Purba Medinipur Farmers: বিঘার পর বিঘা জমিতে জমেছে জল, নষ্ট সব শস্য! মাথায় হাত কৃষকদের
Purba Medinipur: ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে রাজ্যসরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুর: দুর্যোগের পর দুর্যোগ। বাংলার আকাশে কিছুতেই কাটছে না কালো মেঘের ঘনঘটা। ধান রোপনের সময় বৃষ্টি। এখন ধান তোলার সময়ও পিছু ছাড়ছেন না নাছোড় বৃষ্টি।
দু’দিনের বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষগোট ,বুরারি, রামচন্দ্রপুর,হরশংকর,সাপুয়া, জঁফুলি সহ একাধিক এলাকার আমন ধানের ক্ষেত। মাঠেই পড়ে পাকা ধান। কিছু ধানগাছ দাঁড়িয়ে থাকলেও অধিকাংশ গাছই মাটিতে শুয়ে পড়েছে। অনেক ধান খেতেই জমেছে জল। ফলে মাঠের ধান মাঠেই পড়ে নষ্ট হচ্ছে। শুধু আমন ধানের পাকা ক্ষেত নয়। অনেক কৃষক শীতের শুরুতে বোরো ধান চাষের জন্য বীজ ফেলে ছিল চারা তৈরির উদ্দেশ্যে। সেই বীজও এখন জলের নীচে চলে গিয়েছে। শীতকালে শুরুটা একদিকে যেমন আমন ধান তুলে বাড়ি ফেরানোর সময়, ঠিক তেমনি বোরো চাষের বীজ তৈরি করে সেই বীজ রোপনের জন্যও সুনির্দিষ্ট সময় এটি।
এই মাসেই জাওয়াদের প্রভাবে নিম্নচাপের ফলে বৃষ্টি এবং মাঠে জমা বৃষ্টির জল বছরের খোরাকি এবং সামনের বোরো ধানের চাষ নিয়ে অনেকটাই চিন্তা বাড়িয়েছে চাষীদের। এবিষয়ে সহকৃষি অধিকর্তা , প্রশাসক ( শষ্য সুরক্ষা ) ডঃ মৃণালকান্তি বেরা বলেন, ‘গত দুদিনে জেলায় গড় ৩৮ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হওয়ায় ধান এবং সবজির সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেই কারণে প্রতিটি ব্লকের কৃষি অধিকর্তাদের বলা হয়েছে মাঠে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখতে। পরে সেই রিপোর্ট জমা হবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলাশাসকের কাছে।’
নতুন বীজ তোলা এবং সবজি চাষের চাপান স্বরূপ সার বা ইউরিয়া না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এই কৃষি আধিকারিক । এতে যে গাছগুলি বাঁচানো সম্ভব সেগুলিও নষ্ট হওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে দুদিনের বৃষ্টিতে কৃষিজাত ফসল নিয়ে নাজেহাল কৃষকমহলের অধিকাংশ। ইতিমধ্য়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে রাজ্যসরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
শুধু পূর্ব মেদিনীপুর নয় চাষের ক্ষতি হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলিতেও। সমবায় সমিতি ও ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করে চরম ক্ষতির মুখে কৃষকেরা। কৃষকদের দাবি, প্রতি বিঘা পিছু আলু চাষে খরচ হয়েছিল ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু অসময়ে ‘জাওয়াদ’ আর তার জেরে নাগাড়ে বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রথমে এতটা যে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে, তা ভাবতে পারেননি তাঁরা।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, জাওয়াদ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পশ্চিম মেদিনীপুরে দিনভর চলছে বৃষ্টি। আর সেই বৃষ্টির ফলে জেলায় কৃষি প্রধান এলাকায় সবথেকে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন কৃষকেরা। শীতের শুরুতে কৃষিপ্রধান এলাকার মানুষ চাষ করেছিলেন জলদি আলু, শুধু নয় আলু থেকে শুরু করে কপি, মুলো, পেঁয়াজ, বেগুন, আর প্রচন্ড বৃষ্টির ফলে কৃষি জমি পরিণত হয়েছে পুকুরে। জল থই থই করছে কৃষিজমিতে।