Raju Jha Murder Case: রাজুকে গুলি করার সময় গাড়িতেই ছিল লতিফ, তারপরেই হঠাৎ ‘গায়েব’! চালকের চাঞ্চল্যকর বয়ান
Raju Jha Murder Case: নুরের বক্তব্য অনুযায়ী, এরপরই ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ আসে। এরপর তাঁরা অনাময় হাসপাতালে যান। ব্রতিনের চিকিৎসা সেখানে হচ্ছিল।
শক্তিগড়: কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা যে গাড়িতে খুন হন, সেই গাড়িতেই ছিলেন আব্দুল লতিফও। TV9 বাংলার হাতে এসেছে মাফিয়া খুনের FIR কপি। তাতে দেখা যাচ্ছে, ওই লতিফের গাড়ির চালক নুর হোসেন স্পষ্ট তাঁর বয়ানে লিখেছেন, গাড়িতে ঘটনার কিছু আগে পর্যন্তও আব্দুল লতিফ ছিলেন। কিন্তু খুনের পর আর লতিফকে দেখতে পাননি তিনি। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, রাজু ঘনিষ্ঠ ব্রতিন মুখোপাধ্যায় ও গাড়িচালক নুর হোসেন এই খুনের মামলায় সবথেকে বড় সাক্ষী। অথচ সেই দু’জনকে হাতে পাওয়ার পরও জেলা পুলিশ দাবি করছিল, গাড়িতে তিন জন ছিল। প্রাথমিকভাবে এমনই দাবি করেছিলেন পূর্ব বর্ধমানের জেলা পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন। কিন্তু সেই বক্তব্যই নস্যাৎ করছেন ঘটনার সাক্ষী গাড়িচালক নুর হোসেন। তিনি ইলামবাজারের গরু ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফের গাড়িচালক। তাঁর বয়ান অনুযায়ী, ঘটনার সময়ে গাড়িতে ছিলেন আব্দুল লতিফ। রাজু ঝা সামনে তাঁর পাশের আসনে বসেছিলেন। আর পিছনের সিটে ছিলেন আব্দুল লতিফ।
নুর হোসেনের বাড়ি দুবরাজপুরে। গত পাঁচ বছর ধরে তিনি ইলামবাজারে আব্দুল লতিফের গাড়ি চালাচ্ছেন। তাঁর করা এফআইআর-এ স্পষ্ট বলা হয়েছে, দুপুর দেড়টার সময়ে ইলামবাজার থেকে আব্দুল লতিফকে নিয়ে তিনি রওনা দেন দুর্গাপুরের দিকে। দুর্গাপুরের ভিরিঙ্গি মোড়ে ব্রতিন মুখোপাধ্যায়কে (রাজু ঝা ঘনিষ্ঠ) গাড়িতে তোলেন। ব্রতিনকে নিয়ে তাঁরা পৌঁছন রাজু ঝার ফুরচুন হোটেলে। সেখানে ব্রতিন ও আব্দুল লতিফ নেমে যান। ৬টা ১০ মিনিটে রাজু ঝা, ব্রতিন, আব্দুল লতিফ তিনজনে গাড়িতে ওঠেন। কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন। নুর দাবি করেছেন, ৭টা ৩৫ মিনিটে রাজু ঝার নির্দেশ মতো শক্তিগড়ে ঝালমুড়ির দোকানের সামনে দাঁড়ান। ঝালমুড়ি কিনে খান তাঁরা। সে সময়ে ব্রতিন মুখোপাধ্যায় নুরকে বলেছিলেন, একটা গুটখা আনতে। সেটা আনতেই তিনি গাড়ি থেকে নেমেছিলেন। সেটা নিয়ে যখন ফিরছেন, তখনই দেখেন, তিন জন গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে। মূলত দুদিক থেকে গাড়ির জানালা লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে। আততায়ী তিন জন বলে দাবি নুরে। গাড়ির ভিতরেই লুটিয়ে পড়েন রাজু ঝা। ব্রতিন গুলিবিদ্ধ হন।
নুরের বক্তব্য অনুযায়ী, এরপরই ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ আসে। এরপর তাঁরা অনাময় হাসপাতালে যান। ব্রতিনের চিকিৎসা সেখানে হচ্ছিল। আর সেসময়ে আব্দুল লতিফ কার্যত গায়েব হয়ে গিয়েছিলেন। সেটা এফআইআর-এ লেখা রয়েছে। হঠাৎ করে আব্দুল লতিফের উধাও হয়ে যাওয়া এই হত্যাকাণ্ডের সবথেকে বড় রহস্য বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
কিন্তু এসবের পরেও একটা বিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। জেলা পুলিশের তরফ থেকে কেন বারবার আব্দুল লতিফকে আড়াল করার চেষ্টা চলছিল? কেন পুলিশ গাড়িতে লতিফের উপস্থিতি স্বীকার করছিল না? আরও জানা যাচ্ছে,দুর্গাপুরের হোটেল থেকে বেরনোর সময়ে লতিফের কাছে দুটো ব্যাগ ছিল। সেই ব্যাগ নিয়েই লতিফ উধাও হয়ে যান। তাহলে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি আব্দুল লতিফ আগে থেকেই জানতেন, তাই আলাদা কোনও গাড়ির ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন?
কয়লা পাচার কাণ্ডে আব্দুল লতিফকে তলব করেছিল সিবিআই-ও। কিন্তু লতিফ সিবিআই-এর চোখেও ফেরার ছিল। কয়লা মাফিয়া খুনে সেই লতিফ যোগই গাঢ় থেকে গাঢ়তর হচ্ছে।