টেন্ডার নিয়ে ঝামেলা, আউশগ্রামে তৃণমূল নেতা খুনে গ্রেফতার দলের তিন নেতা-কর্মী
TMC Murder: গত মঙ্গলবার খুন হন আউশগ্রামের দেবশালা পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামল বক্সির ছেলে চঞ্চল বক্সি। তিনি দেবশালা অঞ্চলের প্রাক্তন যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন।
বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমানের (Purbo Bardhaman) আউশগ্রামে (Ayushgram) তৃণমূল (TMC) কংগ্রেসের যুব নেতা খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হল দলেরই তিন কর্মীকে। ধৃতদের নাম আসানুর মোল্লা, মনি হোসেন মোল্লা এবং বিশ্বরূপ মণ্ডল। স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
গত মঙ্গলবার খুন হন আউশগ্রামের দেবশালা পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামল বক্সির ছেলে চঞ্চল বক্সি। তিনি দেবশালা অঞ্চলের প্রাক্তন যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। ঘটনার দিন দলেরই কার্যকরী সভাপতি শেখ লালনের বাড়িতে বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন শ্যামল ও তাঁর ছেলে চঞ্চল। ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যায়।
বাড়ি ফেরার পথে একটি জঙ্গল পড়ে। সেদিন সেই জঙ্গলেই অপেক্ষা করছিল আততায়ীরা। বাবা-ছেলে জঙ্গলের রাস্তায় ঢুকতেই দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। সে সময় আউশগ্রামের গেঁড়াইয়ের জঙ্গলে ভাতকুণ্ডা রোডে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। হাতে ও পিঠে গুলি লাগে চঞ্চল বক্সির। সঙ্গে সঙ্গে বাইক নিয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন বাবা ও ছেলে। ঘটনার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছন দলীয় কর্মীরা। তাঁরা তাঁদের উদ্ধার করে জামতাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
তৃণমূল কংগ্রেসের ভাল্কী অঞ্চল সভাপতি অরূপ মিধ্যা আউশগ্রাম ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৈয়দ হায়দার আলি দাবী করেছিলেন বিজেপি আশ্রিত দুস্কৃতিরা গুলি চালিয়েছে। তাঁর যুক্তি ছিল, দুয়ারে সরকারে মানুষের ভিড় দেখে হিংসা হচ্ছে বিজেপির। আর তার থেকেই হামলা। কিন্তু তদন্তে পুলিশের হাতে উঠে আসে অন্য তথ্য। তৃণমূল নেতা খুনের নেপথ্যে উঠে আসে দলেরই নেতাকর্মীর নাম।
সেদিনের ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের নাম আসানুর মোল্লা, মনি হোসেন মোল্লা এবং বিশ্বরূপ মণ্ডল। ধৃতদের মধ্যে আসানুরের বাড়ি কলমডাঙ্গা গ্রামে। তিনি দেবশালা অঞ্চলের যুব তৃণমূল সভাপতি পদে রয়েছেন এবং দেবশালা পঞ্চায়েতের সদস্যও। মনি হোসেন মোল্লাও দেবশালা পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। তাঁর বাড়ি ভাতকুণ্ডা গ্রামে। দেবশালা অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি তথা লবনধার গ্রামের বাসিন্দা হিমাংশু মণ্ডলের ছেলে বিশ্বরূপ মণ্ডলও গ্রেফতার হয়েছে ।
জানা গিয়েছে, একটি টেন্ডার নিয়ে দীর্ঘদিনের বচসা চলছিল তাঁদের মধ্যে। সেই পুরনো বিবাদ থেকেই আক্রোশ ছিল। তার থেকেই হামলা বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে পুলিশ। আজ, সোমবার ধৃতদের আদালতে পেশ করা হবে। ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে পুলিশ। জেরায় আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
শুধুমাত্র এই কারণ, নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, অন্য কোনও মাথা সক্রিয়, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: অনুব্রতর আশঙ্কাই সত্যি! আউশগ্রামের তৃণমূল নেতা খুনে গ্রেফতার দলেরই ৩ জন