Hand Craft: কচুরিপানার ঝুড়ি থেকে ফুলদানি, মমতার কথাকে সত্যি করে শৌখিন সামগ্রী বানিয়ে তাক লাগাচ্ছেন গ্রামের শিল্পীরা

Purba Bardhaman: পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলির বিদ্যানগরে বড়কোবলা গ্রাম। সেখানে গেলেই দেখা মিলবে এই শিল্পের। মহিলাদের হাতের ছোঁয়ায় একের পর এক কচুরিপানা দিয়ে প্রস্তুত হচ্ছে বিভিন্ন দ্রব্য।

Hand Craft: কচুরিপানার ঝুড়ি থেকে ফুলদানি, মমতার কথাকে সত্যি করে শৌখিন সামগ্রী বানিয়ে তাক লাগাচ্ছেন গ্রামের শিল্পীরা
কচুরীপানা দিয়ে তৈরি দ্রব্য (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 29, 2022 | 3:41 PM

কৌশিক দত্ত

কয়েকদিন আগের কথা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরামর্শ দিয়েছিলেন কচুরিপানা ও কাশফুল দিয়ে জিনিস তৈরির কথা। তাঁর সেই বক্তব্যের পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মিমের বন্যা বয়ে যায়। কিন্তু প্রত্যন্ত গ্রামে এই কচুরিপানা দিয়েই তৈরি হচ্ছে ঘর সাজানোর জিনিস। তাও আবার মুখ্যমন্ত্রীর এই পরামর্শের আগে থেকেই। শৌখিন আয়না, পাপোশ, ফুলদানি, ব্যাগ, ফুলের সাজি, ফল রাখার পাত্র আরও কত কী! আর ক্ষুদ্র হস্তশিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে বেঁচে রয়েছে বেশ কতগুলি পরিবার।

পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলির বিদ্যানগরে বড়কোবলা গ্রাম। সেখানে গেলেই দেখা মিলবে এই শিল্পের। মহিলাদের হাতের ছোঁয়ায় একের পর এক কচুরিপানা দিয়ে প্রস্তুত হচ্ছে বিভিন্ন দ্রব্য। যা তৈরি করে স্বনির্ভর হচ্ছেন এই গ্রামের মহিলারা। উপার্জনের মুখ দেখছে কয়েকটি পরিবার।

রাজু বাগ। তিনি বিদ্যানগরের বাসিন্দা। পেশায় একজন ডিজাইনার। পড়াশোনা করেছেন শান্তিনিকেতনের ডিজাইন বিভাগে। তাঁর কথায়, করোনার সময়ে বাইরের রাজ্য থেকে কাজ হারিয়ে বাড়ি ফিরে আসতে হয় অনেককে। রাজু নিজেও কাজ হারিয়ে বাড়িতে ফেরেন। তাঁর মতো অনেকেই রোজগারহীন। যেহেতু কাজ নেই, সেই কারণে অবসর সময় কাটে বাড়ির সামনে। মস্ত বড়ো বিলের ধরে বসে।

এরপর একদিন রাজু বাগের মাথায় আসে গ্রাম গঞ্জে জলাশয়ের কচুরীপানা থেকে কি কিছু বানানো যায়? যা থেকে এলাকার মানুষজনের রোজগার হতে পারে! বাড়ির সামনেই মস্তবড়ো বিল। যাতে অফুরন্ত কচুরীপানা। সেই মতই কিছু কচুরীপানা তুলে রৌদ্রে শুকিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে রাজু বানিয়ে ফেলেন একের পর এক শৌখিন দ্রব্য।

পরবর্তীতে রোজগারহীন পরিবারের মহিলাদের বিশেষ ট্রেনিং দিয়ে কচুরীপানা হস্তশিল্প শুরু হয়। বর্তমানে কচুরীপানার বিভিন্ন দ্রব্য অনুযায়ী মহিলারা দৈনিক রোজগার করেন ২০০-২৫০ টাকা। এখানে তৈরি হওয়া কচুরীপানার দ্রব্য বিক্রির জন্য পৌঁছে যায় রাজ্য ছাড়িয়ে হায়দ্রাবাদ, জামসেদপুর,কলকাতা সহ বিভিন্ন জায়গায়। আর চাহিদা তুঙ্গে।

বর্তমানে ৩০-এর বেশি মহিলারা ট্রেনিং নিয়ে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। এলাকার পুরুষরা পেয়েছেন বাড়তি রোজগার। কারণ গ্রামে জলে ডোবায় আগাছার মতো ফুটে থাকে কচুরীপানা। যা তুলে বিক্রি করলেই কেজি প্রতি মেলে ৩0 টাকা। রাজু বাগ জানাই প্রকল্পে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ তাঁকে বিশেষ ভাবে সাহায্য করেছেন।খাদি সংস্থা থেকে এখানে তৈরি কচুরীপানার দ্রব্য বিক্রিতে ও কিনতে পাশে দাঁড়িয়েছে।