দলবিরোধী কাজের অভিযোগে মন্ত্রীর মায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা! ইস্তফা প্রধানের

নন্দীগ্রামে রাজনৈতিক কর্মী তো বটেই, সাধারণ ভোটারদের উপরও দুষ্কৃতীদের অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। ভাঙচুর হয়েছে দোকান-পাট। এ নিয়ে সরব হন মন্ত্রী শিহলি সাহার মা, নন্দীগ্রাম ৪ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বনশ্রী দেবী।

দলবিরোধী কাজের অভিযোগে মন্ত্রীর মায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা! ইস্তফা প্রধানের
দলবিরোধী কাজের অভিযোগ মন্ত্রীর মায়ের বিরুদ্ধে
Follow Us:
| Updated on: May 12, 2021 | 9:28 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: রাজ্যে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফিরেছে মা-মাটি-মানুষের সরকার। যদিও গত ২ মে ভোটের ফল বেরনোর পর থেকেই শাসক দলের বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ করছে বিরোধীরা। এই ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস ও নন্দীগ্রামে (Nandigram) দুষ্কৃতী-তাণ্ডবের বিরুদ্ধে সরব হওয়া বনশ্রী খাঁড়ার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনল তৃণমূল (TMC)। তার আগেই অবশ্য নন্দীগ্রাম ৪ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বনশ্রী খাঁড়া। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, তৃণমূল নেত্রী বনশ্রী দেবীর আর একটি পরিচয়, তিনি রাজ্যের নয়া মন্ত্রী শিউলি সাহার (Seuli Saha) মা।

এদিন তাঁর বিরুদ্ধে দল অনাস্থা প্রস্তাব আনার আগেই নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লক বিডিও অফিসে তার ইস্তফা পত্র জমা দেন বনশ্রী খাঁড়া।

এই বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামে ছিল হাইভোল্টেজ লড়াই। যদিও হাড্ডাহাড্ডি এই লড়াইয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বল্প ব্যবধানে পরাজিত করেন শুভেন্দু অধিকারী। এই ফল প্রকাশের পর থেকে বারবার উত্তেজনা ছড়িয়েছে নন্দীগ্রামে। রাজনৈতিক কর্মী তো বটেই, সাধারণ ভোটারদের উপরও দুষ্কৃতীদের অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। ভাঙচুর হয়েছে দোকান-পাট। এ নিয়ে সরব হন মন্ত্রী শিহলি সাহার মা, নন্দীগ্রাম ৪ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বনশ্রী দেবী। দিন কয়েক আগে রাজনৈতিক রং ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে একটি সভা করেন। সেই সভা থেকে এলাকায় সন্ত্রাস বন্ধের আওয়াজ তুলেছিলেন তৃণমূল প্রধান। সাধারণ মানুষের দাবি নিয়ে নন্দীগ্রাম থানায় ডেপুটেশনও দেন।

সেই বনশ্রী দেবী বুধবার আচমকা অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তৃণমূলের প্রধান পদ থেকে পদত্যাগ করলেন। সূত্রের খবর, নন্দীগ্রামের বর্তমান বিধায়কের এক সময়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন বনশ্রী খাঁড়া। এদিকে ভোট পরবর্তী হিংসায় নিজের দলের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশ করেন। আর তার পরই তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে তার আগে পদত্যাগ করলেন বনশ্রী খাঁড়া।

যদিও বনশ্রী দেবীর দাবি, শরীর ভালো যাচ্ছে না। কিছুদিন তাই রাজনীতির কাজে সে ভাবে সময় দিতে পারবেন না। পাশাপাশি জল্পনা উড়িয়ে তিনি জানান, দলকে ভালোবাসেন, আগামী দিনে তৃণমূলেই থাকবেন।

আরও পড়ুন: পিছু পিছু বনশ্রী, শুভেন্দু যেন ‘হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালা’

এদিকে এ নিয়ে নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি স্বদেশ দাস জানান, “আমরা এই নির্বাচনে যাঁরা দলবিরোধী কাজে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। মঙ্গলবার পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল। আগামিদিনেও আরও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হবে। কেঁদামারি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সানুয়ার শাহ ও নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য ও প্রাণী সম্পদের স্থায়ী কর্মাধ্যক্ষ স্বদেশ দাস অধিকারীর বিরুদ্ধেও মহকুমা শাসক অফিসে অনাস্থা জমা করা হয়েছে।”