার্যালয়ের