Fund Scam: কাজই হয়নি, অথচ লক্ষ লক্ষ টাকা পেয়ে গিয়েছেন ঠিকাদার, এবার মিড ডে মিলের কাজে নয়ছয়

Galsi: গলসি-১ ব্লকের ১৪২টি স্কুলের জন্য ১০ হাজার টাকা করে ১৪ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়।

Fund Scam: কাজই হয়নি, অথচ লক্ষ লক্ষ টাকা পেয়ে গিয়েছেন ঠিকাদার, এবার মিড ডে মিলের কাজে নয়ছয়
মিড ডে মিল প্রকল্পে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 20, 2022 | 4:31 PM

পূর্ব বর্ধমান: বারবার দুর্নীতিতে জড়িয়ে যাচ্ছে এ রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা। কখনও নিয়োগ দুর্নীতি, কখনও বদলির দুর্নীতি, কখনও আবার পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ। এবার ঘটনাস্থল পূর্ব বর্ধমানের গলসি। পূর্ব বর্ধমান জেলার স্কুলের জন্য মিড ডে মিল স্কিম বা এমডিএমে (MDM Scheme) ২ কোটি ১৯ লক্ষ টাকার ফান্ড আসে। অভিযোগ, গলসিতে কোনও কাজ না করেই প্রকল্পের লক্ষ লক্ষ টাকা পেয়ে গিয়েছেন ঠিকাদার। এই ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে গলসি-১ ব্লকের বিডিওর ভূমিকা নিয়ে। অভিযোগ, গলসি-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ঘনিষ্ঠ এক ঠিকাদারকে এই কাজের বরাত দেওয়া হয়। নামেই কাজ, কিছু না করেই ওই ঠিকাদার টাকা পেয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। যদিও বিডিওর দাবি, সবটাই নিয়ম মেনে হয়েছে। অন্যদিকে গলসি-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি অনুপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দেখুন টেন্ডারটা তো আমার পঞ্চায়েত সমিতি থেকে হয়নি। আর ঘনিষ্ঠ তো তৃণমূলের সকলেই ঘনিষ্ঠ।”

পূর্ব বর্ধমান জেলার মিড ডে মিল দফতর ২০২১ -২০২২ অর্থবর্ষের এমডিএম স্কিমে জেলার ২১৯০টি প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্কুলের জন্য টাকা বরাদ্দ করে। মূলত মিড ডে মিল রান্নাঘর ও স্টোররুমের সংস্কারের জন্য ২ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। এরমধ্যে গলসি-১ ব্লকের ১৪২টি স্কুলের জন্য ১০ হাজার টাকা করে ১৪ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। নিয়মমতো টেন্ডার ডেকে কাজের বরাত দেওয়ার কথা। অভিযোগ, সেসব না করে গলসি-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ঘনিষ্ঠ ঠিকাদার অভিজিৎ কোঙারকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অভিযোগ, কোনও কাজই করেননি ঠিকাদার, অথচ গত ২৯ এপ্রিল ৪ লক্ষ ৪৭ হাজার ৩৪৮ টাকা এবং গত ৬ মে ৯ লক্ষ ২৪ হাজার ৫৫৭ টাকা পেয়ে যান। চেকে এই টাকা দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।

স্থানীয় এক ঠিকাদার বিশ্বনাথ মণ্ডলের অভিযোগ, শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হলে নিয়ম বহির্ভূতভাবেই ঠিকাদারকে টাকা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ তাঁদের তিন বছরের টাকা বাকি, সেটা মেটানো হচ্ছে না। বিশ্বনাথ মণ্ডলের অভিযোগ, “আমাদের সহ-সভাপতির লোককে আগাম টাকা দিয়ে দিল। এটা একেবারে দুর্নীতি। আমার বকেয়া টাকা দিচ্ছে না, কাছের লোক কাজ না করে আগাম টাকা পেয়ে যাচ্ছে। আমার ৩০ বছরের ঠিকাদার জীবন। কোথাও দেখি এত টাকা আগাম দিয়ে দেওয়া হয়।”

এ প্রসঙ্গে গলসি পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ফজিলা বেগমের দাবি, তাঁকে না জানিয়েই টেন্ডার প্রক্রিয়া হয়ে গিয়েছিল। পরে জানতে পারেন। পাশাপাশি তিনি জানান, বেশ কয়েকটি স্কুলে যে কাজ হয়নি, তাও তদন্ত করে তিনি দেখেছেন। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন বলেও জানান। অন্যদিকে গলসি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ রোকেয়া জানান, বেশ কয়েকটি স্কুল তাঁকে জানিয়েছে, কোনও কাজ হয়নি। তিনি বিষয়টি বিডিওকে জানালে, বিডিও তা এড়িয়ে যান।

যদিও গলসি-১’র বিডিও দেবলীনা দাস বলেন, “আমরা একটা বরাদ্দ পেয়েছি। ১৪২ স্কুলের রান্নাঘরের কাজকর্মের জন্য সামান্য ১০ হাজার টাকা করে। হঠাৎ স্কুলগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাজে দেরি হচ্ছিল। স্কুল খুলতেই কাজ শুরু হয়েছে। স্কুলে স্কুলে ঠিকাদার যাচ্ছেনও। কাজের ধরন এক একজনের এক এক রকম। তাই একটু সময় লাগছে। এক মাসের মধ্যে সব কাজ হয়ে যাবে। কোনও গরমিলের কিছুই নেই। সবটাই নিয়ম মেনে হয়েছে।”