Aushgram: আউশগ্রামের দেবী নীলাইচণ্ডীর ৬০০ বছরের পুরনো মূর্তি ফিরল স্বস্থানে, ৩ বছরের ‘রহস্য’ থেকেই গেল

Aushgram: ২০১৯ সালের শেষ দিকে দেবীর মূর্তি চুরি গিয়েছিল সেই বটগাছের নীচ থেকে। পুলিশকে জানানোও হয়েছিল। অনেক খোঁজাখুঁজি হয়েছিল। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি এতদিন। প্রায় তিন বছর পর খোঁজ মিলল দেবীর।

Aushgram: আউশগ্রামের দেবী নীলাইচণ্ডীর ৬০০ বছরের পুরনো মূর্তি ফিরল স্বস্থানে, ৩ বছরের 'রহস্য' থেকেই গেল
গ্রামে ফিরলেন দেবী নীলাইচণ্ডী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 07, 2022 | 11:36 PM

আউশগ্রাম: পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম এলাকার ছোড়া কলোনি। সেখানেই বছরের পর বছর ধরে পূজিতা হয়ে আসছিলেন দেবী নীলাইচণ্ডী। কথিত আছে, দেবী এখানে খুব জাগ্রতা। দেবী নীলাইচণ্ডীর একটি প্রস্তরমূর্তি রয়েছে এই গ্রামে। লোকমুখে কথিত রয়েছে, প্রায় ৬০০ বছরের প্রাচীন এই প্রস্তরমূর্তি। দেবীর এখানে কোনও মন্দির নেই। এলাকার একটি বটগাছের নীচেই পূজিতা হতেন দেবী নীলাইচণ্ডী। ২০১৯ সালের শেষ দিকে দেবীর মূর্তি চুরি গিয়েছিল সেই বটগাছের নীচ থেকে। পুলিশকে জানানোও হয়েছিল। অনেক খোঁজাখুঁজি হয়েছিল। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি এতদিন। প্রায় তিন বছর পর খোঁজ মিলল দেবীর। গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, স্বয়ং দেবীর মহিমায় বিগ্রহটি আবার ফিরে এসেছে।

গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, এই দেবী মূর্তি নাকি খুবই জাগ্রত। অতীতে সেখানে একটি মন্দির তৈরির পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু গ্রামের বয়স্করা জানিয়েছিলেন, দেবী নীলাইচণ্ডী গাছের তলাতেই পূজিতা হন। সেই কারণে আর মন্দির তৈরি করার পরিকল্পনা এগোয়নি। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সঞ্জীব বিশ্বাস জানাচ্ছেন, “২০১৯ সালের শেষদিকে মূর্তিটি চুরি হয়ে গিয়েছিল। তারপর থেকে স্থানীয় থানা, বিডিও, এসডিও, পুলিশ সুপার, জেলাশাসক এমনকী মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও চিঠি মারফত জানানো হয়েছিল। পুলিশ আমাদের দেবীমূর্তি উদ্ধার করে দিতে পারেনি। অবশেষে গত রবিবার আমরা খবর পাই, বীরভূম জেলার ইলামবাজার থানার ভাগাডাঙা আদিবাসী পাড়ায় মঙ্গল টুডুর বাড়িতে কেউ মূর্তিটি রেখে দিয়ে চলে গিয়েছেন। মঙ্গল টুডুর একটি কালী ও মনসার মন্দির আছে, সেই মন্দিরেই কেউ বা কারা সকলের অলক্ষে মূর্তিটি রেখে দিয়েছে।”

সেই খবর পাওয়া মাত্রই ছোড়া কলোনির বাসিন্দারা আউসগ্রামের ছোড়া ফাড়িতে বিষয়টি জানান। আউসগ্রাম পুলিশ ইলামবাজার থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরপর ছোড়া এলাকার গ্রামবাসীরা ইলামবাজার থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ভাগাডাঙায় গিয়ে পৌঁছায়। সেই আদিবাসী পাড়ায় গিয়ে যোগাযোগ করা হয় মঙ্গল টুডুর সঙ্গে। তাঁকে জানানো হয় গোটা বিষয়টি। সব কথা শুনে মঙ্গল টুডুও নীলাইচন্ডীর মূর্তি ছোড়া কলোনির বাসিন্দাদের হাতে তুলে দেন।

তবে কীভাবে এই মূর্তি এত দূরে পৌঁছল, তা খতিয়ে দেখতে পুলিশের কাছে আবেদন করেন তাঁরা। ছোড়া ফাড়ির দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার পঙ্কজ নস্কর জানান,”মূর্তি চুরির অভিযোগ গ্রামবাসীরা করেছিলেন। আমাদের তদন্ত চলছিল। গতকাল গ্রামবাসীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা ইলামবাজার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করি। ইলামবাজার থানার পুলিশ গ্রামবাসীদের সঙ্গে গিয়ে মূর্তি উদ্ধার করে।” মূর্তি চুরির তদন্ত চলবে বলেও আশ্বাস দেন পঙ্কজ বাবু। এদিকে দেবী গ্রামে ফিরতেই উৎসবের চেহারা নিয়েছে গোটা এলাকায়। শোভাযাত্রা করে দেবীকে নিয়ে আসা হয় গ্রামে। আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে আবার গাছের নীচে দেবীর পুজো শুরু হবে। পাশাপাশি ওই দেবী মূর্তি যাতে আবারও খোয়া না যায়, তার জন্য সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরাও লাগানো হবে বলে জানান স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য।